জীবনের একটা পর্যায়ে এসে মানুষ প্রাপ্তি–অপ্রাপ্তির হিসাব কষে। এ যেন এক অদ্ভুত হিসাব। ক্ষুদ্র এই জীবনে মানুষের চাওয়ার শেষ বলতে কিছু নেই। তাই বলা হয় মানুষের অভাব অসীম। তবে কতটুকু পেয়েছি, এ হিসাবে অধিকাংশ মানুষের ব্যর্থতাগুলো নিঃশব্দে কাঁদতে থাকে। তখন ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনে যাওয়ার সুযোগ থাকে না। একটা বয়সের পর গন্তব্য নির্ধারিত হয়ে যায়। শত চেষ্টার পরও নিয়তিকে পাল্টানো যায় না। তখন না পাওয়ার ব্যথা কঠিন থেকে কঠিনতর হয়। প্রতিটি মুহূর্ত নিজে সাথে লড়াই করে বেঁচে থাকতে হয়। এভাবেই একদিন মৃত্যু নামক অমোঘ সত্য উপস্থিত হয়। তখন পিছনে অভিমুখ করার কোনো উপায় থাকে না। ব্যর্থতার এই গ্লানি নিয়ে সুন্দর এই পৃথিবীকে বিদায় জানাতে হয়। মনের গহীনে লুক্কায়িত অপ্রাপ্তি, ব্যর্থতা হারিয়ে যায় দূর অজানায়।
প্রকৃতপক্ষে, ছোটো জীবনের প্রাপ্তি–অপ্রাপ্তির হিসাবের ফলাফল বেশির ভাগ সময়ই দুঃখ বয়ে আনে। না পাওয়ার কষ্টে হতাশা বাড়ে। জীবনের আনন্দ নষ্ট করে দেয়। তখন জীবন স্বাদহীন হয়ে উঠে। চারদিকে তাকালে মনে হয় ঘোর অন্ধকার। কোথাও একটু আলোর দেখা নেই। শান্তি ঘুমটুকুও পালিয়ে বেড়ায়। তাই প্রাপ্তি–অপ্রাপ্তি হিসাবে নিজের যা আছে তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হবে। যা আমার সাধ্যের বাইরে, তা নিয়ে চিন্তা করা বোকামি ছাড়া কিছু না। পৃথিবীর সবকিছু সবার জন্য না। তাই অপ্রাপ্তিকে বঞ্চনা করে সম্মুখে অগ্রসর হতে হবে। তবেই জীবনের প্রাপ্তি–অপ্রাপ্তির হিসাব মিলবে।