চসিকের জয়ে প্রথম হার দেখলো কিষোয়ান

ক্রীড়া প্রতিবেদক | রবিবার , ২৯ অক্টোবর, ২০২৩ at ৬:৫৫ পূর্বাহ্ণ

খেলা শেষ। কিষোয়ানের ডাগ আউটে কবরের নীরবতা। অন্যদিকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন একাদশের শিবিরে বাঁধভাঙ্গা উল্লাস। কোচ সাবেক জাতীয় ফুটবলার মো. আনোয়ার হোসেনকে কাঁধে নিয়ে খেলোয়াড়রা জয়োল্লাসে মেতে উঠেছে। চলছে সবাইকে নিয়ে ফটোসেশন। ঠিক যেন শিরোপা জয়ের উল্লাস। তবে শিরোপা নয়। গতকাল শনিবার বিকেলে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে কিষোয়ান এবং সিটি কর্পোরেশনের খেলা শেষের এই ছিল দৃশ্য। একদিকে হাসি আনন্দ। অন্যদিকে হতাশা। অথচ শিরোপা জয়ে মেতে উঠার কথা ছিল প্রতিপক্ষ কিষোয়ানের। সিটি কর্পোরেশনকে হারাতে পারলেই তারা মেতে উঠতো উল্লাসে। কিন্তু তা হয়নি। উল্টো সিটির কাছে ১০ গোলে হেরে গেছে কিষোয়ান। এটি তাদের প্রথম হার। প্রথম তিনটি খেলায় তারা জয়লাভ করেছিল। এরপরের চারটি খেলায় তারা ড্র করেছিল। আগামী ২ নভেম্বর শেষ খেলায় মাদারবাড়ি উদয়ন সংঘ প্রতিপক্ষ ব্রাদার্স ইউনিয়নকে হারালে কিংবা ড্র করলেই এ মৌসুমের প্রিমিয়ার লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে। কারণ ৮ খেলা শেষে উদয়নের পয়েন্ট ১৬। গতকালের খেলা শেষের পর কিষোয়ান এবং সিটি কর্পোরেশন উভয় দলের অর্জিত পয়েন্ট ৯ খেলায় ১৬। উদয়ন সংঘ যদি ব্রাদার্সের কাছে পরাস্ত হয় সেক্ষেত্রে তিনটি দলেরই পয়েন্ট সমান হয়ে যাবে। তখন বাইলজ অনুসারে লটারীর মাধ্যমে চ্যাম্পিয়ন এবং রানার্স আপ দল নির্ধারন করা হবে। গতকালের খেলার প্রথমার্ধে উভয় দল আক্রমন প্রতি আক্রমনে থাকলেও কিষোয়ান কিছুটা বেশিই ছিল আক্রমনে। খেলার ১৮ মিনিটেই বঙের বাইরে থেকে কিষোয়ানের সাইফুল ইসলাম একটি শট নিয়েছিলেন। কিন্তু বল উড়ে যায় ক্রস পিস ছাপিয়ে। ৩৩ মিনিটে কিষোয়ান আবারো আক্রমনে উঠে। নাইমউদ্দিনের বাম পায়ের শট বারের বাইরে দিয়ে জাল স্পর্শ করে। ৩৯ মিনিটে প্রেন চং ম্রোর ক্রস থেকে মোবিনুর রশিদের হেড সিটি কর্পোরেশনের কিপার শাকিল হোসেনের হাতে জমা হয়। সুযোগ নষ্ট হয় কিষোয়ানের। গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর দ্বিতীয়ার্ধে খেলতে নেমে কিষোয়ান অল আউট খেলতে থাকে। একের পর এক আক্রমনে দিশেহারা করে দিতে থাকে সিটি কর্পোরেশনের রক্ষনভাগকে। সুযোগও পাচ্ছিল তারা গোলের। কিন্তু গোল করার চরম ব্যর্থতা দেখায় দলটি। যার খেসারত শেষ পর্যন্ত তাদের দিতে হয়েছে। এ অর্ধের দুই মিনিটেই আল আমিন সিটি কর্পোরেশন দলের গোলমুখের সামনে চলে গিয়েছিলেন। কিপারকে একা পেয়েও তিনি গোল করতে পারেননি। কিছু পরে কিষোয়ানের আরো একটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেন সিটির অধিনায়ক মিলন। ২৪ মিনিটে আবির ফাঁকায় পেয়েও বল সিটি কিপারের হাতে তুলে দেন। পাঁচ মিনিট বাদেই আবারো আবির বল নিয়ে বারের বাইরে মেরে দেন। তখন তার সামনে ছিল শুধু কিপার। এরপর মিস করেন কিষোয়ানের নাইম। দ্বিতীয়ার্ধের শেষের দিকে ৪৩ মিনিটের সময় বদলি খেলোয়াড় স্বপনের ক্রস থেকে মাথা ছুঁইয়ে তানিন সরকার গোল করে সিটি কর্পোরেশন একাদশকে ১০ গোলে এগিয়ে দেন। এসময় কিষোয়ান কিপার আবদুল্লাহ আল মামুন শামীমকে রেফারীর দিকে তাকিয়ে হ্যান্ডবলের আবেদন করতে দেখা যায়। এই করতে গিয়ে তানিন সরকারকে কোন বাধাই দেননি শামীম। রেফারীও তার হ্যান্ডবলের আবেদনে সাড়া দেননি। খেলার ধারার বিপরীতে অনেকটা বিনা বাধায় গোল করে বসেন তানিন। এ গোলটির জন্য পুরো দায় নিতে হবে কিপার শামীমকে। তার বোকামীতে পিছিয়ে পড়ার পর খেলার ইনজুরি টাইমে একটি ফ্রি কিক পায় কিষোয়ান। আশিক বড়ুয়ার ফ্রি কিকে গোলমুখে নইম পেলেও কিছু করতে পারেননি। নিশ্চিত গোল রক্ষা করেন সিটি কিপার শাকিল হোসেন। অনবদ্য গোলকিপিং এর জন্য ম্যাচ সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন সিটি কর্পোরেশন একাদশের শাকিল হোসেন। তার হাতে ম্যান অব দি ম্যাচের পুরস্কার তুলে দেন সিজেকেএস কাউন্সিলর মোহাম্মদ শওকত করিম খান। আজ ও আগামীকাল প্রিমিয়ার ফুটবল লিগের কোন খেলা নেই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধটানা চার জয়ে সেমির দৌড়ে এখন অস্ট্রেলিয়া
পরবর্তী নিবন্ধ‘ব্যর্থ প্রেমের সফল নায়ক’ প্রসঙ্গে যা বললেন বাপ্পারাজ