জনসভায় চট্টগ্রামের নেতারা কে কী বললেন

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ২৯ অক্টোবর, ২০২৩ at ৫:৪০ পূর্বাহ্ণ

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত ১৫ বছরে চট্টগ্রামে প্রায় ১ লক্ষ ৩৫ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন হয়েছে বলে দলের মন্ত্রীসংসদ সদস্যসহ শীর্ষ নেতারা বলেছেন। গতকাল কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত ‘বঙ্গবন্ধু টানেল’ উদ্বোধন উপলক্ষে আনোয়ারায় প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি, আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, হুইপ সামশুল হক চৌধুরী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ও আওয়ামীলীগের অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান এমপি, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বন্দরপতেঙ্গা আসনের এমপি এম এ লতিফ, চন্দনাইশসাতকানিয়ার (আংশিক) এমপি নজরুল ইসলাম চৌধুরী, বাঁশখালী আসনের এমপি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী সহ অন্যান্য নেতারা বক্তব্য রেখেছেন।

জনসভায় প্রায় সব নেতাই বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন করায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। সভায় চট্টগ্রামের মন্ত্রীএমপি, আওয়ামী লীগের স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের উন্নয়নে যে সব মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন তার ঋণ শোধ করা যাবে না। প্রধানমন্ত্রী যা দিয়েছেন তার বিনিময়ে এবং ভবিষ্যতেও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য আগামী সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের সবগুলো আসন উপহার দেয়ার ঘোষণা দেন তারা।

ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন : আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বক্তব্য দিতে উঠে প্রথমে বলেন, আজকে এই মঞ্চে এসে আমার মনে পড়ছে আমার প্রিয়বন্ধু, দীর্ঘদিনের রাজপথের সহযোদ্ধা মরহুম আখতারুজ্জামন চৌধুরী বাবু, মরহুম আতাউর রহমান খান কায়সারকে। আমরা এক সাথে রাজপথে ছিলাম। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল হয়েছে। আনোয়ারা ইকোনমিক জোন ও মীরসরাইয়ের শিল্প পার্কসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডের চিত্রও তুলে ধরেন তিনি।

সাইফুজ্জামান চৌধুরী : ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেন, ২০১০ সালে এম এ মান্নান ফ্লাইওভারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের সময় প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, চট্টগ্রামের দায়িত্ব তিনি নিজ হাতে নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী তার ওয়াদা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছেন। চট্টগ্রামে যে পরিমাণ উন্নয়ন হয়েছে তা বিগত সময়ে কেউ দেখেনি। আমরা প্রধানন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কারণে বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে মর্যাদাসম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা বসে নাই। তারা আগামী নির্বাচনকে টার্গেট করেছে। তারা সোশ্যাল মিডিয়ায়সহ নানা অপকর্মে লিপ্ত রয়েছে। দেশের কিছু কিছু জায়গায় সভাসমাবেশ করছে। তারাই আবার এনালাইসিস করে বলছে, তাদের সভাসমাবেশে নাকি সাধারণ মানুষ সম্পৃক্ত হয়েছে। কিসের ভিত্তিতে এ ধরনের কথা বলছেন জানি না। তাদের সভাসমাবেশে যদি জনগণের সম্পৃক্ততা থাকে তাহলে তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে ভয় পাচ্ছে কেন। নয়াপল্টন কেন তারা বেছে নিয়েছে। সুতরাং ভাঁওতাবজির দিন শেষ। বলতে চাই, আজকে থেকে আমরা থাকব মাঠে। তারা থাকবে ঘরে।

শামসুল হক চৌধুরী : হুইপ ও পটিয়ার এমপি শামসুল হক চৌধুরী চট্টগ্রামের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনাকে চট্টগ্রামবাসী টানা চতুর্থবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চায়। আগামী নির্বাচনে চট্টগ্রামের ১৬টি আসনই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দিতে হবে।

ওয়াসিকা আয়েশা খান : বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ও আওয়ামীলীগের অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান এমপি বলেন, প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামকে অন্তর থেকে ভালোবাসেন বলে এতো বিশাল বিশাল মেগা প্রকল্প গুলো বাস্তবায়ন করেছেন। আজকে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম টানেল চট্টগ্রামে উদ্বোধন করেছেন। আপনারা আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রীর জন্য মন থেকে মহান আল্লাহর কাছে দোয়া চাইবেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও যেন তিনি বিজয়ী হয়ে আবার প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন।

আমিনুল ইসলাম : কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামকে অনেক দিয়েছেন। এবার আমাদের কৃতজ্ঞতা জানানোর পালা। ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রত্যেক প্রার্থীকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী করতে হবে।

বিপ্লব বড়ুয়া : আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, আজকে জনসভা নিয়ে যে জাগরণের সৃষ্টি হয়েছে তা সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের মানুষ দেখেনি। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামকে দুই হাত ভরে দিয়েছেন। ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১ লক্ষ ২৩ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন হয়েছে চট্টগ্রামে। এবার আমাদের দিতে হবে। ভোট দিয়ে বিজয়ী করতে হবে।

এম এ লতিফ : বন্দরপতেঙ্গা আসনের এমপি এম এ লতিফ বলেন, আজ আমাদের অনেক আনন্দের দিনর্কণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম টানেল উদ্বোধন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী টানেলের উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামের নাম বিশ্বের ইতিহাসে যুক্ত করেছেন।

আজকে জামায়াতবিএনপি আবার আগুনসন্ত্রাসে মেতেছে। প্রধানমন্ত্রীর চট্টগ্রামে তাদের ঠাঁই হবে না। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে বিশ্বমঞ্চে মর্যাদার আসনে নিয়ে গেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। চট্টগ্রামের যে উন্নয়ন হয়েছে তার সুফল সারা দেশের মানুষ ভোগ করবে। সামনে নির্বাচন, এই নির্বাচনে আবারো জননেত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী করতে হবে।

. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী: লোহাগাড়াসাতকানিয়া (আংশিক) আসনের এমপি ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী বলেন, ৭১ সালে যারা স্বাধীনতার বিরোধী ছিল, যারা ৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে কতল করেছে, যারা সিরিজ বোমা মেরেছে, যারা হ্যাঁনা ভোট করে গণতন্ত্রকে কাফনদাফন করেছে, বাংলাদেশের মানুষ তাদের কোনোদিন সমর্থন করবে না।

নোমান আল মাহমুদ: চান্দগাঁওবোয়ালখারী আসনের এমপি নোমান আল মাহমুদ বলেন, আজকে সঙ্গত কারণে কালুরঘাট সেতু নির্মাণের কথা বলতে হচ্ছে। কারণ আগামী কিছু দিনের মধ্যে কালুরঘাট সেতু দিয়ে কঙবাজার রুটে ট্রেন চলাচল করবে। নতুন কালুরঘাট সেতু বোয়ালখালীসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামবাসীর জন্য খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। আমরা জানি নতুন কালুরঘাট সেতুর ডিজাইন অনুমোদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। অর্থায়নও নিশ্চিত হয়েছে। আমি আশা করি খুব দ্রুত এই সেতুর কাজ শুরু হবে।

নজরুল ইসলাম চৌধুরী : চন্দনাইশসাতকানিয়ার (আংশিক) এমপি নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, অবহেলিত জনপদ থেকে উন্নয়নের জনপদে পরিণত হয়েছে সাতকানিয়াচন্দনাইশ। সারা চট্টগ্রামের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

এম এ সালাম: চট্টগ্রামের বিভিন্ন উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রতি চট্টগ্রামবাসী কৃতজ্ঞ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআজকের সহিংসতায় ভিসা নিষেধাজ্ঞা পর্যালোচনা করবে যুক্তরাষ্ট্র
পরবর্তী নিবন্ধদইজ্যার তলে চলে গাড়ি