বঙ্গবন্ধু টানেলের উদ্বোধন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা ঘিরে উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে চট্টগ্রাম। কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে নির্মিত দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম টানেল উদ্বোধন করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চট্টগ্রাম সফরকে কেন্দ্র করে নদীর দুই পাড় সেজেছে বর্ণিল সাজে। সড়কের দুই পাশে লাগানো হয়েছে শত শত জাতীয় পতাকা। নদীর দুই পাড়ের সড়কগুলো পরিষ্কার করে রাঙানো হয়েছে নানা রঙে। ভাঙা সড়কগুলোকে মেরামত করা হয়েছে। চট্টগ্রাম নগরী ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের সব উপজেলায় দিনভর মাইকিং করে চালানো হয়েছে প্রচারণা।
টানেল উদ্বোধন উপলক্ষে সাধারণ মানুষের মাঝে আনন্দের শেষ নেই। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে অফিস–আদালত, পাড়া–মহল্লা ও হাট–বাজারে চলছে টানেল নিয়ে আড্ডা। চট্টগ্রামের মানুষ সর্বদলীয়ভাবে পালন করতে চান টানেল উৎসব। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে জায়ান্ট স্ক্রিনে প্রচার করা হচ্ছে টানেলসহ বর্তমান সরকারের নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ভিডিও চিত্র। নগরের বিভিন্ন সড়ক ও মহাসড়কজুড়ে এখন তোরণের ছড়াছড়ি। রঙিন ব্যানার, ফেস্টুন আর বিলবোর্ডে সেজেছে নগরী। ঢাকা–চট্টগ্রামের প্রধান সড়ক ছাপিয়ে অলি–গলিতেও শোভা পাচ্ছে বঙ্গবন্ধুকন্যাকে স্বাগত জানিয়ে পোস্টার–ব্যানার।
গতকাল শুক্রবার চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ–ফৌজদারহাট লিংক রোড, ফৌজদারহাট থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত আউটার রিং রোড এবং টানেলের অপর প্রান্ত আনোয়ারা থেকে শাহ আমানত সেতু এলাকাসহ নগরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই জনসভাকে ঘিরে দলীয় প্রধানের দৃষ্টি কাড়তে কয়েক কোটি টাকার তোরণ, ব্যানার আর প্যানাফ্লেঙ নির্মাণ করেছেন দলটির নেতাকর্মী ও মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। মাইকে মাইকে প্রচার করা হচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের চিত্র। বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে এলইডি টিভি বসিয়ে দেখানো হচ্ছে উন্নয়নের স্থিরচিত্র। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম. রেজাউল করিম চৌধুরীর উদ্যোগে নগরজুড়ে পাঁচ শতাধিক বিলবোর্ড, ব্যানার–ফেস্টুন, তোরণ শোভা পাচ্ছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন ও শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারীরাও পাঁচ হাজারের বেশি ব্যানার–ফেস্টুন টাঙিয়েছেন। এর বাইরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও প্যানাফ্লেঙ, ব্যানার–ফেস্টুন ও তোরণে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
টানেল উৎসবের উদ্যোক্তা মহানগর ১৪ দলের সমন্বয়ক, নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেন, এই টানেল উদ্বোধন করতে প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে উৎসব মুখর করতে ‘আমরা জয়ের উদ্যোগে’ শিরোনামে টানেল উৎসবের আয়োজন করেছি। যা আজ (গতকাল শুক্রবার) শেষ হয়েছে। বুধবার বিকাল ৩ টায় সি বিচের মূল পয়েন্টে টানেল উৎসবে বর্ণাঢ্য র্যালি, সাগরে লাল সবুজের আলোর মেলা, পিঠা উৎসব ও চাটগাঁইয়া সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর চট্টগ্রাম আগমন উপলক্ষে গত তিন দিন ধরে চট্টগ্রামে পৃথক পৃথক শোভাযাত্রার আয়োজন করেছে আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন।