টানেল ব্যবহার উপযোগী করার জন্য সব ধরনের আয়োজন শেষ করা হয়েছে বলেছেন প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ। গতকাল তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, এখন শুধুমাত্র মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর টানেল উদ্বোধনের অপেক্ষা। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের সেতু বিভাগের লোকজন এবং প্রকল্পের লোকজন মিলে উদ্বোধনী যে কার্যক্রম সেটা নিয়ে কাজ করছেন। আগামী ২৮ অক্টোবর সকালে প্রধানমন্ত্রী নেভালে আসবেন। সেখান থেকে টানেলের পতেঙ্গা প্রান্তে টানেলের উদ্বোধন করবেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী টানেল ক্রস করে আনোয়ারা প্রান্তে যাবেন। সেখানেও উদ্বোধনী ফলক লাগানো হয়েছে। আমরা চেষ্টা করবো প্রধানমন্ত্রীকে সেখানে নিয়ে যাওয়ার জন্য। প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারায় জনসভা করবেন। টানেলের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নিজেকে সম্পৃক্ত করতে পেরে এই জন্য গর্ববোধ করেন প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ।
তিনি বলেন, এই টানেলটি নির্মাণে প্রকৌশলীরা দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। এই টানেল সারাদেশের গর্বের প্রতীক। বাংলাদেশের ইঞ্জিনিয়ারদের অসাধারণ কর্মনৈপুণ্য ও স্থাপত্যশৈলী আমাদেরকে উপহার দিতে যাচ্ছে। এটা আমাদের বিশাল সাফল্য, এটা নিয়ে আমরা গর্ব করতে পারি। ৩ দশমিক ৪৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এ টানেলটি তিন থেকে সাড়ে ৩ মিনিট সময়ের মধ্যে পার হয়ে যেতে পারবে। টানেলটি শুধু দুই প্রান্তের সংযোগ করবে না, টানেলটি ওয়ান সিটি টু টাউন কনসেপ্টে নির্মিত হয়েছে। এশিয়ান হাইওয়ের সাথে যুক্ত হবে এটি। কক্সবাজারের সাথেও যোগাযোগ সহজ হবে।
ভূমিকম্প ও জলোচ্ছ্বাসে টানেলে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে কিনা জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক বলেন, দুটো ফ্লাডগেট আছে, গত সাইক্লোনে ট্রায়াল করে দেখা হয়েছে। পর্যালোচনা করে দেখা হয়েছে জলোচ্ছ্বাসে কোন সমস্যা হবে না। তাছাড়া টানেলটি নদীর পৃষ্ট থেকে ১৮ হতে ৩১ মিটার গভীরে স্থাপন করা। এখানে ভূমিকম্পের প্রভাব পড়বে না। ভূমিকম্পে টানেল নিরাপদ থাকবে। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ১৮ মিটার থেকে ৩১ মিটার নিচ দিয়ে এ টানেল গেছে।
জানা যায়, টানেল নির্মাণে মোট ব্যয় প্রায় ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ও চীন সরকার ‘জি–টু–জি’ অর্থায়নে টানেলটি নির্মাণ করছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে ৪ হাজার ৪৬১ কোটি টাকা। বাকি ৫ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা দিচ্ছে চীন সরকার। ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর কর্ণফুলী নদীর তলদেশে স্বপ্নের টানেল নির্মাণকাজের যৌথভাবে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনা রাষ্ট্রপতি শিং জিনপিং। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম টানেল টিউবের বোরিং কাজের উদ্বোধন করেন। ৩ দশমিক ৪৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এ টানেলটির নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে চীনা প্রতিষ্ঠান চায়না কমিউনিকেশন অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি।