১২ কিমি সড়কে হাজারের বেশি বিলবোর্ড

টানেল উদ্বোধন ও প্রধানমন্ত্রীর জনসভা

এম নুরুল ইসলাম, আনোয়ারা | মঙ্গলবার , ২৪ অক্টোবর, ২০২৩ at ৬:১৮ পূর্বাহ্ণ

বিজ্ঞাপন, ব্যানার আর বিলবোর্ডে মুখ ঢেকেছে আনোয়ারার। কর্ণফুলী সেতু পার হয়ে কেউ এখানে এলে নিশ্চিত হতচকিত হবেন। কর্ণফুলীর চরপাথরঘাটা থেকে আনোয়ারার কেইপিজেড গেট পর্যন্ত ১২ কিলোমিটারে উঠেছে হাজারের বেশি বিলবোর্ড। এ সবই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের উদ্বোধন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২৮ অক্টোবরের জনসভাকে ঘিরে। বলা যায়, দুটি উপজেলাতে এখন উৎসবের আমেজ। সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলা, ইউনিয়ন, ইউনিট আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, ছাত্রলীগের নামে ব্যানার ও বিলবোর্ড লাগানো হয়েছে সব জায়গায়। কর্ণফুলীর শিকলবাহা ওয়াই জংশন, দৌলতপুরের

কেইপিজেড, আনোয়ারার চাতরী ও কাফকো কলোনি সংলগ্ন কেইপিজেড গেট মাটিতে চোখ ফেলার জায়গা নেই। বিলবোর্ড যার নামেই হোক সবগুলোতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশাপাশি স্থানীয় সংসদ সদস্য ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের নাম ও ছবি শোভা পাচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, টানেল ও প্রধানমন্ত্রীর জনসভা দুটোই ভূমিমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকায় হওয়ায় গত এক মাস ধরে তিনি নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। মন্ত্রী নিজে কয়েকবার জনসভাস্থল পরিদর্শন করে প্রস্তুতির আপডেট নিয়েছেন। সবমিলিয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রামে এখন দারুণ উজ্জীবিত আওয়ামী লীগ ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনগুলো। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আনোয়ারায় এত অধিক বিলবোর্ড ও ব্যানার অতীতে কখনোই দেখা যায়নি। বলা যায়, বিলবোর্ড নিয়ে এক ধরনের প্রতিযোগিতা চলছে। কেন্দ্রীয় নেতা, সংসদ সদস্য ও আগামী সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী সবাই আলাদা আলাদা বিলবোর্ড ও ব্যানার লাগিয়েছেন।

দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক সিনিয়র নেতা জানান, প্রধানমন্ত্রীর সফরের প্রচারে তিনি একাই ২০০ ব্যানার করেছেন। নেতাদের অনেকে আরো বেশি করেছেন। অসুস্থ কোনো প্রতিযোগিতা নেই। ভোটের আগে এটি দলের অবস্থান জানান দেয়ার একটি অংশ।

বিজ্ঞাপন ব্যবসায় জড়িত এক ব্যবসায়ী জানান, বিলবোর্ডের ব্যানার ছাপানো, স্ট্যান ভাড়া কিংবা গাছের ফ্রেম তৈরি, লাগানোর মজুরি ইত্যাদি মিলিয়ে একটি বিলবোর্ডে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ। আর ব্যানারের ক্ষেত্রে ছাপানোর চেয়ে লাগানোর খরচ পড়ছে বেশি। সব মিলিয়ে ব্যানার ও বিলবোর্ডের খরচ ২ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে তার ধারণা।

আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক এম এ মান্নান চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে ব্যাপক প্রচারপ্রচারণা চালানো হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় আনোয়ারা উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, টানেল সড়ক, জনসভার আশপাশের স্থলসহ পুরো উপজেলার ১১ ইউনিয়নে পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। তোরণ নির্মাণ, ব্যানার, বিলবোর্ডের মাধ্যম ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বর্তমান সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরে ব্যাপক প্রচারপ্রচারণা চালানো হচ্ছে।

কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রয়াত আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু এমপি, কর্ণফুলীবাসীকে দ্বিমুখী শাসনের যাঁতাকল থেকে মুক্তি দিতে অনেক চেষ্টা করেছিলেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রয়াত নেতার সুযোগ্যপুত্র ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপির মাধ্যমে আমাদেরকে কর্ণফুলী নামে একটি স্বতন্ত্র উপজেলা দিয়েছেন। আমরা কর্ণফুলীবাসী প্রধানমন্ত্রীর কাছে চির কৃতজ্ঞ। টানেলের উদ্বোধনী জনসভা সফল করতে ব্যাপক জনসমাগমের লক্ষ্যে কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগ ইউনিয়ন, ওয়ার্ডে, ওয়ার্ডে ব্যাপক প্রচারপ্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। ইনশাআল্লাহ জনসভায় কর্ণফুলী থেকে জনতার ঢল নামবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমীরসরাইয়ে ভাড়া বাসায় ফেনীর সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের লাশ
পরবর্তী নিবন্ধপাঁচ বাংলাদেশিকে মিয়ানমারে জিম্মি