চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় বলেছেন, ফিলিস্তিন–ইসরাইল ইস্যুর সঙ্গে পূজার কোনো সম্পর্ক নেই। গত শুক্রবারে ফিলিস্তিন ইস্যুতে বিক্ষোভ হয়েছে। এ শুক্রবারেও বিক্ষোভ হবে বলে আমরা ধারণা করছি। এতে পূজার শৃঙ্খলা নিয়ে কোনো সমস্যা হবে বলে মনে করি না। দুর্গাপূজায় কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কা নেই। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরীর আন্দরকিল্লা জেএম সেন হলে শারদীয় দুর্গোৎসবে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
সিএমপি কমিশনার বলেন, চট্টগ্রাম মহানগরী এলাকার মোট ২৭৭টি পূজা মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপনের আয়োজন করা হয়েছে। মণ্ডপগুলো ঘিরে রয়েছে ৪ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। নিয়মিত পোশাকি পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি স্ট্রাইকিং রিজার্ভ ফোর্স, সোয়াত, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের পুলিশ সদস্যরা ডিউটিতে থাকবে। এছাড়াও থাকবে গোয়েন্দা পুলিশ সদস্যরা।
তিনি আরও বলেন, প্রতিটি মণ্ডপ ঘিরেই জাতি ধর্ম নির্বিশেষে একটি সমপ্রীতি কমিটি গঠন করা হয়েছে। মণ্ডপগুলোতে নারী ও পুরুষ দর্শনার্থীদের প্রবেশের ক্ষেত্রে পৃথক গেটের ব্যবস্থা, সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, পর্যাপ্ত পরিমাণে স্বেচ্ছাসেবক রাখা ইত্যাদি কার্যক্রমের মাধ্যমে মণ্ডপের সার্বিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। প্রতিবারের মতো চট্টগ্রামবাসী প্রতিটি ধর্মের প্রতিটি উৎসবে যেমন অসামপ্রদায়িক মনোভাব পোষণ করেন, তেমনি এবারেও একটি অসামপ্রদায়িক চেতনা থেকে সার্বজনীন শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপনে নগরবাসীর সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
পূজায় সামপ্রদায়িক হামলা নিয়ে কোনো শঙ্কা আছে কিনা সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে কমিশনার বলেন, আমরা কোনো শঙ্কা বোধ করছি না। শঙ্কা করার মতো কিছু নেই। তবে বিভিন্ন সময় যেহেতু বিচ্ছিন্ন ঘটনা হয়েছে এগুলো মাথায় রেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজিয়েছি। সতর্ক থাকা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার মধ্যে আমরা কোনো কার্পণ্য করিনি। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগামী ২৮ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধনের যে অনুষ্ঠান আছে সে প্রোগ্রামের অনেক আগেই পূজার উৎসব শেষ হয়ে যাবে। এ উৎসব তো নতুন না। সকল ধর্মের মানুষ একে অপরের ধর্মীয় উৎসব সম্পর্কে জানে। বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া বেশিরভাগ লোকই একে অপরের ধর্মীয় উৎসব পালনে সহায়তা করেছেন। একে অপরের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালনে সবাই সবার প্রতি শ্রদ্ধাশীল আছেন।
এ সময় সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন ও অর্থ) এম এ মাসুদ, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপারেশন) আ স ম মাহতাব উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) আবদুল মান্নান মিয়া, সিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (এডিসি) স্পিনা রানী প্রামাণিক, এডিসি (দক্ষিণ জোন) নোবেল চাকমা, কোতোয়ালী জোনের সহকারী কমিশনার অতনু চক্তবর্তী, কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবীর, মহানগর পূজা কমিটির সভাপতি আশীষ ভট্টাচার্য ও সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সেন উজ্জ্বল উপস্থিত ছিলেন।