বাংলা একাডেমি ও একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ, প্রাবন্ধিক ড. মাহবুবুল হক বলেছেন, বাংলা শিশুসাহিত্যের প্রধান দুটি বৈশিষ্ট্য হলো কল্পনা ও সৃজনশীলতা। যারা শিশুসাহিত্য রচনা করেন তাদের অনেক কিছু ভাবতে হয়। শিশুদের মনের জগতে বিচরণ করতে হয়। আমাদের শিশুদের কোন অবসর নেই। পাঠ্যপুস্তকের পড়া, কোচিং ও গৃহশিক্ষকের চাপে তারা হাঁপিয়ে ওঠছে। তাদের দম ফেলার সময় নেই। যে কারণে তারা তোতা পাখিতে পরিণত হচ্ছে। বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শিশুসাহিত্যিকদের সামনে নতুন সংকট তৈরি করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে গল্প–প্রবন্ধ লেখা যায় কিন্তু লেখকের সৃজনশীলতা নষ্ট করে দিচ্ছে। এটা অচিরেই লেখকদের সামনে একটা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে। এই চ্যালেঞ্জ আমাদের মোকাবেলা করতে হবে। বাংলাদেশ শিশুসাহিত্য একাডেমির আয়োজনে শেখ রাসেল বইমেলা ও শিশুসাহিত্য উৎসবের চতুর্থ দিনে গতকাল সোমবার সমকালীন শিশুসাহিত্য বিষয়ে সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
কবি ও শিশুসাহিত্যিক অজয় দাশগুপ্তের সভাপতিত্বে ও বাচিক শিল্পী আয়েশা হক শিমুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন প্রাবন্ধিক–গবেষক কবি মলয় চন্দন মুখোপাধ্যায়, কবি–শিশুসাহিত্যিক ওমর কায়সার ও বাসুদেব খাস্তগীর।
কবি কবি মলয় চন্দন মুখোপাধ্যায় বলেন, বাংলা সাহিত্যের একটি বলিষ্ঠ ধারা শিশুসাহিত্য। রবীন্দ্রনাথ, অবণীন্দ্রনাথ, উপেন্দ্রকিশোর, সুকুমার রায়, নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় পরবর্তীকালে হুমায়ূন আহমেদ, ইমদাদুল হক মিলন, জাফর ইকবাল, জসীম উদ্দীন, বেগম সুফিয়া কামাল, সুকুমর বড়ুয়া আধুনিক যুগে শিশুসাহিত্যিক হিসেবে স্বীকৃত।
কবি ওমর কায়সার বলেন, শিশুসাহিত্যের কাছে আমি বার বার ফিরে আসি। তার একটা কারণ শিশুসাহিত্যের ভাষা সহজ সরল। যে কারণে সবশ্রেণীর পাঠকের কাছে শিশুসাহিত্য গ্রহণযোগ্য। অধ্যাপক বাসুদেব খাস্তগীর বলেন, শিশুসাহিত্য সেই অতীতের সময়কে অতিক্রম করে সমকালীন শিশুসাহিত্যে এখন দেখা যাচ্ছে সহজ–সরল শব্দের সমাহার এবং গুরুগম্ভীর কঠিন শব্দ পরিহারের সুন্দর একটি প্রবণতা।
বিকেলে সাড়ে ৫টায় কবি মর্জিনা আখতারের সভাপতিত্বে স্বরচিত পাঠে অংশ নেন নাটু বিকাশ বড়ুয়া, নান্টু বড়ুয়া, নাসরিন কামাল, নাসিম আখতার রীনা, নাসিমা শওকত, নাহিদ সুলতানা, নিশাত হাসিনা শিরিন, নীলিমা ইসলাম, নুর নাহার নিপা, নুসরাত সুলতানা, প্রদীপ ভট্টাচার্য, পারভীন আকতার, ফরিদা ফরহাদ, ফাতেমা ফেরদৌস নীপা, ফারজানা রহমান শিমু, ফারহানা ইসলাম রুহী, ফোরকান আবু, বরুণ কুমার আচার্য, বাবুল কান্তি দাশ, বিকিরণ বড়ুয়া, বিচিত্রা সেন, বিভা ইন্দু, বিভাস গুহ, বিলাস কান্তি দাশ, বিশ্বজিত বড়ুুয়া, মনজু আলম, মনজুর আলম মন্জু, মল্লিকা বড়ুয়া, মাজহার হেলাল, মারজিয়া খানম সিদ্দিকা, মাহবুবা ছন্দা, মিজানুর রহমান শামীম, মির্জা মোহাম্মদ আলী, মিতা দাশ, মিতা পোদ্দার, মীর মোরশেদ। রাত ৮টায় কবি খুরশীদ আনোয়ারের সভাপতিত্বে লেখা পাঠে অংশ নেন কবি কামরুল হাসান বাদল, খালেদ হামিদী, আনোয়ারুল করিম, ইউসুফ মুহম্মদ, জিন্নাহ চৌধুরী, তাপস চক্রবর্তী, দিলীপ কির্তুুনীয়া, আজিজ কাজল, পুষ্পিতা সেন, বিজন মজুমদার, বিদ্যুৎ কুমার দাশ, মাহবুবা চৌধুরী, রিজোয়ান মাহমুদ, রেহেনা মাহমুদ, শ ম বখতিয়ার, শাহীন মাহমুদ, সারাফ নাওয়ার।
আজকের অনুষ্ঠান : আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শেখ রাসেল বিষয়ক বই নিয়ে আলোচনায় সভাপতিত্ব করবেন অধ্যক্ষ ড. আনোয়ারা আলম। মূল প্রবন্ধ পাঠ করবেন অধ্যাপক কাঞ্চনা চক্রবর্তী। আলোচনায় অংশ নেবেন কবি–শিশুসাহিত্যিক সনজীব বড়ুয়া, হাসনাত আমজাদ, স ম শামসুল আলম, জসীম মেহবুব। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।