আদালত কক্ষে ‘লোহার খাঁচা’ অপসারণ চেয়ে উকিল নোটিস

| মঙ্গলবার , ১৭ অক্টোবর, ২০২৩ at ১০:২১ পূর্বাহ্ণ

বিচারাধীন ব্যক্তিকে আদালত কক্ষে লোহার খাঁচায় রাখাকে ‘আইনের ব্যত্যয়’ হিসেবে বর্ণনা করে তা অপসারণ চেয়ে সরকারকে উকিল নোটিস দিয়েছেন ১০ জন আইনজীবী। গত রোববার এ নোটিস পাঠানো হয় বলে নোটিসদাতাদের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির জানিয়েছেন। খবর বিডিনিউজের।

আইন সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক বরাবর রেজিস্ট্রি ডাকযোগে এ নোটিস পাঠানো হয়। তাতে বলা হয়, দেশের সিংহভাগ আইন ও আদালতের ব্যবস্থা এবং অবকাঠামো ব্রিটিশ শাসনামলে তৈরি। আদালতে আসামি হাজিরার জন্য কাঠগড়ার প্রচলন ব্রিটিশ আমলেই শুরু হয়। তবে দুর্ধর্ষ আসামি, ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে আদালতে হাজির করানো হত। বিচার শেষে দোষীকে লোহার খাঁচায় বন্দি করে রাখা হয়েছেএমন ইতিহাস রয়েছে, কিন্তু বিচার চলাকালে আদালতে লোহার খাঁচায় বন্দি করে রাখার কোনো ইতিহাস পাওয়া যায় না। ভারতেও সাধারণ আদালতের কাঠগড়ায় লোহার খাঁচার ব্যবহার নেই।

বাংলাদেশের কোনো আইনে কাঠগড়ায় লোহার খাঁচার ব্যবহারের ‘বিধান নেই’ জানিয়ে নোটিসে বলা হয়, তবে কারা আইন, ১৮৯৪ এর ৫৬ ধারা মতে জেলে বন্দি কয়েদিকে সরকারের অনুমোদনক্রমে লৌহশৃঙ্খলে আটক করে রাখার বিধান রয়েছে। বিচারে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগেই অভিযুক্তকে প্রকাশ্য আদালতে লোহার খাঁচায় বন্দি করে অভিযুক্ত ব্যক্তির ‘প্রিন্সিপাল অব প্রিঅ্যাজামশন অব ইনোসেন্স’ ভঙ্গ করা হচ্ছে, যা একইসঙ্গে দেশের প্রচলিত আইন এবং আন্তর্জাতিক বিধিবিধানের পরিপন্থি। নোটিসে বলা হয়েছে, দেশিবিদেশি আইন, আন্তর্জাতিক বিধিবিধান ও উচ্চ আদালতের নজিরগুলো পর্যালোচনায় দেখা যায় আদালতে কাঠগড়ার পরিবর্তে লোহার খাঁচার ব্যবহার অমানবিক, বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৫ () অনুচ্ছেদের ‘পরিপন্থি’।

মানুষের স্বাভাবিক মর্যাদা সমুন্নত রাখতে ও মৌলিক অধিকার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আদালতে লোহার খাঁচা অপসারণ একান্ত প্রয়োজন, বলছেন নোটিসদাতারা। এ অবস্থায় সংবিধানের ৩৫ () অনুচ্ছেদসহ আন্তর্জাতিক বিধিবিধান অনুযায়ী মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নোটিস পাওয়ার চার সপ্তাহের মধ্যে আদালতের এজলাস কক্ষ থেকে লোহার খাঁচা অপসারণ করার অনুরোধ করা হয়েছে। তা না হলে মৌলিক অধিকারের সুরক্ষার্থে হাই কোর্ট বিভাগে রিট আবেদন দায়ের করা হবে বলে নোটিসে বলা হয়েছে। নোটিস পাঠানো সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবী হলেন জিএম মুজাহিদুর রহমান, মুহাম্মদ মিসবাহ উদ্দিন, মো. জোবায়দুর রহমান, মোহাম্মদ নোয়াব আলী, আজিমুদ্দিন পাটোয়ারী, মোহাম্মদ সাজ্জাদ সারোয়ার, মো. মুজাহিদুল ইসলাম, মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন, মোহাম্মদ মিজানুল হক ও আবদুল্লাহ সাদিক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ১১ মাস ধরে হয়রানির শিকার হলেন খোকন
পরবর্তী নিবন্ধকর্ণফুলীর হাক্কানী খাদ্য ফ্যাক্টরিকে আবারও লাখ টাকা জরিমানা