সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ বলেছেন, সন্ত্রাস, অস্ত্র পরিহার করব। হাতে রাখব বই। এই হোক আমাদের শপথ। এর দ্বারা সমাজ আলোকিত হবে। বই মনস্ক জাতি গঠন করতে পারলে সন্ত্রাস দূর হবে।
গতকাল বিকালে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মিউনিসিপ্যাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে আয়োজিত সপ্তাহব্যাপী বিভাগীয় বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে বেলুন উড়িয়ে তিনি মেলা উদ্বোধন করেন।
সচিব বলেন, আমরা যদি বই সাথে রাখি তাহলে খারাপ কাজ এড়িয়ে যেতে পারব। অস্ত্র পরিহার করতে পারব। কোথাও গেলে অস্ত্র নয়, আমরা বই রাখব। তিনি বলেন, বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র মানবিক কাজ করছে। এ কেন্দ্র ঘিরে যারা পাঠাভ্যাস গড়ে তুলবে তারা আলোকিত মানুষ হবে।
দক্ষিণ কোরিয়া সফরের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০০৮ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় সফরকালীন দেখি, বাস–ট্রেনে সবার হাতে বই। তখন ভাবতাম, কোরিয়ার মতো বই পড়ার অভ্যাস আমার বাংলাদেশে কবে হবে? আমার মনে হয় সেদিন আর বেশি দূর নয়। বাংলাদেশও সেদিকে ঝ্ুঁকবে। বই সাথে নিয়েই মানুষ গন্তব্যে ছুটে বেড়াবে। এজন্য সংশ্লিষ্টরা কাজ করছেন।
বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের দায়িত্বে অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সাঈদ রয়েছেন উল্লেখ করে সংস্কৃতি সচিব বলেন, তিনি একজন আলোকিত মানুষ। বই পড়ে যারা জ্ঞান অর্জন করতে চায় তারা মানবিক মানুষ হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এগিয়ে আসবেন।
তিনি বলেন, ২০০২–২০০৪ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ইউএনও থাকাকালীন একুশে বইমেলা দেখতে ঢাকায় যেতাম। তখন দুঃখ করতাম চট্টগ্রামে কেন বইমেলা হয় না। এখন সময় পাল্টেছে। চট্টগ্রামেও হচ্ছে বইমেলা। এখন আর ঢাকায় যেতে হবে না। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে বইমেলার আয়োজন করা হচ্ছে।
অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মোহাম্মদ শামীম আলমের সভাপতিত্বে ও সিনিয়র সহকারী কমিশনার নীলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী ও রাজীব হোসেনের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার এমএ মাসুদ, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক মিনার মনসুর, চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আবদুল মালেক, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মোজাফফর আহমদ, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির পরিচালক নেসার উদ্দিন আয়ুব ও চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের সভাপতি মহিউদ্দিন শাহ আলম নিপু।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতা ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের ব্যবস্থাপনায়, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহযোগিতায় বইমেলা প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে। মেলায় ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের খ্যাতনামা প্রকাশনী সংস্থার ৭৫টি স্টল বসেছে। এর মধ্যে বাংলা একাডেমিসহ সরকারি প্রকাশনী সংস্থা ১০টি, জাতীয় পর্যায়ের ৪৭টি প্রকাশনী সংস্থা ও চট্টগ্রামের সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের ১৭টি প্রকাশনা সংস্থার স্টল রয়েছে।
মেলায় প্রতিদিন স্কুল–কলেজের ছাত্রছাত্রীদের অংশগ্রহণে রচনা, বিতর্ক, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা; শিল্পকলা একাডেমি ও শিশু একাডেমির অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন রয়েছে। মেলা চলবে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত।