বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রাম অবিচ্ছেদ্য মন্তব্য করে এ দুই আন্দোলনকে এক করেই দুর্গাপূজার পরে দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল ঢাকায় নয়া পল্টনে দলের কার্যালয়ের সামনে তিন ঘণ্টার অনশন কর্মসূচি চলাকালে তিনি এ ঘোষণা দেন। দুপুর ২টায় মির্জা ফখরুলকে ফলের রস পান করিয়ে অনশন ভাঙান এলডিপির চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত অলি আহমেদ। খবর বিডিনিউজের।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে তৈরি করা হয় অস্থায়ী মঞ্চ। সেখানে নেতারা অনশনে বসেন। এছাড়া সড়ক ও ফুটপাতে মাদুর পেতে কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন। ঢাকা মহানগর বিএনপির উত্তর ও দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে এ অনশন কর্মসূচি পালিত হয়। স্থায়ী কমিটির সদস্যদের ফলের রস খাওয়ান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্র্য অধ্যাপক আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী ও অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ। ঢাকা ছাড়াও দেশের মহানগর ও জেলাগুলোতে তিন ঘণ্টার এ কর্মসূচি হয়েছে। অনশন চলাকালে বক্তৃতায় মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আর গণতন্ত্রের মুক্তি, দুইটা সমার্থক, অবিচ্ছেদ্য, একই। তাই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য যে আন্দোলন করছি, একই সঙ্গে গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য যে আন্দোলন করছি, এই দুইটিকে এক করে আমাদেরকে দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে এই সামনের দিনগুলোতে। সবাই বলছেন, সামনে পূজা আছে। এই পূজার মধ্যে আমরা সবসময় বলছি যে, আমরা সর্বতোভাবে একটা শান্তিপূর্ণ অসাম্প্রদায়িক ব্যবস্থায় বিশ্বাস করি। কারণ আমরা চাই না যে, কোনো আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে তারা এই সমস্যার সৃষ্টি করবে।
গতকাল মহালয়া দিয়ে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। আগামী ২৪ অক্টোবর দশমী দিয়ে শেষ হবে পূজার উৎসব। শুক্রবার কুমিল্লায় হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের মিছিলে ক্ষমতাসীন দল হামলা করেছে অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, আজকে এখানে সকল বক্তারা পরিষ্কারভাবে জানিয়েছেন, এখানে শুধু বিএনপি নয়, সব রাজনৈতিক দলের নেতারা এখানে ছিলেন, সবাই বক্তব্য দিয়েছেন, সংহতি প্রকাশ করেছেন। তারা শপথ নিয়েছেন যে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত না করে এই ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় না করে কেউ বিশ্রাম করবেন না। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না বলেও অভিযোগ তার।
সরকারের কাছে মির্জা ফখরুলের প্রশ্ন, তলে তলে সবকিছু ঠিক, কথাটা বলার কারণ কি? তলে তলে নাকি সব সাবাড় হয়ে গেছে। বারবার এই কথাটা কেন বলে? এজন্য বলে যে, আসলে কিছুই হয় নাই। গণতান্ত্রিক বিশ্ব আজকে তাদেরকে ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার জন্য পরিষ্কার করে বলছে এবং একটা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন করতে বলেছে। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সরকার হটিয়ে বিদেশে খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা করে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা হবে বলে মনে করেন তিনি।