স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, ২০০৩ সালে আমি চট্টগ্রামে খুলশীতে ছিলাম। তখন সারা দিনে পানি পেতাম না। তখন এই চট্টগ্রামের ৬০ শতাংশ লোক নিয়মিত পানি পেত না। এখন চট্টগ্রাম ও ঢাকা ওয়াসায় শতভাগ পানি দেওয়া হয়। ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রাম এবং ঢাকার পানি সমস্যা সমাধানের জন্য একের পর এক মেগা প্রকল্প গ্রহণ করেছেন। বতর্মানে চট্টগ্রামে পানির কোনো সংকট নেই। ৫০ কোটি লিটার পানি উৎপাদিত হচ্ছে। সাপ্লাইয়ের কারণে কিছু কিছু অভিযোগ হয়তো এখনো আছে। নতুন পাইপ লাইনের কাজ শেষ হলে এটা আর থাকবে না। গতকাল শনিবার রেডিসন ব্লুতে চট্টগ্রাম ওয়াসার কর্ণফুলী পানি শোধনাগার প্রকল্প (২য় পর্যায়) হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, এই চট্টগ্রামে স্যুয়ারেজের মতো বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে আমরা উদ্যোগ নিয়েছি। খাল ও নদীর দূষণ রক্ষায় স্যুয়ারেজের মতো মেগা প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
ওয়াসার অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হচ্ছে না। নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। প্রধানমন্ত্রীর অধীনেও নির্বাচন হবে না। নির্বাচন কমিশন যে সমস্ত নির্দেশনা দেবে আমরা তাই পালন করব। আর পুলিশ থেকে আরম্ভ করে সব ধরনের প্রশাসন নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করবে।
তিনি বলেন, ২০১৪ সালে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয়নি। তাহলে তারা কিভাবে দাবি করে যে সুষ্ঠু ভোট হয়নি? তাদের নির্বাচনে আনা, এটা কী আওয়ামী লীগের দায়িত্ব? না। তারা আসুক বা না আসুক, এটা অনেক দেশেই ঘটে। এমনকি ইউএসএসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অনেক রাজনৈতিক দল আছে। সব রাজনৈতিক দল ভোটে অংশ নেয় না। তাছাড়া দেশে নির্বাচন করার কাজ সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের। রাজনৈতিক দলগুলো জনকল্যাণে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। বিএনপিকে নির্বাচনে আনার দায়িত্ব আওয়ামী লীগের নয়।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জাপানি রাষ্ট্রদূত ইয়োমা কিমিনোরি, জাইকা বাংলাদেশের মুখ্য প্রতিনিধি ইচিগুচি তমোহিদে, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. ইব্রাহিম, চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী একেএম ফজলুল্লাহ ও উপ–ব্যবস্থাপনা পরিচালক (প্রকৌশলী) বিষ্ণু কুমার সরকার।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম ওয়াসার কর্ণফুলী পানি পরিশোধন প্রকল্পে রাঙ্গুনিয়ার পোমরা এলাকায় কর্ণফুলী নদী থেকে পানি উত্তোলন করে পরিশুদ্ধ করে পাইপ লাইনের মাধ্যমে নগরীতে সরবরাহ করা হচ্ছে। এই প্রকল্প থেকে দৈনিক ১৪ কোটি ৩০ লাখ লিটার সুপেয় পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। ২০২১ সালের মার্চের এই কেন্দ্রে উৎপাদন শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২১ সালে ভার্চুয়ালি এই প্রকল্প উদ্বোধন করেন। এই প্রকল্পে ৪ হাজার ৪৮৯ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। প্রকল্পে জাইকার উন্নয়ন সাহায্য ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। বাংলাদেশে সরকারের ১ হাজার ৬৬৫ কোটি টাকা এবং চট্টগ্রাম ওয়াসার বরাদ্দ ২৩ কোটি টাকা।