মীরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একমাত্র এক্স–রে মেশিনটি ১৪ বছর ধরে বিকল ছিল। চলতি বছরের এপ্রিলে সচল হলেও অপারেটর তথা রেডিওগ্রাফারের অভাবে চালু করা সম্ভব হয়নি। ফলে এক্স–রে সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। জানা গেছে, মীরসরাই উপজেলার সাড়ে চার লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা দিতে ১৯৯৩ সালের ১১ অক্টোবর তৎকালীন সংসদ সদস্য এম এ জিন্নাহ এক্স–রে মেশিনটি উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পর কয়েক মাস সচল থাকলেও তা আবার বিকল হয়ে পড়ে। দীর্ঘদিন মেশিনটি একটি কক্ষে তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়েছিল। ২০০৭ সালে এক্স–রে মেশিন মেরামত করে চালুর কয়েক মাস পর আবার বিকল হয়ে যায়। এরপর ১৪ বছর ধরে বিকল হয়ে একটি কক্ষে তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকে। চলতি বছরের এপ্রিলে নষ্ট মেশিনটি সচল করা হয়। এরপর সাত মাস পার হলেও এখনো চালু করা সম্ভব হয়নি।
সরেজমিনে দেখা যায়, এক্স–রে কক্ষটি এখন আলোকিত। সব যন্ত্র পরিপাটি, সাজানো গোছানো। কক্ষে আগের মতো ধুলোবালু নেই। শুধু মেশিনটি চালু নেই। তবে এখনো কক্ষের এসি নষ্ট। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্টোরকিপার মোহাম্মদ রাশেদ বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে এক্স–রে মেশিন নষ্ট থাকার পর এপ্রিলে সচল করা হয়। কিন্তু রেডিওগ্রাফারের অভাবে চালু করা যাচ্ছে না।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতি মাসে ৮ হাজারের বেশি রোগী আউটডোরে চিকিৎসাসেবা নেন। দুই হাজারের বেশি রোগী ইনডোরে সেবা নেন। এছাড়া প্রতিদিন গড়ে শতাধিক রোগী জরুরি বিভাগ থেকে সেবা নেন। সরকারি এক্স–রে মেশিনে পরীক্ষা করলে রোগীর ১০০–২০০ টাকা ব্যয় হয়। বাইরে ব্যয় কয়েক গুণ বেড়ে যায়। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী উপজেলার কাটাছড়া ইউনিয়নের বঙ্গনুর এলাকার বাসিন্দা নুর হোসেন মিয়া বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবার মান আগের তুলনায় কিছুটা ভালো হয়েছে। কিন্তু চিকিৎসার যন্ত্রপাতিগুলো চালু থাকলে আরও বেশি সেবা পাওয়া যেত। জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের ইমামপুর গ্রামের গৃহবধূ শাহেদা পারভিন বলেন, হাসপাতালে গেলে আগে নিয়মিত ডাক্তার থাকতেন না। এখন ডাক্তার পাওয়া যায়। তবে এক্স–রে মেশিন অনেক বছর ধরে চালু না থাকায় আমরা সেবা পাচ্ছি না। এছাড়া হাসপাতালের টয়লেট অপরিষ্কার থাকে।
মীরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মিনহাজ উদ্দিন বলেন, দীর্ঘ সময় পর এক্স–রে মেশিনটি সচল করা হয়েছে। কিন্তু রেডিওগ্রাফারের পদ শূন্য থাকায় চালু করা যাচ্ছে না। আমি একাধিকবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছি।