হাসপাতাল–ক্লিনিকে সন্তান প্রসবে বিনা প্রয়োজনে সিজারিয়ান সেকশন (সি–সেকশন) বন্ধে তৈরি করা নীতিমালার আলোকে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। রায়ে অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান সেকশন নিবারণে গাইডলাইন তৈরির ৬ মাসের মধ্যে পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন হাই কোর্ট। এছাড়া এ সংক্রান্ত বিষয়ে ব্যাপকভাবে প্রচার করতে বলেছে আদালত।
হাই কোর্টে জমা দেওয়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা রায়ে যুক্ত করেছে আদালত, এর ফলে এটি আইন হিসেবে বিবেচিত হবে জানিয়েছেন রিটের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম। তিনি বলেন, সরকারি–বেসরকারি ক্লিনিকে অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান সেকশন প্রতিরোধে কার্যকর তদারকি করতে বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার হাই কোর্টের বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। খবর বিডিনিউজের।
২০১৯ সালের ৩০ জুন সন্তান প্রসবের ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচার (সিজারিয়ান) রোধে একটি নীতিমালা তৈরিতে বিশেষজ্ঞ ও অংশীজনের সমন্বয়ে কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাই কোর্ট। এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মোহাম্মদ আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ওই আদেশ দেয়। এক মাসের মধ্যে ওই কমিটি গঠনে করে কমিটিকে ছয় মাসের মধ্যে নীতিমালা তৈরি করে আদালতে দাখিলের নির্দেশনা দেন আদালত। সেই সঙ্গে রুল জারি করা হয়। চার সপ্তাহের মধ্যে স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের সভাপতিকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
প্রসবে অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচার নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও সেভ দ্য চিলড্রেনের প্রতিবেদন উদ্বৃত করে বিভিন্ন সময় সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের পক্ষে আইন উপদেষ্টা এস এম রেজাউল করিম হাই কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ওই রিট আবেদন করেছিলেন। ওই বছরের ২১ জুন প্রকাশিত সেভ দ্য চিলড্রেনের একটি প্রতিবেদন থেকে উদ্বৃত করে আবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে গত দুই বছরে শিশু জন্মের ক্ষেত্রে প্রসবকালীন অস্ত্রোপচারের হার বেড়েছে ৫১ শতাংশ। এতে বাবা–মায়েদের সন্তান জন্মদানে ব্যাপক পরিমাণে ব্যয় বহন করতে হচ্ছে। এ ধরনের অস্ত্রোপচারে সন্তান জন্মদানে নানা ঝুঁকিও রয়েছে। অপ্রয়োজনীয় প্রসবকালীন অস্ত্রোপচার ঠেকাতে সেভ দ্য চিলড্রেনের প্রতিবেদনে চিকিৎসকদের উপর নজরদারির যে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, রিট আবেদনে সে বিষয়েও নির্দেশনা চাওয়া হয়।