রাউজানে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ তুলে সৎ ছেলেসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা করার দায়ে সৎ মা সায়রা বানুকে তিন বছরের কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরো তিন মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। গতকাল বুধবার চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল–৩ এর বিচারক জয়নাল আবেদিন এই রায় ঘোষণা করেন। এ সময় সায়রা বানু কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পিপি জিকো বড়ুয়া আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, যৌন নির্যাতনের অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় সৎ ছেলে মাহবুবুল আলমসহ তিনজনকে খালাস দেন বিচারক। এরপর একই আদালতে সৎ ছেলে পাল্টা মামলা করলে বিচারক তা আমলে নেন এবং বিচার কাজ শেষে রায় ঘোষণা করেন। এতে যৌন নিপীড়নের মিথ্যা অভিযোগকারী সায়রা বানুকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, ২০০৫ সালের ২৪ মে সায়রা বানু যৌন নিপীড়নের অভিযোগ তুলে ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করেছিলেন। সেখানে এজাহারে বলা হয়, একা পেয়ে এবং সুযোগ পেয়ে সৎ ছেলেসহ তিনজন ঘরে ঢুকে জোরপূর্বক বিবস্ত্র করে তার উপর যৌন নির্যাতন চালায়। ট্রাইব্যুনাল তখন মামলাটি আমলে নিয়ে রাউজান থানার ওসিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন। সেই অনুসারে ওসি ঘটনার প্রাথমিক সত্যতার বিষয়ে প্রতিবেদন দিলে ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট দেন। আসামি মাহবুবুল আলমকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলে তিন মাস জেল খেটে জামিন লাভ করেন। পরবর্তীতে ট্রাইব্যুনাল আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু করেন। বাদিসহ মোট তিনজন সাক্ষী বিচারকের কাছে সাক্ষ্য প্রদান করেন। আসামিপক্ষ জেরা করেন। একপর্যায়ে ২০২২ সালের ৩১ মে মামলায় রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ে আসামিরা নির্দোষ প্রমাণিত হন ও খালাস পান।
আদালতসূত্র আরো জানায়, খালাস পাওয়ার পর একই বছরের ১৪ আগস্ট মিথ্যা মামলা দায়েরের অভিযোগে সৎ ছেলে মাহবুবুল আলম একই ট্রাইব্যুনালে সায়রা বেগমের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১৭(১) ধারায় মামলাটি দায়ের করেন। এজাহারে বলা হয়, সৎ মা সায়রা বানু পিতার সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার জন্য মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছিলেন। পরে আদালত তার মামলাটি আমলে নিয়ে চার্জ গঠন করেন।