আমি তো অপরাধ করিনি, শঙ্কিত কেন হবো

দুদক কার্যালয় থেকে বেরিয়ে ড. ইউনূস

| শুক্রবার , ৬ অক্টোবর, ২০২৩ at ৫:০১ পূর্বাহ্ণ

গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমি তো অপরাধ করিনি, শঙ্কিত কেন হবো? গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৩৭ মিনিটে দুদক কার্যালয়ে প্রবেশ করেন ড. ইউনূস। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বেলা ১১টার দিকে দুদক কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় সাংবাদিকরা ড. ইউনূসের কাছে নানা প্রশ্ন করলে তিনি আরো বলেন, আমাকে ডেকেছেন, আমি এসেছি, যেহেতু এটা লিগ্যাল মেটার, আমার আইনজীবী আছেন তিনি ব্যাখ্যা দেবেন। খবর বাংলানিউজের।

. ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমি ড. ইউনূস সাহেবের আইনজীবী হিসেবে ভেতরে (দুদক কার্যালয়ে) গিয়েছিলাম এবং আমি আইনের সমস্ত ব্যাখ্যা সেখানে দিয়েছি। উনারা বলেছেন, ওই সমঝোতা চুক্তিটি জাল। আমি বলেছি, আপনারা জাল বলতে পারেন না, কারণ দুই পক্ষের সমঝোতা যখন হয়, তখন আর সেটা জাল থাকে না এবং এটা হাইকোর্টের অনুমোদন পাওয়া সুতরাং এটা জাল না। ওই চুক্তিতে ছিল, শ্রমিকদের সঙ্গে ৭ দিনের মধ্যে অ্যাকাউন্ট করতে হবে। সাত দিনের মধ্যে আমরা অ্যাকাউন্ট করেছি। হাঁ, আমরা টেলিফোনে অনুমতি নিয়েছি, কারণ সবাই একসঙ্গে থাকে না। আমরা ৯ তারিখের জুম মিটিংয়ের মাধ্যমেও সবার অনুমতি নিয়েছি। দুদক বলেছে, আপনারা অনুমতিটা পরে নিয়েছেন। আমি বলেছি, দেরি হওয়ার ঘটনা যদি ঘটে থাকে তাহলে এটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এই মামলা অবশ্যই ভিত্তিহীন এবং কাল্পনিক অভিযোগের ভিত্তিতে করা। দেশি ও আন্তর্জাতিকভাবে ড. ইউনূসকে হেয় প্রতিপন্ন করতে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মামলা করা হয়েছে।

দুদক তলব করায় অর্থ আত্মসাৎ মামলায় গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সেগুনবাগিচার প্রধান কার্যালয়ে আসেন। তার আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন গণমাধ্যমকে জানান, উনি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। দুদক থেকে নোটিশ পাওয়ার পর জবাব দিতে তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছেন।

এর আগে গত বুধবার গ্রামীণ টেলিকমের অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের মামলায় প্রতিষ্ঠানটির তিন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। গত ২৭ সেপ্টেম্বর অসৎ উদ্দেশ্যে অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ ও অর্থপাচার মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৩ জনকে তলব করে দুদক। দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তা গুলশান আনোয়ার প্রধানের সই করা এক চিঠিতে বলা হয়, ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাৎ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আপনার বক্তব্য শোনা ও নেওয়া প্রয়োজন। বক্তব্য দেওয়ার জন্য দুদক কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে তদন্ত কাজে সহযোগিতার জন্য আপনাকে অনুরোধ করা হলো।

গত ৩০ মে অসৎ উদ্দেশ্যে অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ করে সেটেলমেন্ট এগ্রিমেন্টের শর্তাদি লঙ্ঘন করে জালজালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে গ্রামীণ টেলিকম থেকে অর্থ আত্মসাৎপূর্বক অপরাধলব্ধ অর্থ স্থানান্তর বা রূপান্তরের মাধ্যমে অবস্থান গোপন করে আত্মসাৎ করার অভিযোগে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি করেন।

মামলার আসামিরা হলেন, গ্রামীণ টেলিকম চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজমুল ইসলাম, পরিচালক ও প্রাক্তন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক পারভীন মাহমুদ, নাজনীন সুলতানা, মো. শাহজাহান, নূরজাহান বেগম, এস এম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী, অ্যাডভোকেট মো. ইউসুফ আলী, অ্যাডভোকেট জাফরুল হাসান শরীফ, গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিককর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান ও গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিককর্মচারী ইউনিয়নের প্রতিনিধি মো. মাইনুল ইসলাম।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন আজ
পরবর্তী নিবন্ধপারমাণবিক জ্বালানির যুগে বাংলাদেশ