মরিস হিউ ফ্রেডরিক উইলকিন্স (১৯১৬–২০০৪)। নোবেল বিজয়ী জীব–পদার্থবিজ্ঞানী। যার গবেষণা ও অবদান পদার্থবিজ্ঞান এবং বায়ো ফিজিক্সের একাধিক ক্ষেত্র বিস্তৃত ফসফোরেসেন্স, আইসোটোপ বিচ্ছেদ, অপটিক্যাল মাইক্রোস্কোপি এবং এক্সরে বিচ্ছিন্নতা, এবং উন্নয়নের জন্য রাডার। মরিস হিউ ফ্রেডরিক উইলকিন্স ১৯১৬ সালের ১৫ ডিসেম্বর নিউজিল্যান্ডের পঙ্গারোয়া শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৩৮ সালে উইলকিন্স কেমব্রিজের সেন্ট জন কলেজ থেকে পদার্থবিজ্ঞানের ডিগ্রি অর্জন করেন। যেহেতু ইংল্যান্ড যুদ্ধে ছিল, বিজ্ঞানী বিশেষ করে পদার্থবিজ্ঞানীদের প্রচুর চাহিদা ছিল। উইলকিন্স বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ে রাডারের উন্নতি নিয়ে কাজ করেছিলেন। যে বিষয়ে তিনি পিএইচডি অর্জন করেন। উইলকিন্সের কিছু কাজ আজকের রাডারে এখনও ব্যবহৃত হয়। মরিস ১৯৪৩ সালে উইলকিন্সের বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ম্যানহাটন প্রকল্পে কাজ করার জন্য ক্যালিফোর্নিয়ার বার্কলে চলে যান। এটি ছিলো সমস্ত যুদ্ধ প্রচেষ্টার একটি অংশ। হিরোশিমা এবং নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমার ধ্বংসাত্মক প্রভাবের পর উইলকিনস পরমাণু অস্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষ হয়ে ওঠে এবং অব্যাহত থাকে। যুদ্ধের পর উইলকিন্সকে সেন্ট অ্যান্ডর্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞান প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন। সেখানে তিনি একটি মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল বায়োফিজিক্স রিসার্চ ইউনিটের সদস্য হিসেবে বায়োফিজিক্স ল্যাব স্থাপন করেছিলেন।
উইলকিন্স বিভিন্ন ধরনের মাইক্রোস্কোপ এবং স্পেকট্রোফোটোমিটার ব্যবহার করে ডিএনএ এবং ভাইরাসের মতো জৈবিক অণু অধ্যয়ন করেন। অবশেষে তিনি ডিএনএ অণুর বিভাজন চিত্র তৈরির জন্য এক্স–রে ব্যবহার শুরু করেন। লন্ডনের কিংস কলেজে ডি.এন.এ.-এর গঠনের উপর সম্পাদিত কাজের জন্যেই তিনি সর্বাধিক পরিচিতি লাভ করেন এবং এই কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে ১৯৬২সালে ‘শারীরবৃত্তি অথবা ঔষধবিদ্যা শাখায় ফ্রান্সিস ক্রিক ও জেমস ওয়াটসন এর সাথে যৌথভাবে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। নিউক্লিয়িক এসিডসমূহের গঠন–কাঠামো এবং জীবিত বস্তুতে তথ্য স্থানান্তরে এই এসিডসমূহের ভূমিকা নির্ণয়ে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণার জন্য তাঁকে এই বিরল সম্মাননা প্রদান করা হয়। ২০০৪ সালের ৫ অক্টোবর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।