নগরীর বায়েজিদ এলাকার আমিন জুট মিলের পাশের আমিন কলোনিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে ৪৮টি এক কক্ষ বিশিষ্ট টিনের ঘর, ছয়টি দোকান ও দুটি জুট রাখার গুদাম পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এখানকার বাসিন্দারা অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেলেও সর্বস্ব হারিয়েছে ৩৯টি পরিবার। গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে অগ্নিকাণ্ডের এই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের চারটি স্টেশনের আটটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। আগুন নির্বাপণের কাজ শেষ হয় সকাল ৮টা ৫৫ মিনিটে। এতে আনুমানিক ২৫ লাখ টাকার মতো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি ক্ষতিগ্রস্তদের।
ক্ষতিগ্রস্তরা জানিয়েছেন, সকালে হঠাৎ করে আগুনের লেলিহান শিখা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। তখন সবাই ঘুমাচ্ছিলেন। এরপর লোকজন এদিক সেদিক ছোটাছুটি করতে থাকে। হতাহতের ঘটনাও ঘটতে পারত। তবে আল্লাহর রহমত থাকায় কেউ হতাহত হয়নি। ফায়ার সার্ভিস দ্রুত ঘটনাস্থলে আসলেও মালামাল রক্ষা করা যায়নি। আগুনে পুড়ে সবকিছু ছাই হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্তরা সবাই খেটে খাওয়া মানুষ।
ক্ষতিগ্রস্তদের একজন বিবি তাহেরা। তিনি বলেন, মানুষের বাসায় কাজ করে ৫০ হাজার টাকা জমিয়েছি। এই ৫০ হাজার টাকা, দুটি সেলাই মেশিন ও ঘরের অন্যান্য আসবাসপত্র সবকিছু পুড়ে গেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণের পর কিছুই খুঁজে পাইনি। মানুষের চিৎকারে ঘুম না ভাঙলে হয়ত বেঁচে থাকা হতো না।
বায়েজিদ ফায়ার স্টেশনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, খবর পেয়ে আগ্রাবাদ, বায়েজিদ, কালুরঘাট ও চন্দনপুরা স্টেশনের ৮টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। এতে ছয়টি দোকান, দুটি গুদাম ও ৪৮টি এক কক্ষ বিশিষ্ট বসতঘর পুড়ে যায়। আগুন নিয়ন্ত্রণের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলেও জানান তিনি। ফায়ার সার্ভিস চট্টগ্রামের উপপরিচালক আব্দুল হালিম আজাদীকে বলেন, এক কক্ষ বিশিষ্ট ৪৮টি ঘরের মালিক সাতজন। ছয়টি দোকানের মালিক পৃথক ৬ ব্যক্তি। আগুনে মোট ৩৯ ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি বলেন, জুট গুদাম ও দোকানগুলোতেও লোকজন ছিল না। থাকলে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটতে পারত। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, বসতঘরের চুলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। তবে নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। জুট গোদাম থেকেও হতে পারে। সাধারণ মানুষ বলাবলি করছে মশার কয়েল থেকে আগুনের সূত্রপাত। আবার কেউ কেউ ধারণা করছে বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত। সবগুলোই ধারণা করা বক্তব্য। যে সময় আগুন লাগে তখন তো মশার কয়েল শেষ হয়ে যাওয়ার কথা।
উপপরিচালক বলেন, নিয়ম অনুযায়ী আমরা প্রিলিমিনারি রিপোর্ট প্রস্তুত করি এবং তা আমাদের অধিদপ্তরে পাঠাই। এবারও আমরা তা করেছি। অধিদপ্তর একটি তদন্ত কমিটি করে দেবে। কালকের (আজকে) মধ্যে সেটি হতে পারে। এরপর তদন্ত শুরু হবে। দুটি বিষয়কে দেখা হবে। আগুনের কারণ ও ক্ষতিগ্রস্ত। তদন্ত কাজ শেষে প্রয়োজনীয় করণীয় ঠিক করা হবে।












