এক দশক আগে রাঙ্গুনিয়ার শেখ রাসেল এভিয়ারি অ্যান্ড ইকো পার্কে স্থাপিত হয়েছিলো দেশের দীর্ঘতম কেবল কার। কিন্তু ২০২১ সালের ১৩ নভেম্বর বন্ধ হয়ে যায় আকর্ষণীয় এই ইভেন্টটি। এতে পার্কে আসা পর্যটকরা হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। সর্বশেষ গত ৩০ সেপ্টেম্বর দীর্ঘ প্রায় দুই বছর পর নতুনভাবে চালু হলো ক্যাবল কার রাইড, উদ্বোধন করেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি।
আরও দুই কিলোমিটার কেবল কার স্থাপন করা হবে বলে জানানো হয় এই অনুষ্ঠানে। এটি বাস্তবায়ন হলে ক্যাবল কারে চড়ে পার্কের একদিক থেকে উঠে পুরো পার্ক প্রদক্ষিণ করে অন্যদিকে এসে নামা যাবে। নতুনরূপে ক্যাবল কার চালুর মধ্য দিয়ে এই পার্কটি দেশ বিদেশের বিনোদন প্রেমিদের কাছে প্রিয় ঠিকানায় পরিণত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের রাঙ্গুনিয়া রেঞ্জের কোদালা বিটের চন্দ্রঘোনা ও দক্ষিণ নিশ্চিন্তাপুরের প্রায় ২১০ হেক্টর অর্থ্যাৎ ৫২০ একর বনভূমি নিয়ে শেখ রাসেল এভিয়ারি অ্যান্ড ইকো পার্ক স্থাপিত হয়েছিলো। রাঙ্গুনিয়া উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের কাপ্তাই সড়ক সংলগ্ন এই পার্কটি ২০১৩ সালের ১৩ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টেলি কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করেন, যার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয় ২০১০ সালের ৭ আগস্ট। পার্কের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ছিল বাংলাদেশের প্রথম রোপওয়ে ক্যাবলকার যা ২.৪ কিলোমিটার দীর্ঘ। উঁচু–নিচু পাহাড়ের মাঝপথ দিয়ে বয়ে গেছে এ ক্যাবলকার। প্রতিবছর সারাদেশের অনেক পর্যটক আকর্ষণী এই ক্যাবলকার উপভোগে আসেন। তবে দীর্ঘ প্রায় দুই বছর নানা কারণে বন্ধ থাকার কারণে হতাশ হয়ে ফিরছেন পর্যটকরা। এতে সরকার লাখ লাখ টাকার রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
শেখ রাসেল এভিয়ারি পার্ক ঘুরে দেখা গেছে, বিশাল পাহাড়ি ও সমতল এলাকা জুড়ে পার্কের অবস্থান। উপরে টানানো আছে ক্যাবল কারের রোপ লাইন। পার্কের ভেতরে রাস্তার পাশে সুবিশাল খাঁচায় রয়েছে দেশি বিদেশি নানা প্রজাতির পাখি। পার্কে রয়েছে কৃত্রিম লেক যেখানে দেশি বিদেশি হাঁস ও নানা প্রজাতির পাখির দেখা মিলে।
এ ব্যাপারে পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নাহিদ হাসান জানান, দীর্ঘদিন পর নতুন উদ্যোমে যাত্রা করছে শেখ রাসেল এভিয়ারি অ্যান্ড ইকো পার্কের ক্যাবল কার। ক্যাবল কার ছাড়াও পার্কের নয়নাভিরাম নানা আর্কষণীয় ইভেন্ট রয়েছে। পার্কে আকর্ষণীয় গেট, চিল্ড্রেন কর্ণার নির্মাণ, ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন, বার্ড গ্যালারি স্থাপন, লেক নির্মাণ, সীমানা দেয়াল নির্মাণসহ অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। এসবের মাধ্যমে শেখ রাসেল এভিয়ারি পার্ককে আকর্ষণীয় বিশ্বমানের পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে।
শেখ রাসেল পার্ক প্রসঙ্গে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছায় রাঙ্গুনিয়ায় শেখ রাসেল এভিযারি এন্ড ইকো পার্ক স্থাপন করতে পেরেছি। এই পার্কের উন্নয়নে আরও ১২৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। সেই বরাদ্দ থেকে আরও দুই কিলোমিটার দৈর্ঘ্যে ক্যাবল কার স্থাপন করা হবে। দেশের কোথাও এতো দীর্ঘ ক্যাবল কার নেই। এই পার্কে বিদেশের অনেক জাতের পাখি আছে, আমাদের দেশে অনেক সাফারি পার্ক আছে কিন্তু এরকম এভিয়ারি আমাদের দেশে আর কোথাও নাই। এটিই দেশের প্রথম এভিয়ারি পার্ক। আমি মনে করি শেখ রাসেল এভিয়ারি পার্কে দেশ এবং বিদেশের পর্যটকদের জন্য জনপ্রিয় পর্যটন স্পটে পরিণত হবে।