জাতীয় পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্টের সময় বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী মহলের মাধ্যমে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও নাশকতার একটি সম্ভাবনা থাকে। সর্ব সাধারণের জানমালের নিরাপত্তার লক্ষ্যে র্যাব–৭ সহ দেশের সব ব্যাটালিয়ন তাদের নিজ নিজ দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় রোবাস্ট পেট্রোল পরিচালনা ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট পরিচালনা করছে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে র্যাবের নজরদারি ও অভিযান আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
র্যাব জানিয়েছে এই পেট্রোল জোরদারের ফলে ছিনতাই, চুরি, ডাকাতি, খুন, ধর্ষণসহ অন্যান্য অপরাধ অনেক কমে গেছে এবং একই সঙ্গে কিশোর গ্যাং দৌরাত্ম্য কমেছে। রোবাস্ট পেট্রোল ছাড়াও যেকোনো ধরনের উদ্ভূত পরিস্থিতি, সহিংসতা বা নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড মোকাবেলায় র্যাব স্পেশাল ফোর্স টিম, র্যাবের হেলিকপ্টার, ডগ স্কোয়াড ও বোম্ব ডিস্পোজাল ইউনিট সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রয়েছে।
র্যাব–৭ অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মাহবুব আলম জানান, অপরাধ নির্মূলে চট্টগ্রামের দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় র্যাবের পক্ষ থেকে রোবাস্ট পেট্রোলিং ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট স্থাপন করা হচ্ছে। নগরীতে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধর্ষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেপ্তার এবং অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে র্যাব–৭ জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করে আসছে। গত তিন মাসে র্যাব–৭ রোবাস্ট পেট্রোলিং এর মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং অপরাধ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। এক্ষেত্রে তথ্য দিয়ে সহায়তা করার জন্য তিনি নগরবাসীর প্রতি অনুরোধ করেছেন।
তিনি জানান, র্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তরের নির্দেশনায় র্যাব–৭ চট্টগ্রামের দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় রোবাস্ট পেট্রোলিংয়ের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কাজ করে যাচ্ছে। মূলত কিশোর গ্যাং, আধিপত্য বিস্তারের ঘটনায় হত্যা, মাদক, ডাকাতি, ইভটিজিং, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, গুজব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান রেখেছে।
দুই মাসে ৩২৮ আসামি গ্রেপ্তার : চট্টগ্রামে গত আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে ৩২৮ আসামি। এদের মধ্যে বেশিরভাগ মাদক কারবারি, ছিনতাইকারী, মানবপাচারকারী ও অপহরণকারী রয়েছে। এই দুই মাসে গ্রেপ্তার হয়েছে কিশোর গ্যাং সদস্য ১২ জন, শীর্ষ জঙ্গি বা আত্মঘাতী ৪ জন, চাঞ্চল্যকর অপরাধী ও জলদস্যু ৩ জন, মাদক ব্যবসায়ী ৮৩ জন, মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত বা যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি ৩৪ জন, হত্যা এবং হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আসামি ৩২ জন, মানবপাচারকারী ও অপহরণকারী ২৫ জন, ধর্ষণকারী ১৭ জন, ডাকাত ১১ জন, বিবিধ সাইবার প্রতারণায় ৫ জন, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী (আগ্নেয়াস্ত্র) ৮ জন, অপহৃত/পাচারকালীন ভিকটিম উদ্ধার ২৭ জন, চাঁদাবাজ, ছিনতাইকারী এবং সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি ৩৩ জন, চোরাকারবারী, ভেজাল ব্যবসায়ী ও প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী ৩৩ জন এবং সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী ১ জন।