বহিষ্কৃত হয়েও থাকছেন হলে, করছেন ক্লাস

চবি প্রতিনিধি | শনিবার , ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ at ৪:২৬ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বহিষ্কার হয়ে আবাসিক হলে অবস্থান কিংবা ক্লাসে অংশ নেওয়ার ঘটনা যেন স্বাভাবিকে পরিণত হয়েছে। রাজনৈতিক নানা কার্যক্রমসহ বহিষ্কৃতদের মিছিলে নেতৃত্ব দিতে দেখা গেছে বার বার। এমনকি প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে বসে আড্ডাও দিচ্ছেন কেউ কেউ। বহিষ্কারের কিছুদন পর আবার মানবিক দিক বিবেচনায় অনেকে ক্ষমা পেয়ে যান। বহিষ্কারের আইনটি যেন শুধুই কাগজেকলমে সীমাবদ্ধ। সর্বশেষ চবি শাখা ছাত্রলীগের দুই নেতা ক্যাম্পাস থেকে বহিষ্কৃত হলেও ক্যাম্পাসেই দাপিয়ে বেড়াতে দেখা যায় তাদের।

বহিষ্কৃত হয়েও তারা থাকছেন হলে, করছেন নিয়মিত ক্লাস, দিচ্ছেন পরীক্ষা। আবার রাজনৈতিক কর্মসূচিতেও তাদের নিয়মিত অংশ নিতে দেখা যায়। চবি ক্যাম্পাসে এক সাংবাদিককে মারধর করে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কৃত হয়েছিলেন শাখা ছাত্রলীগের ওই দুই নেতা। অথচ নিয়মিত ক্যাম্পাস চষে বেড়াচ্ছেন। দুই নেতা হলেন শাখা ছাত্রলীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক খালেদ মাসুদ ও উপদপ্তর সম্পাদক আরাফাত রায়হান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী, বহিষ্কারের মেয়াদের মধ্যে বহিষ্কৃত কেউ ক্যাম্পাসে কিংবা হলে অবস্থান করতে পারবেন না। এ ছাড়া কোনো অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমেও অংশ নিতে পারবেন না। এ নিয়ে গত ১৪ আগস্ট প্রক্টরকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক দোস্ত মোহাম্মদ, তবে চিঠি দিয়েও মেলেনি প্রতিকার।

ভুক্তভোগী ওই সাংবাদিক বলেন, বহিষ্কার হওয়ার পরও দোষীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসে অংশগ্রহণ ও হলে অবস্থানসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বহিষ্কারাদেশ শুধু কাগজেকলমেই সীমাবদ্ধ। বহিষ্কৃতরা আমাকে দেখে উপহাসমূলক আচরণ করছে এবং আমার দিকে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গিতে তাকিয়ে থাকে। তাদের এমন আচরণে আমি খুবই শঙ্কিত। পাশাপাশি এখন পর্যন্ত দোষীদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের আইনি ব্যবস্থা না নেয়ায় আমি নিরাপত্তাহীনতায়ও ভুগছি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বহিষ্কৃতরা ক্যাম্পাসে বাইক শোডাউন দেয় নিয়মিত। তারা দুইজনই শাহ আমানত হলে অবস্থান করছেন।

জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও সিএফসি গ্রুপের একাংশের নেতা সাদাফ খান বলেন, ‘তারা ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত না। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের বিষয়টা প্রশাসন দেখবে, আমরা তো প্রশাসন নই। সে আমাদের ছোট ভাই, ছাত্রলীগের প্রোগ্রামে থাকতেই পারে।’

চবি সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইমাম ইমু বলেন, প্রশাসনের বহিষ্কার কিংবা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা শুধুই লোক দেখানো। বহিষ্কৃত কিংবা শাস্তিপ্রাপ্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে হলে অবস্থান করছে, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডেও অংশ নিচ্ছে। প্রক্টরিয়াল বডির সঙ্গেও বৈঠক করছে। এসব অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. নূরুল আজিম সিকদার বলেন, হলের ব্যাপারটি প্রভোস্ট দেখবেন। তবে আমরা এ ব্যাপারে সোচ্চার। তাকে দেখলে ব্যবস্থা নেব।

পূর্ববর্তী নিবন্ধতিন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ১১০০ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে এডিবি
পরবর্তী নিবন্ধসেন্টমার্টিনের চারদিকে ওয়াকওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা