রেড লেডিতে লাখ টাকা

মীরসরাই প্রতিনিধি | শনিবার , ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ at ৪:১৭ পূর্বাহ্ণ

মীরসরাই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সম্প্রতি পেঁপে চাষ করে অনেক চাষি আলোর মুখ দেখছেন। অনেকে বেশ সফল হয়ে অন্যের জন্য দৃষ্টান্তও হয়ে উঠেছেন। ঠিক তেমনি সাত বছর আগে থেকে প্রাথমিকভাবে পেঁপে চাষ শুরু করে সফল হয়েছেন আব্দুল মান্নান। আম ও বিভিন্ন শাকসবজি চাষের পাশাপাশি বিগত দুই বছর যাবত বাণিজ্যকভাবে পেঁপে চাষ করে লাভবান হচ্ছেন এ তরুণ উদ্যোক্তা। এখন বছরে লাখ টাকা আয় করছেন শুধু পেঁপে থেকেই। তার দেখাদেখি অনেক বেকার যুবক এখন পেঁপে চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

সম্প্রতি মীরসরাই উপজেলার সাহেরখালী পেঁপে চাষি মান্নানের বাগানে গিয়ে দেখা যায়, বাগান থেকে পাকা পেঁপে সংগ্রহ করে সবগুলো এক জায়গায় স্তূপ করছেন তিনি। এরপর সেলস সেন্টার ও বাজারে নিয়ে বিক্রি করবেন। সব গাছে ঝুলছে কাঁচাপাকা পেঁপে। ২৮ শতক জায়গার উপর শতাধিক রেড় লেড়ি পেঁপে গাছ লাগানো হয়েছে। চারপাঁচ ফুট উচ্চতার প্রতিটি গাছেই গুচ্ছাকারে ধরে আছে পেঁপে। যেদিকে চোখ যায় কেবলই সবুজহলুদ রঙের পেঁপে আর পেঁপে। দৈনিক মজুরিতে রাখা একজন শ্রমিক গাছগুলোর পরিচর্যা এবং দেখভাল করছেন।

জানা গেছে, ফল ও সবজি হিসেবে পেঁপে এখন বেশ জনপ্রিয়। পরিবারের চাহিদা মেটানোর জন্য একটা সময় বাড়ির আঙিনায় চাষ করা হতো ফলটি। এখন বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে পেঁপে। মাকড়সা ও ছত্রাক ছাড়া পেঁপে বাগানে তেমন কোনো সমস্যা দেখা যায় না। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে পুষ্টিমানসমৃদ্ধ পেঁপে চাষে ভাগ্য বদলে ফেলা যায়। পেঁপে চাষে অর্থনৈতিকভাবে সরকারি সহযোগিতা পেলে দেশের অনেক বেকার যুবকের সমস্যা সমাধান করা সম্ভব।

চাষি আব্দুল মান্নান বলেন, সাত বছর আগে কিছু পেঁপের চারা লাগাই। মূলত আমি আম বাগানি। দুই বছর আগে থেকে আম গাছের মাঝের খালি জায়গাগুলোতে দেড় শতাধিক রেড লেডি জাতের পেঁপে চারা লাগিয়েছি। কিছু চারা নষ্ট হয়ে গেলেও এখন সফলতা এসেছে। রেড় লেড়ি পেঁপে গাছের গোড়া থেকে দুই ফুট উপর থেকে ফলন আসতে শুরু করে। ঠিকমত পরিচর্যা করলে প্রতি গাছ থেকে ৩০ থেকে ৪০ কেজি ফলন পাওয়া যায়।

তিনি আরও বলেন, প্রতিকেজি পাকা পেঁপে ১০০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা করে বিক্রি হয়ে থাকে। প্রতিটি ফলের ওজন ১ কেজি থেকে ৩ কেজি পর্যন্ত। লাগানোর পর থেকে এই পর্যন্ত ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকার পাকা পেঁপে বিক্রি করা হয়েছে। আরও প্রায় ৬০ হাজার টাকার পেঁপে গাছে রয়েছে। এছাড়াও ১০১৫ হাজার টাকার কাঁচা পেঁপে বিক্রি করা হয়েছে। এখন ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাবকালে পেঁপের বেশ চাহিদা। অনেকে সেলস সেন্টার থেকে বাগানে এসে কিনে নিয়ে যায়। আবার অনেকে শহর থেকে অগ্রীম অর্ডার করে থাকে। সব মিলিয়ে বছরে লাখ টাকা অনায়াসেই আয় হচ্ছে চাষি মান্নানের।

এই বিষয়ে মীরসরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, আব্দুল মান্নান উদ্যমী কৃষক। উনার খামারে শুধু পেঁপে নয়, বিভিন্ন জাতের আম, ধান ও শাকসবজি আবাদ করা হয়। এবার পেঁপের ভালো ফল হয়েছে। তার দেখাদেখি অনেক বেকার যুবক পেঁপে চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধখালেদা জিয়াকে সিসিইউ থেকে কেবিনে স্থানান্তর
পরবর্তী নিবন্ধডেঙ্গুতে ৪ মৃত্যু, নতুন আক্রান্ত ২১৫৩ জন