ভূজপুরে গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যায় ৬ দিন পর মামলা

ফটিকছড়ি প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ at ৮:৫৬ অপরাহ্ণ

ভূজপুরে নাহিদা আক্তার ঋতিকা (১৮) নামে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হক-এর আদালতে মামলাটি দায়ের করেন নিহতের মা জেসমিন আক্তার। আদালত শুনানি শেষে মামলাটি আমলে নিয়ে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে ভূজপুর থানায় কোনো মামলা বা জিডি হয়েছে কি না, পুলিশ এ বিষয়ে কী ব্যবস্থা নিয়েছে সেই ব্যাপারে আগামী সাত কার্য দিবসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে।

বাদীপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট ইউছুফ আলম মাসুদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মামলায় ৫ জনকে আসামী করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

জানা গেছে, গত ১৪ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে দাঁতমারার হোসইন্যারখীল গ্রামে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত নাহিদার পিতার বাড়ি ফেনীর ছাগলনাইয়া থানার দক্ষিণ বল্লবপুর গ্রামে। নাহিদার স্বামী মিজানুর রহমান বাবলু মালয়েশিয়া প্রবাসী। দক্ষিণ বল্লবপুর মান কাজির বাড়ির শাহ আলমের মেয়ে নাহিদা তিন বোন এক ভাইয়ের মধ্যে দ্বিতীয়।

নাহিদার মা জেসমিন আক্তার জানান, দুই বছর আগে প্রবাসী মিজানুর রহমানের সাথে নাহিদার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন নানা অজুহাতে নাহিদাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত। এ নিয়ে কয়েক দফা সালিশী বৈঠকও হয়। পরে নাহিদার স্বামী নাহিদাকে দাঁতমারার হোসইন্যারখীল গ্রামে নিয়ে আসেন। সেখানে মিজানের ভগ্নিপতি চা দোকানদার সামশুর তত্বাবধানে সিঙ্গাপুরী নামে এক লোকের বাড়িতে ভাড়া বাসা নিয়ে দেন। সেখানে মুসাইদা জান্নাত মুশকান নামের ৭ মাস বয়সী এক কন্যা সন্তান নিয়ে নাহিদা বসবাস করতেন।

তিনি আরো জানান, গত বৃহস্পতিবার সকালে নাহিদার সাথে তারা ভিডিও কলে কথা বলেন কিন্তু বিকাল ৩টার পর থেকে নাহিদার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর আর কোনো যোগাযোগ করতে পারেননি তারা। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে নাহিদার স্বামী মিজানের চাচাত ভাই জুয়েল ফোন করে নাহিদার বাবাকে জানান নাহিদা অসুস্থ। জুয়েল তাদেরকে ছাগলনাইয়া হাসপাতালে যেতে বলেন। ফোন পেয়ে নাহিদার মা ও বাবা ছাগলনাইয়া উপজেলা হাসপাতালে গিয়ে নাহিদার মরদেহ দেখতে পান। এরপর ছাগলনাইয়া থানা পুলিশের সহায়তায় নাহিদার মরদেহ ফেনী সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। শনিবার ময়নাতদন্ত শেষে নাহিদার মরদেহ তার বাবার বাড়িতে দাফন করা হয়।

এদিকে, সুরতহাল রিপোর্টে নাহিদার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে নাহিদার ৭ মাসের শিশু কন্যার কোনো হদিস পাচ্ছে না নাহিদার পরিবার। মুসকান নামের এ শিশু কন্যা বেঁচে আছে কি না তাও তারা নিশ্চিত নন।

ঘটনার পর মৃত নাহিদার স্বামীর বোন কাজলের স্বামী সামশু ও তার পরিবারের সবাই পলাতক রয়েছে বলে জানান বাদীর আইনজীবি এডভোকেট ইউছুফ আলম মাসুদ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধফের বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু বাঁশখালীর এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টে
পরবর্তী নিবন্ধঅক্টোবরে ইলিশ ধরা বন্ধ ২২ দিন