স্মরণ : সমাজমনস্ক কবি আনন্দমোহন রক্ষিত

নিজামুল ইসলাম সরফী | মঙ্গলবার , ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ at ৬:১৪ পূর্বাহ্ণ

আনন্দমোহন রক্ষিতকে চিনি ৯০ দশক থেকে। আমার পাশের গ্রাম পদুয়ার সুখবিলাসের সন্তান। তিনি সত্তর দশকের জনপ্রিয় কবি। চট্টগ্রামের শিল্পসাহিত্য ও সংস্কৃতি অঙ্গনের তিনি সদা হাস্যেজ্জ্বল প্রিয় মুখ। অত্যন্ত ভদ্র, বিনয়ী, নম্র, সহজ সরল, সাদা মনের মানুষ ছিলেন আনন্দমোহন রক্ষিত।

গত ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ অপরাহ্নে আনন্দ দার আকস্মিক প্রয়াণের সংবাদটি পেয়ে খুবই মর্মাহত হই। পুরো চট্টগ্রামের সৃজন মনন জগতের মানুষদের কাছে তাঁর এই অকস্মাৎ অকাল প্রয়াণ ও চিরবিদায়ের শোকে সকলকে শোকাতুর ও বেদনা বিদুর করে তোলে।

দীর্ঘ সময় দেখা সাক্ষাৎ না হলেও পত্রপত্রিকায় সাময়িকীতে তাঁর কবিতা, ছড়াপ্রবন্ধ পড়তাম। জাতীয় দিবসগুলোতে দৈনিক পত্রিকার বিশেষ সংখ্যায় শীর্ষ কবিদের সাথে আনন্দমোহন রক্ষিতের কবিতাও স্থান পেত। তিনি ছিলেন একজন মানবতাবাদী দেশপ্রেমিক সমাজমনষ্ক শক্তিমান কবি।

শিক্ষকতা অঙ্গনেও তিনি সবার কাছে সমান পূজনীয় ছিলেন। রাউজান কলেজ থেকে উপাধ্যক্ষ হিসাবে অবসর নিলেও শিক্ষকদের দাবী দাওয়া নিয়ে বাকবিশিস আন্দোলনে আমৃত্যু রাজপথে সক্রিয় ছিলেন। কদম মোবারকের চট্টগ্রাম একাডেমির ফয়েজনুরনাহার মিলনায়তনে যে কোনও অনুষ্ঠানে যার সরব উপস্থিতি আমাদের প্রাণিত করত, তিনি আজ কেবলই স্মৃতি। সদাহাস্যোজ্জ্বল আনন্দমোহন রক্ষিত সহজ সরল প্রাণে ছোট বড় সবাইকে তাঁর স্নিগ্ধ আবেশে ভালোবাসায় জড়িয়ে রাখতেন। সবার শ্রদ্ধার অনুরাগের স্মৃতি হয়ে তিনি সাহিত্য শিল্পের মানুষের মাঝে অমর অক্ষয় হয়ে থাকবেন।

মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সদা সক্রিয় ছিলেন লেখালেখিও ও সাহিত্য সেবায়। জীবনের শেষ লেখাটি লিখে গেছেন দৈনিক আজাদীতে প্রকাশিত (১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩) আবৃত্তি শিল্পী রবিন ঘোষকে নিয়ে। সেই স্মৃতিচারণে তিনি চৌরঙ্গী হোটেলের আড্ডা থেকে কিভাবে চৌরঙ্গী সংস্কৃতি মঞ্চ গঠন হয় তার স্মৃতিচারণ করেন। চট্টগ্রাম একাডেমি ডিসি হিলের শতায়ু অঙ্গন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর ৭৬, প্রবীণ নাগরিক ফোরাম, পরিবেশ ও মানবাধিকার আন্দোলনপ্রমা প্রভৃতি সামাজিক সাংস্কৃতিক আয়োজনে তার অনিবার্য উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত। তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ ঢালো বিশ ঢালো অমৃত (১৯৯৭) তুমিও ফেরালে চোখ (২০০১), মানুষের দ্রোহ মানুষ (২০০৬), অনুরাগে ভেজা চোখ (২০০৯)। দীর্ঘ বিরতির পর ২০২০ সালে প্রকাশিত হয় ‘চেরাগির অপূর্ব আলোয়’। এটি ছাড়া পূর্বে প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থগুলো বর্তমানে দুঃস্প্রাপ্য ও কোনো বই বিপণীতে পাওয়া যাচ্ছে না তাঁর সুহৃদমহল চায়লে, ‘আনন্দমোহন রক্ষিত কাব্যসমগ্র’ প্রকাশ করে সবকটি রচনাকে একইসূত্রে গ্রন্থিত করে এই জনপ্রিয় কবিকে সাহিত্য পাঠকের কাছে জাগরুক করে রাখতে পারেন। মৃত্যুর পূর্বে সুইডেন প্রবাসী ছেলের কাছে বেড়াতে গিয়ে তিনি যে আনন্দ উচ্ছ্বাস দেখিয়েছেন বোধ হয় তিনি চলে যাবেন বলেই আমাদের বুঝিয়ে দিয়েছেন। আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখে আনন্দ দা বেঁচে থাকলে আমরা তার ৭৫তম জন্মদিন পালন করতাম।

আনন্দমোহন রক্ষিত ছিলেন সত্তর দশকের আলোচিত ও সমকালের সমাজ সচেতন কবি। ১৯৫০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উত্তর পদুয়ার সুখবিলাস গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন অধ্যাপক আনন্দমোহন রক্ষিত।

কবি আনন্দমোহন রক্ষিতের কবিতায় আমরা পাই দেশপ্রেম, মুক্তিযুদ্ধ, বাঙালির বীরত্বগাথা। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গণহত্যা, অত্যাচার, নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আর ঘৃণা এবং বাঙালির অর্জন নিয়ে বহু সাহিত্য রচিত হয়েছে। আনন্দমোহন রক্ষিত সেই অনেক গুণী লেখকের একজন। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক তাঁর কিছু কিছু কবিতা এক কথায় অনন্য। বলা যায় পাঠকের কাছে সমান অনুপ্রেরণাদয়ী।

তাঁর কবিতার মূল প্রতিপাদ্য বিষয় মুক্তিযুদ্ধ, দেশাত্মবোধ, প্রকৃতির প্রতি গভীর অনুরাগ ও আন্তর্জাতিক ঘটনাপ্রবাহ। তাঁর কবিতার সহজবোধ্যতা পাঠকপ্রিয়তা বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়েছে। মানুষের প্রতি ভালোবাসা ও মানবিক উপলব্ধিজাত অনুপ্রেরণার সাথে দুঃখবোধ ও বেদনাসঞ্জাত অভিজ্ঞতা তাঁর কবিতায় আশ্রয়লাভ করেছে। মুক্তিযুদ্ধ ও দেশাত্মবোধের চেতনা তাঁকে যেভাবে আলোড়িত করে আন্তর্জাতিক দুঃখজনক ঘটনাপ্রবাহও সমভাবে তাঁকে ব্যথিত করে, অনুতাপে দগ্ধ করে। তাই তিনি যেমন লেখেন ফিলিস্তিনি যুবক যোদ্ধার প্রতি ইসরায়েলি নৃশংসতার কথা, তেমনিভাবে দেশীয় রাজনৈতিক ও সাম্প্রদায়িক সংঘাতের বিরুদ্ধেও সমভাবে সোচ্চার হন। আনন্দউচ্ছ্বাস যেমন তাঁর কবিতায় দেখতে পাওয়া যায়, তেমনি সাম্প্রতিক অস্থিরতাবিমর্ষতা তাঁর কাব্যভাবনায় বড়ো স্থান দখল করে রেখেছে।

২০২০ সালে একুশের বইমেলায় আনন্দমোহন রক্ষিতের ‘চেরাগির অপূর্ব আলোয়’ প্রকাশিত ৪০ টি কবিতায় ফুটে ওঠেছে তাঁর দেশপ্রেম, মুক্তিযুদ্বের আবেগ, সমাজের বৈষম্য, প্রকৃতি আর বন্ধুবাৎসল্যতা। সেখানে স্থান পেয়েছে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কবিতা ‘‘সিঁড়িতে পিতার লাশ’, ‘নতজানু সারিবদ্ধ বন্দুক, রাইফেল, বেয়নেট নিরুত্তাপ শুয়ে আছে পুরো ক্যান্টনমেন্ট জুড়ে। ওগুলো ব্যবহারের কোন সৈনিক নেই, সকলি অথর্ব নপুংসক, বেঈমান……’’। প্রফেসর রণজিৎ কুমার চক্রবর্তীর তিরোধানে তিনি লিখেন সশ্রদ্ধ শোকাঞ্জলি। ড. জিনবোধি ভিক্ষুর মমতাময়ী মাতৃদেবীর স্মরণে লিখেন-‘পূণ্যময়ী জননী স্নেহলতা বড়ুয়া। সাম্যতন্ত্র কবিতায় লিখেছেনসুদূর দিগন্তে বসে মিলাবে হিসেব কতখানি শোধ হলো জীবনের ঋণ। সিডর নিয়ে লিখেছেন ‘দুবলার চরে থেমে গেছে জীবন’। আমাদের শিক্ষকঅকাল প্রয়াত বাচিকশিল্পী সুপ্রিয় রণজিৎ রক্ষিত কে নিয়ে তিনি যখন লিখেন– ‘রণজিৎ দা, আবার যদি জন্ম নাও, ফিরে এসো এই বাংলার শীতল ছায়ায়, শ্যামল ভূমিতে, এই চাঁটগায়আমরা বসে আছি তোমার অনন্ত অপেক্ষায়—-।’ তখন আমাদের বুকের মাঝে বিলাপের সুর ধ্বণিত হ্‌য় প্রিয় মানুষটির জন্য। আরেক আবৃত্তিকার কবি পঞ্চানন চৌধুরী’র স্মৃতিতে লিখেন-‘সর্ষে ফুলের মতো সারা গায়ে হলুদ জড়িয়ে ঘুরে বেড়াতো সাব এরিয়া, দেওয়ানবাজার, আন্দরকিল্লা, চেরাগি পাহাড়। উন্মাতাল সন্ব্যায় তুমি আর আসিবে না ফিরে’। কবি অরুন সেন এর প্রয়াণে শোকাতুর আনন্দমোহন রক্ষিত লিখেন-‘তোমার পাণ্ডুলিপি আশ্রয় খোঁজে জনজীবনের ভীড়ে। শোকার্ত মানুষ আজাদী চত্বর ছেড়ে চলে যায়। চেরাগির অপূর্ব আলোয়কবিতায় তিনি চমৎকারভাবে লিখেন– ‘ইতিহাস বলে, সেই থেকে নাম হলো চাটি গ্রাম না চট্টগ্রাম, এখনো সে জেগে আছে মানুষের কোলাহলে না শহর না গ্রাম, ধীরে ধীরে চেরাগির মোড় অজস্র মানুষের মুখে মুখে অক্ষয় বাণীরূপে মূখরিত হয় দ্ব্‌িধাহীন আবেগের বশে। অসংখ্য লেখকশিল্পী আর সাময়িকী দৈনিকের ভীড়ে শাহবাগআজিজ সুপার খ্যাতি পেয়ে যায় চেরাগির মোড়। তরুণবৃদ্ধযুবা অগণিত জীবনপ্রত্যাশী মানুষের আগমনে চেরাগি পাহাড় মোড় আলোড়িত করে সমন্ব্বিত সুরে।’

বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত সাহিত্যিকসাংবাদিক রাশেদ রউফ তাঁর মূল্যায়ন করতে গিয়ে লিখেন-‘আনন্দ মোহন রক্ষিত সমকালের সমাজ সচেতন কবি। তার চারপাশের অভিজ্ঞতা, নাগরিক জীবনের সুখদুঃখ, হাসিকান্না, রোমাণ্টিকতা, প্রেম, নৈসর্গিকতা, শাসনশোষণ আর শোষকগোষ্ঠীর প্রতি ঘৃণা ও তীব্র ক্ষোভ এসব নিয়েই তিনি লিখেছেন প্রচুর কবিতা। তাঁর কবিতায় আমরা প্রত্যক্ষ করি প্রকৃতির প্রতি গভীর অনুরাগ ও আন্তর্জাতিক ঘটনাপ্রবাহ। সমালোচকরা মনে করেন, তাঁর কবিতার সহজবোধ্যতাই পাঠকপ্রিয়তা বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়েছে।’

দেশের প্রবীণতম কবিদের অন্যতম অধ্যাপক আনন্দমোহন রক্ষিত। পিতা কবিয়াল ফণীন্দ্র লাল রক্ষিত ও মাতা চারুবালা দেবীর পাঁচ সন্তানের মধ্যে তিনি তৃতীয়। বড় ভাই গৌরাঙ্গ মোহন রক্ষিতের আগ্রহ, উৎসাহ ও আর্থিক সহযোগিতায় তিনি উত্তর পদুয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৬৭ সালে মাধ্যমিক, চট্টগ্রাম সরকারি ট্রেনিং কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক, সরকারি কলেজ অব এডুকেশনস’ থেকে বি,, ইন এডুকেশন ডিগ্রি এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে এম,, ডিগ্রি অর্জন করেন। তাঁর লেখালেখি শুরু হয় ষাট দশকের শেষ দিকে। তাঁর প্রথম লেখা ‘আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা ও অনুন্নত সিলেবাস প্রথা’ প্রকাশিত হয় ১৯৬৯ সালে দৈনিক আজাদীতে। কবি শামসুর রাহমান ও সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় সম্পাদিত ‘দুই বাংলার ভালোবাসার কবিতা’, কবি শ্যামল কান্তি দাশ ও বিমল গুহ সম্পাদিত ‘হাজার কবির হাজার কবিতা’সহ অনেক সংকলনে তাঁর কবিতা স্থান পেয়েছে। এছাড়াও শোণিত গালিচা পাতা জনপদ (১৯৭৪) এবং নবান্ন (২০১২) তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়।

পেশাগত জীবনে কবি অধ্যাপক আনন্দমোহন রক্ষিত ছিলেন একজন বড় মাপের শিক্ষক ও শিক্ষা প্রশাসক। রাউজান ডিগ্রী কলেজ থেকে ২০১১ সালে উপাধ্যক্ষ হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। মাঝে কিছু সময় তিনি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে ও দায়িত্ব পালন করেন।

কবি আনন্দমোহন রক্ষিত লেখালেখির স্বীকৃতিস্বরূপ বেশ কিছু সম্মাননাও পেয়েছেন। ১৯৭৭ সালে কর্ণফুলি সাহিত্য পুরস্কার, ২০০৭ সালে জগৎপুর আশ্রম চট্টগ্রাম থেকে শ্রদ্ধা ও স্মৃতি স্মারক, ২০০৯ সালে কবিয়াল ফণী বড়ুয়া স্মৃতিপদক, ২০১৩ সালে অবসর সাহিত্য সম্মাননা পদক এবং ২০১৯ সালে কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আবৃত্তি সংগঠন ‘শৃন্বন্তু’ কর্তৃক আয়োজিত আন্তজার্তিক কবিতা সম্মেলনে সম্মাননা স্মারক লাভ করেন। এছাড়াও কবি আনন্দমোহন রক্ষিত বাংলা একাডেমি, চট্টগ্রাম একাডেমিসহ বিভিন্ন সাহিত্যসংস্কৃতি, সামাজিক ও সেবামূলক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থেকে সাহিত্য সেবায় নিরলস ভূমিকা রেখেছেন।

আমাদের সকলের প্রিয় অগ্রজ কবি, সহজাতশান্তিপ্রিয় সাদা মনের মানুষ অধ্যাপক আনন্দ মোহন রক্ষিত পরপারে শান্তিতে থাকুন। বৌদি লাকি দত্ত রক্ষিত, ছেলে শুভ রক্ষিত মেয়ে শুভেচ্ছা রক্ষিতসহ পরিবারের অন্যান্য শোকাহত সদস্যদের সমবেদনা জানাচ্ছি। আনন্দ দার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে তাঁরই কবিতার সূরে বলতে চাই– ‘প্রিয় আনন্দ দা আবার যদি জন্ম নাও, তাহলে ফিরে এসো এই বাংলার শীতল ছায়ায়, শ্যামল ভূমিতে এই চাটগাঁয় একাডেমির উম্মাতাল সন্ধ্যায়। আমরা বসে আছি তোমার অনন্ত অপেক্ষায়। যদি ও জানি চৌরঙ্গী, আন্দরকিল্লা, সাবএরিয়া, দেওয়ানবাজার, মোমিন রোড, চেরাগী পাহাড় কোথাও তুমি আর আসবে না ফিরে। পরিশেষে আনন্দমোহন রক্ষিত’দার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করছি।

লেখক: প্রাবন্ধিক, সংগঠক, আয়কর পেশাজীবী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশিক্ষা খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে
পরবর্তী নিবন্ধরাজস্থলীতে বাড়ির ২শ গজ দূরে কৃষকের লাশ