শঙ্কা উড়িয়ে রাঙ্গুনিয়ায় শতভাগ আমন আবাদ

রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি | শনিবার , ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ at ৬:১৫ পূর্বাহ্ণ

বর্ষায় অতি বৃষ্টিতে আকস্মিক বন্যায় চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলার মতো রাঙ্গুনিয়ার কৃষি মাঠও প্লাবিত হয়। টানা ১২ দিনের বন্যায় রোপা আমন এবং বীজতলা নষ্ট হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। তবে সব শঙ্কা উড়িয়ে উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ আমন আবাদ সম্পন্ন হয়েছে। ভালো ফলনের মাধ্যমে ক্ষতি পুষিয়ে লাভের মুখ দেখতে পারবেন বলে আশাবাদী কৃষকরা।

রাঙ্গুনিয়া উপজেলা কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি আমন মৌসুমে রাঙ্গুনিয়ার ১৫ হাজার ৪৪৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিলো। বন্যার কারণে রোপা আমন এবং বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কৃষকদের উৎসাহিত করে নতুনভাবে বীজতলা তৈরি করা হয় এবং পানি নেমে যাওয়ার পর পুরোদমে কাজ করে ইতোমধ্যেই লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ চাষাবাদ সম্পন্ন হয়েছে।

সরেজমিনে চট্টগ্রামের শস্যভাণ্ডার খ্যাত গুমাইবিলে গিয়ে দেখা যায়, বিলের বিস্তৃর্ণ কৃষি মাঠ সবুজ আকার ধারণ করেছে। যতদূর চোখ যায় শুধু সবুজ আর সবুজের সমারোহ। অথচ মাসখানেক আগেও এই কৃষি মাঠঘিরে শঙ্কা ছিলো, কৃষকদের মাঝে ছিলো কষ্টের আবাদ নষ্ট হওয়ার হাহাকার। বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে শতভাগ চাষাবাদ সম্পন্ন হওয়ায় এখন কৃষকরা ভাল ফলনে আশার আলো দেখছেন। ব্রিধান৫১ ও ৫২ জাত বন্যার পানিতে ১২ দিন প্লাবিত হলেও ক্ষতি হয়নি। এই চাষাবাদ ইতোমধ্যেই বেশ পরিপুষ্ট হয়েছে। আবাদকৃত আমন চারা এখন কুশি অবস্থায় রয়েছে। আগামী অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ নাগাদ ফলন আসবে এবং নভেম্বরের দিকে কাটার উপযুক্ত হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

গুমাইবিলে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা উত্তম কুমার জানান, সময়মতো বৃষ্টির দেখা না মেলায় অনেক কৃষক সেচ পাম্প দিয়ে আমন চারা লাগিয়েছিলেন। এরপর বন্যা শুরু হলে অনেক কৃষক ক্ষতির মুখে পড়েন।তবে বন্যা চলাকালীন কৃষকদের দিয়ে আবারও বীজতলা তৈরি করিয়েছি। এতে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর চারা পাওয়ার ক্ষেত্রে সংকট হয়নি। দেশের বৃহত্তর এই গুমাইবিলে এবার ৩৫০০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছে।

গুমাইবিলের কৃষক মো. রেজাউল করিম বলেন, এবার আমি ৮ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করেছি। তারমধ্যে চার হেক্টর জমি পুরোটাই নষ্ট হয়ে গেছে। এখন ঋণ নিয়ে আবারও চারা লাগিয়েছি। যদি সরকারি কোনো আর্থিক সহযোগিতা পেতাম আমাদের জন্য অনেক উপকার হত। মো. মোকাররম নামে অন্য একজন কৃষক বলেন, প্রথমদিকে বৃষ্টি না হওয়ায় সেচ দিয়ে আবাদ করতে হয়েছে। আবার বৃষ্টি শুরু হলে অতিরিক্ত শ্রমিক লাগিয়ে কাজ করিয়েছি। এরপর টানা বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় ভেসে যায় কৃষকের স্বপ্ন। বন্যার পানি নামার পর আবারও চাষাবাদ করা হয় এখন ভাল ফলন হলে কৃষকরা অন্তত তার ক্ষতি পোষাতে পারবেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস বলেন, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য কাজ শুরু করে কৃষি বিভাগ। অল্প সময়ে উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ আমন আবাদ সম্পন্ন হয়েছে। আমরা আশা করছি কৃষকরা ভাল ফলন পাবে এবং তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধটিকটককে চার হাজার কোটি টাকা জরিমানা
পরবর্তী নিবন্ধএলিয়েন আছে,নাকি নেই?