বেঁধে দেওয়া দরে আলু বিক্রি হচ্ছে না

জাহেদুল কবির | শনিবার , ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ at ৬:০২ পূর্বাহ্ণ

দেশের বাজারে অনেকদিন ধরে আলুর বাজার বাড়তি। গত কয়েক বছর ধরে বাজারে একমাত্র আলুর দামই সহনশীল ছিল। এক সময় খুচরা বাজারে ২০ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে স্থিতিশীল থাকতো আলুর দাম। তবে সরবরাহ সংকটের অজুহাতে পাইকারিতে দাম বাড়াতে থাকেন ব্যবসায়ীরা। এর প্রভাবে খুচরা বাজারে প্রথমবারের মতো আলুর দাম কেজি প্রতি ৫০ টাকা ছাড়িয়ে যায়। আলুর বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার খুচরা পর্যায়ে কেজি প্রতি দাম ৩৫৩৬ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকার খুচরা পর্যায়ে যে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে, সেই দামে চট্টগ্রামের পাইকারি বাজারেও আলু বিক্রি হচ্ছে না। চট্টগ্রামের প্রধান পাইকারি বাজার চাক্তাইখাতুনগঞ্জ, রিয়াজুদ্দিন বাজার এবং পাহাড়তলী বাজারে আলু আসে মুন্সিগঞ্জ থেকে। বর্তমানে মুন্সিগঞ্জের হিমাগারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৫৩৬ টাকায়। চট্টগ্রামে বাজারে আসতে প্রতি কেজিতে খরচ পড়ছে আরো ১ টাকা। সে হিসেবে এখন পাইকারিতে বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৮৩৯ টাকায়। মুন্সিগঞ্জের হিমাগার থেকে আসা আলুর দাম না কমলে খুচরা বাজারে দাম কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। ভোক্তারা বলছেন, বর্তমান বাজারে অন্যান্য সবজির দাম বৃদ্ধির কারণে সাধারণ মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোতে আলুর চাহিদা বেড়ে যায়। চাহিদা বাড়ার কারণে হিমাগার ও মজুতদাররা পরিকল্পিতভাবে আলুর দাম বৃদ্ধি করছেন।

নগরীর চাক্তাই খাতুনগঞ্জের কয়েকজন আড়তদার জানান, অবস্থা বুঝে কিছু কোল্ড স্টোরেজ (হিমাগার) মালিক কম দামে আলু কিনে মজুদ করে রাখেন। সরবরাহ সংকট তৈরি করে পরিকল্পিতভাবে দাম বৃদ্ধি করে যাচ্ছেন। আড়তদারদের বেশি মুনাফা করার সুযোগ নেই। কারণ আলু বেশি দিন গুদামজাত করে রাখা যায় না। তার উপর এখন আবহাওয়া খুব উত্তপ্ত।

চাক্তাই আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম দৈনিক আজাদীকে বলেন, সরকার আলুর বাজার নিয়ন্ত্রণে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে, এটি নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় উদ্যোগ। তবে খুচরা বাজারে সরকার নির্ধারিত দামে আলু বিক্রি করতে কিছুটা সময় লাগবে। বিশেষ করে মুন্সিগঞ্জের হিমাগারে আলুর দাম কমাতে হবে। সেখানে যদি ৩০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি হয়, তখন চট্টগ্রামের পাইকারি বাজারে আসতে আরো ১২ টাকা খরচ পড়বে। পাইকারিতে বাজারে যদি আলুর দাম ৩৩ টাকা হয়, তবে খুচরা দোকানিরা ৩৫৩৬ টাকায় আলু বিক্রি করতে পারবেন। কারণ কোনো ব্যবসায়ী লোকসান দিয়ে তো আর ব্যবসা করবেন না।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এসএম নাজের হোসেন দৈনিক আজাদীকে বলেন, বাজারে কোনো পণ্যের দামই নিয়ন্ত্রণে নাই। ব্যবসায়ীরা একেক সময় একেক পণ্য নিয়ে কারসাজি করেন। এখন শুরু হয়েছে, আলু নিয়ে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধডেঙ্গুতে দেশে ১২ জনের মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধমুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ জনগণই বাংলাদেশকে এগিয়ে নেবে : প্রধানমন্ত্রী