ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়ক পারাপার, ফকিরহাটে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের দাবি

২ বছরে শিক্ষার্থীসহ ৭ পথচারী নিহত

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ at ৭:০০ পূর্বাহ্ণ

সীতাকুণ্ড পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের প্রায় ২ হাজার শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ প্রতিদিন মহাসড়ক পার হচ্ছেন ঝুঁকি নিয়ে। প্রায় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। সড়কে জেব্রাক্রসিং থাকলেও চালকদের বেপরোয়া গতি কেড়ে নিচ্ছে জীবন। গত দুই বছরে মহাসড়ক পারাপার হতে গিয়ে দুই শিক্ষার্থীসহ ৭ পথচারী নিহত হয়েছেন। তাই এ এলাকায় একটি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের দাবি তুলেছেন স্থানীয়রা।

সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, ৬ নং ওয়ার্ডের সাদেক মাস্তান (রা.) উচ্চ বিদ্যালয়, সাদেক মাস্তান (রা.) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সাদেক মাস্তান (রা.) কিন্ডারগার্টেন স্কুল ও বাইতুল মামুর ইসলামি নূরানী মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ রাস্তা পরাপার হন অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে। তাছাড়া বিদ্যালয়গুলোর বিপরীতে রয়েছে মডেল মসজিদ। স্কুলের শিক্ষার্থী ও সাধারণ মুসল্লিদের মহাসড়ক পার হয়ে মসজিদে যেতে হয় ঝুঁকি নিয়ে। বিদ্যালয় ছুটির পর একজন দপ্তরি সড়ক পার হতে শিক্ষার্থীদের সহায়তা করলেও তা পর্যাপ্ত নয়, একটু অমনোযোগী বা অসতর্ক হলেই ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। জানা যায় এই এলাকায় সপ্তাহে দুইদিন স্থায়ী হাটও বসে। তখন হাটে আসা ক্রেতা বিক্রেতাদেরও মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে বিকিকিনি করতে হচ্ছে।

এই বিষয়ে স্কুলের দপ্তরি সাকিব হোসেন বলেন, স্কুল ছুটির পর আমি শিক্ষার্থীদের রাস্তা পার করে দেই কিন্তু অনেক সময় আমার পক্ষে তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীরা আসার সময় তো আর আমি একজন একজন করে পার করতে পারি না তাই সবসময় দুর্ঘটনার একটা ভীতি থেকে যায়।

সাদেক মাস্তান (রা.) উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ জাফর আহম্মদ বলেন, আমাদের প্রায় ৯শ শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশ রাস্তার পশ্চিম পাশে থেকে আসাযাওয়া করে। এদের নিরাপওার বিষয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। তাই এখানে একটি ফুটওভার ব্রিজ স্থাপন অতি জরুরি। ২০২১ সালে আসমা ও মোরশেদ নামের দুই শিক্ষার্থী এখানে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়। আরো অনেকে আহত হয়েছে। এত সর্তকতার মধ্যেও দুর্ঘটনা রোধ করা যাচ্ছে না।

বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. মছিউদ্‌দৌজা বলেন, নিরাপদ রাস্তা পারাপারে একটি ফুটওভার ব্রিজ খুব দরকার। রাস্তা পার হওয়ার ভয়ে অনেক শিক্ষার্থী স্কুলে আসতে চায় না। শিক্ষার্থীরা লাল পতাকা দেখিয়ে রাস্তা পারাপার করেন। এতে পোহাতে হয় সীমাহীন দুর্ভোগ। এমন দুর্ভোগ থেকে পরিত্রাণ চায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। অভিভাবক মো. সেলিম বলেন, প্রতিদিন বাচ্চাদের স্কুলে পাঠিয়ে আমরা অনেক দুচিন্তায় ভুগী। ছোট ছোট বাচ্চা, ঢাকাচট্টগ্রামের মতো মহাসড়ক পার হয়ে স্কুলে যাওয়াআসা খুবই অনিরাপদ।

সীতাকুণ্ড পৌরসভার ৬নং ওরার্ড কাউন্সিল দিদারুল আলম এ্যাপেলো বলেন, রাস্তার উত্তর পাশে চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও পশ্চিম পাশে মুরাদপুরের অসংখ্য জনসাধারণের পারাপার খুবই ঝুঁকিপূর্ণ, কিছুদিন পরপর দুর্ঘটনা ঘটে। ফুটওভার ব্রিজ আমাদের গণদাবি, জনপ্রতিনিধি হিসাবে ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে শীঘ্রই একটি ফুটওভার ব্রিজের দাবি জানাচ্ছি।

সড়ক ও জনপথ চট্টগ্রামের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (এসডিই) রোকন উদ্দীন খালেদ বলেন, সড়ক ও সেতু মন্ত্রীর বরাবর স্থানীয় সংসদ সদস্যের মাধ্যমে ডিও লেটার দিলে এক্ষেত্রে মন্ত্রী সরেজমিনে তদন্ত করার নির্দেশ দেন। তদন্তের ভিত্তিতে প্রয়োজন অনুসারে ব্রিজ নির্মাণ করা হয়। ইতোমধ্যে আমরা এমন আবেদনের প্রেক্ষিতে সীতাকুণ্ডের কয়েকটির বিদ্যালয়ের সামনে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের জন্য ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করেছি।

উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা কে এম রফিকুল ইসলাম বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে শিক্ষার্থীর সুবিধার্থে ফুটওভার ব্রিজ প্রয়োজন। তবে ব্রীজ স্থাপনের বিষয়টি সম্পূর্ণ সড়ক ও জনপথ বিভাগের। এখানে উপজেলা প্রশাসনের কিছু করার নেই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধইসি-সুধীজন বৈঠক, গুরুত্ব পেল অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন
পরবর্তী নিবন্ধ২০৩০ সালে দেশে সচ্ছল জনগোষ্ঠীর সংখ্যা হবে সাড়ে ৩ কোটি : প্রধানমন্ত্রী