বার্ষিক উন্নয়ন বাজেটের দুটি খাতে দেশের ৩২৯ পৌরসভার জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের প্রথম কিস্তি ৬৭ কোটি ৪৯ লাখ ৯৭ হাজার টাকা ছাড় করেছে মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে চট্টগ্রামের ১৫ পৌরসভা পেয়েছে ২ কোটি ৮৫ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। ছাড়কৃত অর্থ পৌর এলাকায় উন্নয়নের পাশাপাশি মশক নিধন ও পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন কার্যক্রমে ব্যয় করা হবে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বার্ষিক উন্নয়ন বাজেটের দুটি খাতে দেশের পৌরসভাগুলোর জন্য চলতি ২০২৩–২০২৪ অর্থবছরে বরাদ্দ আছে ৪২০ কোটি টাকা। খাত দুটি হচ্ছে ডেঙ্গু মশক নিধন, পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতা ও প্রচার উপ–খাত এবং উন্নয়ন সহায়তা খাত। খাতগুলোর জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের বিপরীতে প্রথম কিস্তির অর্থ অবমুক্তকরণে সম্প্রতি স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ–সচিব ফারজানা মান্নান দাপ্তরিক পত্র দেন একই বিভাগের চিফ অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফিন্যান্স অফিসারকে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে চট্টগ্রামের পৌরসভাগুলোকে তিন শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে নয়টি পৌরসভা ‘ক’, চারটি পৌরসভা ‘খ’ এবং দুটি পৌরসভা ‘গ’ শ্রেণিভুক্ত। ‘ক’ শ্রেণির পৌসভাগুলো হচ্ছে হচ্ছে পটিয়া, বারইয়ারহাট, সীতাকুণ্ড, সাতকানিয়া, বাঁশখালী, চন্দনাইশ, হাটহাজারী, রাউজান ও মীরসরাই। ‘খ’ শ্রেণির পৌরসভাগুলো হচ্ছে রাঙ্গুনিয়া, সন্দ্বীপ, ফটিকছড়ি ও বোয়ালখালী। ‘গ’ শ্রেণির পৌরসভা দুটি হচ্ছে নাজিরহাট ও দোহাজারী।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট পৌরসভার মেয়র অথবা প্রশাসক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অথবা সচিব যৌথভাবে মঞ্জুরিকৃত অর্থের আয়ন ও ব্যয়ন কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন। ছাড়কৃত অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে সর্বশেষ সংশোধনীসহ পিপিআর–২০০৮ অনুসরণসহ যাবতীয় আর্থিক বিধি–বিধান যথাযথভাবে প্রতিপালন করতে হবে।
উন্নয়ন সহায়তা : বার্ষিক উন্নয়ন বাজেটে উন্নয়ন সহায়তা খাতে দেশের পৌরসভাগুলোর জন্য চলতি ২০২৩–২০২৪ অর্থবছরে বরাদ্দ আছে ৪০০ কোটি টাকা। যার ২৩৪ কোটি টাকা রক্ষিত আছে সাধারণ বা থোক উন্নয়ন উপ–খাতে। এর মধ্যে প্রথম কিস্তি বাবদ দেশের ৩২৯টি পৌরসভার অনুকূলে ৫৮ কোটি টাকা ৪৯ লাখ ৯৯ হাজার ৫০০ টাকা ছাড় করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। ছাড়কৃত অর্থের মধ্যে চট্টগ্রামের ১৫ পৌরসভা পেয়েছে ২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ৭৩ হাজার টাকা। এর মধ্যে পটিয়া, বারইয়ারহাট, সীতাকুণ্ড, ৯ম পৃষ্ঠার ৭ম কলাম
সাতকানিয়া, বাঁশখালী, চন্দনাইশ, হাটহাজারী, রাউজান ও মীরসরাই পৌরসভা ১৪ লাখ টাকা করে পেয়েছে ১ কোটি ৬২ লাখ টাকা। রাঙ্গুনিয়া, সন্দ্বীপ, ফটিকছড়ি ও বোয়ালখালী পৌরসভা ১৭ লাখ ১৫ হাজার টাকা করে ৬৮ লাখ টাকা ৬২ পেয়েছে। এছাড়া নাজিরহাট ও দোহাজারী পৌরসভা ১৬ লাখ ৬৫ হাজার ৫০০ টাকা করে ৩৩ লাখ ৩১ হাজার টাকা পেয়েছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব ফারজানা মান্নান জানান, পৌর এলাকায় স্যানিটেশন সুবিধা শতভাগ নিশ্চিতকরণের উদ্দেশ্যে বরাদ্দকৃত অর্থের সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ অর্থ স্যানিটেশন প্রকল্প বা স্ক্রিম বাস্তবায়নে ব্যয় করতে হবে। ছাড়কৃত অর্থ কোনো অবস্থাতেই পৌরসভার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ব্যতীত অন্য কোনো কাজে ব্যয় করা যাবে না। এমনকি বাংলাদেশ মিউনিসিপ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফান্ডের (বিএমডিএফ) ঋণের কিস্তিও এ অর্থ দিয়ে পরিশোধ করা যাবে না।
মশক নিধন : ডেঙ্গু মশক নিধন, পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতা ও প্রচার উপ–খাতে দেশের পৌরসভাগুলোর জন্য চলতি ২০২৩–২০২৪ অর্থবছরের উন্নয়ন বাজেটে ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ আছে। এর মধ্যে প্রথম কিস্তি বাবদ ৩২৯টি পৌরসভার অনুকুলে ৪ কোটি ৯৯ লাখ ৯৭ হাজার ৫০০ টাকা অবমুক্ত করা হয়।
ছাড়কৃত অর্থের মধ্যে চট্টগ্রামের ১৫ পৌরসভা পেয়েছে ২২ লাখ ১৬ হাজার ৫০০ টাকা। এর মধ্যে পটিয়া, বারইয়ারহাট, সীতাকুণ্ড, সাতকানিয়া, বাঁশখালী, চন্দনাইশ, হাটহাজারী, রাউজান ও মীরসরাই পৌরসভা ১ লাখ ৫৭ হাজার ৫০০ টাকা করে ১৪ লাখ ১৭ হাজার ৫০০ টাকা পেয়েছে। রাঙ্গুনিয়া, সন্দ্বীপ, ফটিকছড়ি ও বোয়ালখালী পৌরসভা ১ লাখ ৩৭ হাজার টাকা করে ৫ লাখ ৪৮ হাজার টাকা পেয়েছে। নাজিরহাট ও দোহাজারী পৌরসভা ১ লাখ ২৫ হাজার ৫০০ টাকা করে ২ লাখ ৫১ হাজার টাকা পেয়েছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব ফারজানা মান্নান জানান, পৌর এলাকা পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন, ডেঙ্গু মশক নিধন এবং এর বিস্তার রোধে প্রয়োজনীয় সরাঞ্জাম ক্রয় এবং জনগণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণ, মাইকিং, টিভি স্ক্রলে ও স্থানীয় ডিশ চ্যানেলে সচেতনতামূলক বিজ্ঞাপন প্রচার ব্যতীত অন্য কোনো কাজে মঞ্জুরিকৃত অর্থ ব্যয় করা যাবে না।