কক্সবাজার শহরের তারাবনিয়ার ছড়া এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে ফারজানা আকতার প্রীতি (২২) নামের এক নারী বিউটিশিয়ানের গলায় ফাঁস লাগানো মরদেহ উদ্ধার করেছে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত দশটার দিকে তারাবনিয়ার ছড়া মসজিদ রোডের একটি বাসা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
গত ২৯ আগস্ট কক্সবাজার শহরের বৈদ্যঘোনা থেকে তন্নী চৌধুরী (২১) নামের এক কলেজ ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের মাত্র ১১ দিনের মাথায় নববিবাহিত এক তরুণীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার হলো।
বিউটিশিয়ান ফারজানা আকতার প্রীতি কক্সবাজার পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের নুর পাড়ার ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীন জুনুু’র মেঝো মেয়ে এবং চট্টগ্রামের চুনতির বাসিন্দা ও শহরের পর্যটন এলাকার ঝিনুক ব্যবসায়ী মো. আজাদের স্ত্রী। প্রায় ৭ মাস আগে আজাদের সাথে প্রীতির বিয়ে হয়।
নিহত প্রীতি কক্সবাজার সিটি কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে অনার্স সম্পন্ন করেছেন। তিনি বাংলাদেশ-ভারত বিউটিফিকেশন প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছিলেন।
আজ শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) জুহর নামাজের পর শহরের নুরপাড়াস্থ উমিদিয়া মাদরাসা মাঠে ফারজানা আকতার প্রীতির নামাজে জানাজা অনুষ্ঠানের পর তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
প্রীতি’র পিতা জয়নাল আবেদীন জুনু বলেন, “আমার স্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। শনিবার সকাল দশটায় ঢাকায় ডাক্তারের এপয়েন্টমেন্ট থাকায় শুক্রবার রাত ১১টার গাড়িতে মেয়েকে নিয়ে ঢাকায় রওয়ানা হওয়ার কথা। প্রস্তুতি জানতে তাকে বারবার কল করেও না পেয়ে পরে জামাতা আজাদকে ফোন করি। এরপর আজাদ বাসার পৃথক বিউটিফিকেশন কক্ষে গিয়ে প্রীতিকে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় ঝুলতে দেখে।”
স্বামী মো. আজাদ বলেন, “আমার শ্বশুর ফোন করার পর দরজার ফাঁক দিয়ে গলায় কালো ওড়না পেঁচানো প্রীতি’র মরদেহ ঝুলে থাকতে দেখি। এরপর দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে সে বেঁচে আছে মনে করে দ্রুত সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রীতিকে ‘মৃত’ ঘোষণা করেন।”
তিনি বলেন, “আমাদের বিয়ের প্রায় ৭ মাস গত হয়েছে অথচ আমাদের মধ্যে একটিবারের জন্যও মনোমালিন্য হয়নি। তাই প্রীতি কেন এমন করলো তা বুঝতে পারছি না।”
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে বিষয়টি আত্মহত্যা বলে মনে হচ্ছে। তবে কী কারণে তরুণীটি আত্মহত্যা করেছে, তা জানা যায়নি।”
উল্লেখ্য, এর আগে গত ২৯ আগস্ট শহরের বৈদ্যঘোনা থেকে তন্নী চৌধুরী (২১) নামের এক কলেজ ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তন্নী চৌধুরী বৈদ্যঘোনা এলাকার প্রেস ব্যবসায়ী নেপাল চৌধুরী ও এনজিও কর্মী শোভা চৌধুরীর মেয়ে এবং কক্সবাজার সিটি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।
এর আগে গত জুলাই মাসের শুরুতে খুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্পে এক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী যুবক এবং গত ফেব্রুয়ারিতে ঝিলংজায় এক গৃহবধূ একই কায়দায় আত্মহত্যা করে।
এছাড়া, গত বছরের আগস্টে কক্সবাজার হোটেল-মোটেল জোনের আবাসিক হোটেলে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ৬ দিনে ৩ জনের আত্মহত্যার ঘটনা ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।