চতুর্থ শিল্পবিপ্লব ও বাংলাদেশের প্রস্তুতি

ড. মো. মোরশেদুল আলম | সোমবার , ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ at ১০:৩৩ পূর্বাহ্ণ

চতুর্থ শিল্পবিপ্লব বর্তমান সময়ে বহুল আলোচিত একটি বিষয়। এটি হচ্ছে আধুনিক স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রচলিত উৎপাদন এবং শিল্প ব্যবস্থার স্বয়ংক্রিয়করণের একটি চলমান প্রক্রিয়া। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবএর উৎপত্তি ২০১১ সালে জার্মান সরকারের একটি হাইটেক প্রকল্প থেকে। একে সর্বপ্রথম বৃহৎ পরিসরে উপস্থাপন করেন ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ক্লাউস শোইয়াব। তিনি ২০১৬ সালে তাঁর ‘ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভ্যুলেশন’ গ্রন্থে লিখেছেন, ‘আমরা চাই বা না চাই, এতদিন পর্যন্ত আমাদের জীবনধারা, কাজকর্ম, চিন্তাচেতনা যেভাবে চলছে সেটা বদলে যেতে শুরু করেছে। এখন আমরা এক প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। দ্বিতীয় ও তৃতীয় শিল্পবিপ্লবের ভিত্তির উপর শুরু হওয়া ডিজিটাল এ বিপ্লবের ফলে সবকিছুর পরিবর্তন হচ্ছে গাণিতিক হারে, যা আগে কখনো হয়নি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো বিশ্বের প্রতিটি দেশের প্রতিটি খাতে এ পরিবর্তন প্রভাব ফেলছে। যার ফলে পাল্টে যাচ্ছে উৎপাদন প্রক্রিয়া ও ব্যবস্থাপনা। এমনকি রাষ্ট্র চালানোর প্রক্রিয়া।’ তাঁর মতে, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো: সেলফঅপটিমাইজেশন, সেলফকনফিগারেশন, সেলফডায়াগনজ, কগনিশনের প্রবর্তন এবং ক্রমবর্ধমান জটিল কাজে কর্মরত কর্মীদের বুদ্ধিদীপ্ত সহায়তায় প্রয়োজনীয় স্বয়ংক্রিয়করণ প্রযুক্তির নবতর বিকাশ। ম্যাটেরিয়াল সায়েন্স, ডিজিটাল টেকনোলজি এবং জীববিজ্ঞানের প্রভূত উন্নয়ন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রধান চালিকাশক্তি। রোবোটিক্স, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, মেশিন লার্নিং, ইন্টারনেট অব থিংস, স্বচালিত গাড়ি, মোবাইল সুপার কম্পিউটিং, নিউরোসায়েন্সের অ্যাডভান্স গবেষণা আমাদের শিল্প উৎপাদন এবং মানুষ হিসেবে জীবনধারণের পদ্ধতিকেই আমূল পরিবর্তন করে দিচ্ছে। মূলত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মেশিন লানিং, রোবোটিক্স, অটোমেশন, ইন্টারনেট অব থিংস, ব্লকচেইন প্রযুক্তি, থ্রিডি প্রিন্টিং, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, বিগ ডেটা অ্যানালাইটিক, হরিজন্টাল ও ভার্টিক্যাল সিস্টেম ইন্টিগ্রেশন, জিন প্রযুক্তি ও প্রকৌশল ইত্যাদির সমন্বয়ে আজকের বিশ্বে যে দ্রুত পরিবর্তন আমরা লক্ষ্য করছি তাই হচ্ছে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব। এ বিপ্লবকে ডিজিটাল বিপ্লব কিংবা ইন্ডাস্ট্রি ৪.০ নামেও অভিহিত করা হয়। অন্যান্য শিল্পবিপ্লবের সঙ্গে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রধান পার্থক্য হচ্ছে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শিল্পবিপ্লব শুধু মানুষের শারীরিক পরিশ্রমকে যন্ত্র ও প্রযুক্তি সেবার মাধ্যমে দ্রুততর করেছে। কিন্তু চতুর্থ শিল্পবিপ্লব শুধু শারীরিক নয়, মানসিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক পরিশ্রমকে আরো বেশি গতিশীল ও নিখুঁত করে তুলেছে।

অদূর ভবিষ্যতে, আরো কয়েক শত কোটি মানুষ সংযুক্ত হয়ে যাবে ডিজিটাল নেটওয়ার্কে, সংগঠনগুলোর সক্ষমতা বাড়বে অনেকগুণ বেশি, একসাথে আরো অধিক রিসোর্স ম্যানেজ করতে পারবে। এমনকি পূর্বের শিল্প বিপ্লবগুলোতে ক্ষতিগস্ত পরিবেশ আবার পুনর্বহাল হবে। উৎপাদিত বস্তুগুলো দীর্ঘমেয়াদে টেকসই হবে, সেন্সরের মাধ্যমে মনিটরিং ও ম্যানেজমেন্ট করায় হিসেবের খাতায় ডেপ্রিসিয়েশন বা অবচয়ন শূন্যের কোঠায় নেমে আসবে। অন্যদিকে, সংগঠনগুলো পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়াতে অক্ষম হলে, নতুন বিপ্লবের সঠিক ফল আনয়নে প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারে সরকারগুলো ব্যর্থ হতে পারে। তখন নিরাপত্তাহীনতা সমস্যা দেখা দিবে। ধনীদরিদ্রের ব্যবধান বাড়বে, সমাজ বিভক্ত হয়ে যাবে। ইউকে ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিডব্লিউসিএর তথ্যমতে, ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী প্রায় ৮০ কোটি মানুষ তাদের বর্তমান চাকরি হারিয়ে ফেলতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের মোট চাকরিজীবীর মধ্যে ৩৮৪৭%, যুক্তরাজ্যে ৩০%, জাপানে ২১% এবং জার্মানির ৩৫% লোকের চাকরি হারানোর প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবোটিঙ এবং স্মার্ট অটোমেশন নির্ভর চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে। শ্রমনির্ভর অর্থনীতির দেশগুলো সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়তে পারে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড যেহেতু শ্রমনির্ভর, এক্ষেত্রে দেশটির জনসংখ্যার একটি বড় অংশ চাকরি হারাতে পারে পোশাক শিল্পে (৬০%), প্রক্রিয়াজাত কৃষি পণ্য খাতে (৪০%), আসবাবপত্র শিল্পে (৫৫%), চামড়া ও জুতা শিল্পে (৩৫%) এবং পর্যটন ও সেবা শিল্পে (২০%) ইত্যাদি। ধারণা করা হচ্ছে, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের আগাম ফসল হিসেবে ২০২৫ সালের মধ্যে বিশ্বের ১০ শতাংশ মানুষের পরিধেয় বস্ত্র ও ১০ শতাংশ মানুষের চশমার সঙ্গে ইন্টারনেট সংযুক্ত থাকবে। মানুষের শরীরে স্থাপনযোগ্য মোবাইল ফোন ও ৯০ শতাংশ মানুষ স্মার্ট ফোন ব্যবহার করবে। আমেরিকায় ১০ শতাংশ গাড়ি হবে চালকবিহীন ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় হবে ৩০ শতাংশ করপোরেট অডিট। আমেরিকায় এসে যাবে রোবট ফার্মাসিস্ট। এই পরিবর্তনের ফলে বিশ্বব্যাপী অর্থনীতি, সমাজ, বাণিজ্য, কর্মসংস্থান ইত্যাদির ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করেন প্রযুক্তিবোদ্ধারা।

চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে মানুষ যে শুধু চাকরি হারাবে তা নয়, বরং নতুন করে ১০০ কোটি মানুষের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লব থেকে সুবিধা গ্রহণ করতে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের পরামর্শ হলো: প্রতিটি দেশের কর্মক্ষম জনবলকে সৃজনশীলতা, জটিল সমস্যা সমাধানে পারদর্শিতা, বিচারিক দৃষ্টিভঙ্গি, আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ, জনব্যবস্থাপনা, অন্তর্দৃষ্টি, অন্যদের সঙ্গে কাজের সমন্বয়, দরকষাকষি, সেবা প্রদানের মানসিকতা এবং চিন্তার সচ্ছতা বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লব কালে, উৎপাদন ব্যবস্থা হয়ে যাচ্ছে সম্পূর্ণ স্বাধীন, বেশিরভাগ প্রচলিত কাজগুলো নাই হয়ে যাচ্ছে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও মেশিন লার্নিং পূর্বের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে তাদের নিজেদের সিদ্ধান্ত দেওয়ার অপূর্ব ক্ষমতা তৈরি করছে। অনেক কাজ মানুষের ন্যূনতম সংস্পর্শ ছাড়াই করে ফেলছে। সফটওয়্যার আইকিউ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে, মানুষের ইনপুট কমে যাচ্ছে। প্রশাসন, আইন, চিকিৎসা, ড্রাইভিং, নির্মাণ শ্রমিক, এমনকি যুদ্ধের সৈনিকসহ প্রায় সকল ক্ষেত্রে ধীরে ধীরে মানুষের প্রয়োজনীয়তা কমে যাচ্ছে।

চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের দৃশ্যমান প্রধান সমস্যা হয়ে যাবে নির্বিচারে চাকরি হারানো। আগামী এক দশকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ শতাংশ মানুষের শ্রম বাদ দিয়ে যন্ত্রের মাধ্যমে অটোমেটেড হয়ে যেতে পারে। শুধু তাই নয়আমাদের কাজের ধরন, এমনকি বেঁচে থাকার ধরনটির পরিবর্তন হয়ে যাবে। সব ধরনের পেশাশিল্পব্যবসা ডারউনের ‘সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট’ তত্ত্বের মধ্যে পড়ে যাবে। এর মধ্যে যেগুলোর উদ্ভাবনী শক্তি বেশি থাকবে সেগুলোই শুধু টিকে যাবে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ, ইন্টারনেট ও অন্যান্য প্রযুক্তির মধ্যে অব্যাহত যোগাযোগ রক্ষা করতে হবে। প্রতিনিয়ত প্রযুক্তি যন্ত্রগুলো আপডেট করার পাশাপাশি প্রযুক্তির নিরাপত্তার ঝুঁকি আপডেটের মাঝে সমন্বয় সাধনের জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে। বাংলাদেশে এই বিপ্লবের সুযোগ গ্রহণ করতে হলে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি আইওটি, ব্লকচেইন ও রোবোটিক্স ইত্যাদির ব্যবহার করতে দ্রুত কৌশলগত পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সুযোগকে কাজে লাগাতে হলে আমাদের সুদক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টি করতে হবে। এজন্য শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যেই ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন। আর তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যমাত্রা হিেেসবে প্রণয়ন করেছেন ভিশন২০২১ এবং আরো উচ্চতর লক্ষ্যমাত্রা সম্বলিত ভিশন২০৪১। এই লক্ষ্যমাত্রায় ডিজিটাল বাংলাদেশের পরিবর্তিত উচ্চতর রূপ হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণকে। অক্সফোর্ড ইন্টারনেট ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, অনলাইন শ্রমশক্তির সবচেয়ে বড় সরবরাহকারী হচ্ছে ভারত; যাদের প্রায় ২৪ শতাংশ গ্লোবাল ফ্রিল্যান্সার ওয়ার্কার আছে। এর পরের অবস্থানটিই বাংলাদেশের, অনলাইন শ্রমশক্তিতে যাদের অবদান হচ্ছে ১৬ শতাংশ। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যাদের ফ্রিল্যান্সার হচ্ছে ১২ শতাংশ।

দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে এসব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের কাজ। ইগভর্নেন্স, বিজনেস, ব্যাংকিং, তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষা, তথ্যপ্রযুক্তি সেবা, ইন্টারনেট সেবা, ফোরজি প্রযুক্তি প্রভৃতি ক্ষেত্রে দেশে এক নিরব বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের সাফল্যকে অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থাই বিশ্বের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের এ সাফল্যকে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সম্ভাবনাময় নব অধ্যায়ের শুভ সূচনা বলছেন বিশেষজ্ঞরা। আইসিটি অবকাঠামো, দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার পাশাপাশি তারুণ্যের মেধা ও উদ্ভাবনী শক্তিতে কাজে লাগানোর জন্য সারাদেশে ৯২টি হাইটেক পার্ক, সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক ও আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন করা হচ্ছে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের বাস্তবতাকে বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষার্থীদের কর্মমুখী ও উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকার চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১টি এবং খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১টি ‘শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর’ স্থাপন করেছে। এছাড়াও চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে নেতৃত্বদানে সক্ষম করে তোলা এবং দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করার জন্য মাদারীপুরের শিবচরে ‘শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি’ নামে বিশেষায়িত ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। দেশের ৬৪ জেলায় স্থাপন করা হচ্ছে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার। এছাড়াও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আইওটি, রোবোটিঙ, সাইবার সিকিউরিটিসহ উচ্চ প্রযুক্তির ৩৩টি বিশেষায়িত ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নে সরকার ২০২১ সালে দেশে ৫জি ইন্টারনেট চালু এবং একই বছর হাওড়বিলচর ও পার্বত্য অঞ্চলে ক্যাবল বা স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক স্থাপন করেছে। ২০২৩ সালে সংযুক্ত হবে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল। মূলত চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের বিস্তার ঘটছে ইন্টারনেটের সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সংযোগের মাধ্যমে।

২০২১ সালের ১১ নভেম্বর ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অন ইনফরমেশন টেকনোলজির মিনিস্ট্রিয়াল কনফারেন্সে প্রদত্ত মূল বক্তব্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের পথে নেতৃত্ব দিতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের পথে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের সেই সক্ষমতা আছে।’ আগামীতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সেন্টার ফর ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভুলিউশন এবং গবেষণা ও উদ্ভাবন কেন্দ্র স্থাপন করা হবে; যেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, বিগ ডেটা আ্যানলাইটিক্স, ব্লকচেইন, রোবোটিক্স, ন্যানো টেকনোলজি, বায়োটেকনোলজি, মাইক্রোপ্রসেসরের ডিজাইনসহ অত্যাধুনিক প্রযুক্তি বিষয়ে গবেষণা ও উদ্ভাবন হবে। বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে বিশ্বের আধুনিক সব তথ্য প্রযুক্তির সঙ্গে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিতে যেভাবে প্রস্তুত হচ্ছে বাংলাদেশ তা চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে একটি সম্ভাবনাময় নেতৃত্বস্থানীয় অবস্থানেরই ইঙ্গিত দিচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘চতুর্থ শিল্পবিপ্লব পুরো পৃথিবীর উৎপাদন, বিপণন এবং উন্নয়নসকল ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন আনবে। আন্তর্জাতিক শ্রম বাজারে এর ব্যাপক ভূমিকা থাকবে। এ সকল বিষয় মাথায় রেখে আমাদের সরকার চতুর্থ শিল্পবিপ্লব নিয়ে একটি সুস্পষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে বাংলাদেশ যেন বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে পারে সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’

লেখক: শিক্ষক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসুফি সাধক সৈয়দ আহমদুল হক
পরবর্তী নিবন্ধশাহজালালে ৫০ কোটি টাকার সোনা চুরির ঘটনায় মামলা