হো চি মিন : ভিয়েতনাম মুক্তিসংগ্রামের নেতা

| রবিবার , ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ at ৬:০৫ পূর্বাহ্ণ

হো চি মিন(১৮৯০১৯৬৯)। ভিয়েতনামের স্বাধীনতা সংগ্রামের পুরোধা। একজন বিপ্লবী নেতা কমিউনিস্ট। তিনি ভিয়েতনামের গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী (১৯৪১৯৫৫) এবং রাষ্ট্রপতির (১৯৪৫১৯৬৯) পদে আসীন ছিলেন। হো চি মিন ১৮৯০ সালের ১৯ মে হোয়াং ট্রিল গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। হো চি মিন তার ছদ্মনাম। তাঁর জন্ম নাম ছিল নুয়েন সেন কুং। লেখাপড়ার হাতেখড়ি তাঁর বাবার কাছে। ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন খুব মেধাবী। কিন্তু লেখাপেড়ায় ছিলো না তার মন। তাঁর মন ছিলো অ্যাডভেঞ্চারে। ১৯১১ সালে তিনি পাড়ি জমান আমেরিকায়। জাহাজে একটি কুকুরের সাহায্যকারী হিসেবে চাকরি নেন। পরবর্তীতে তিনি পাচকের কাজ নেন। ১৯১৩ সালে হো ইংল্যান্ডে চলে আসেন। এসময় তিনি দীক্ষা নেন কমিউনিস্ট মতাদর্শের। নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন বিভিন্ন কমিউনিস্ট নেতাদের সাথে। হো গড়ে তোলেন ভিয়েত মিন মুক্তিবাহিনী। ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় তিনি আমৃত্যু ভিয়েত কংএর নেতৃত্ব দান করেন। তিনি ভিয়েতনামের ওয়ার্কার্স পার্টির চেয়ারম্যান এবং ফার্স্ট সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করেছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এ বাহিনী জাপান ও ফরাসী সেনাদলের বিরুদ্ধে লড়াই করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের পরাজয়ের পর হো ভিয়েতমানকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করেন এবং নিজে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৪১ সালের পরবর্তী সময়ে তার নেতৃত্বেই স্বাধীনতা সংগ্রাম বজায় থাকে, এবং ১৯৪৫ সালে কমিউনিস্ট শাসিত ভিয়েতনামের গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র সরকার প্রতিষ্ঠা হয়। ১৯৫৪ সালে ফ্রেঞ্চ ইউনিয়নকে দিয়েন বিয়েন ফু যুদ্ধে পরাস্ত করে ভিয়েতনামের গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র চূড়ান্ত জয় লাভ করে এবং ফরাসিরা সৈন্য নিয়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। তিনি ভিয়েতনাম যুদ্ধের (১৯৫৫ ১৯৭৫) সময় ভিয়েতনামের পিপলস আর্মি এবং ভিয়েত কংএর গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব ছিলেন। ভিয়েতনামের গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভিয়েতনাম প্রজাতন্ত্রের (দক্ষিণ ভিয়েতনাম) বিপক্ষে বিজয়ী হয়েছিল এবং ১৯৭৬ সালে দক্ষিণ ভিয়েতনাম প্রজাতন্ত্রের সাথে পুনরায় একত্রিত হয়েছিল। দক্ষিণ ভিয়েতনামের পূর্বতন রাজধানী সাইগনের নাম পাল্টে হো চি মিন শহর রাখা হয় তার সম্মানার্থে। স্বাস্থ্য সমস্যাজনিত কারণে হো সরকারিভাবে ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করেছিলেন ১৯৬৫ সালে। ১৯৬৯ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধএআই প্রযুক্তির ইতিবাচক ব্যবহার চাই