ভারী বৃষ্টিতে বন্যার পানি ওঠানামার মধ্যে যখন কৃষকরা আমন চাষাবাদ ও পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তখন আউশ ধান কেটে ঘরে তুলছেন রাঙ্গুনিয়ার প্রত্যন্ত এলাকার কৃষকেরা। বৃষ্টির কারণে শেষ মুহূর্তে ধানক্ষেত নষ্টের আশংকার মাঝেও আউশ ধান ঘরে তুলতে পেরে কৃষকের মুখে ফুটেছে স্বস্তির হাসি। তবে কিছু সময় বৃষ্টি আবার কিছু সময় রোদ এবং বৃষ্টির কারণে উঠান ভেজা থাকায় ধান শুকাতে বেশ বেগ হতে হচ্ছে কৃষকদের। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, রাঙ্গুনিয়ার ৫০০ জন কৃষককে পাঁচ কেজি করে বীজ, ১০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার দেয়া হয়েছে। অনেক আগে থেকেই রাঙ্গুনিয়ায় আউশের আবাদ চলে এলেও মাঝখানে তা অনেকটা কমে আসে। গেল ৪–৫ বছর ধরে আবারও পুরোদমে আউশের আবাদ শুরু হয়েছে। গত বছর উপজেলার ৮২ হেক্টর জমিতে আউশের আবাদ হয়েছিল। কিন্তু এবছর শুরুতে বৃষ্টি কম হওয়ায় উপজেলার ৭০ হেক্টর জমিতে আউশের আবাদ হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, গত এক সপ্তাহ ধরে রাঙ্গুনিয়ার কৃষকরা কষ্টের আউশ ধান ঘরে তুলছেন। রোদ–বৃষ্টির লুকোচুরির মাঝেই জমির আউশ ধান কর্তন, মেশিনের মাধ্যমে মাড়াই, খড় থেকে ধান ছাড়ানো, কোথাও আবার রাস্তায় খড় ও ধান রোদে শুকাতে দেখা যায় কৃষকদের। পাশাপাশি আমন আবাদ ও পরিচর্যাতেও কৃষকদের ব্যস্ততার কমতি নেই।
বেতাগী বড়ুয়া পাড়া এলাকার কৃষক দয়াল বড়ুয়া বলেন, কৃষি অফিসারের পরামর্শে ৪০ শতক জমিতে আউশ ধান চাষ করেছি, ফলনও ভাল হয়েছে। ধান তুলতে ও শুকাতে কিছুটা কষ্ট পেতে হচ্ছে। আকাশে কিছু সময় বৃষ্টি আবার কিছু সময় রোদ এবং বৃষ্টির জলে উঠান ভেজা থাকায় আমাদের ধান শুকাতেও সমস্যা হচ্ছে।
উপ–সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহাজাহান বলেন, আউশ ধান চৈত্র–বৈশাখে বুনে আষাঢ়–শ্রাবণে কাটা যায়। অর্থাৎ বোরো ধান কাটার ২০ থেকে ২৫ দিন আগে আউশ বীজতলা তৈরি করতে হয় এবং বোরো ধান কাটার সাথে সাথেই আউশ ধান রোপণ করতে হয়। আবার আউশ ধান কাটার সাথে সাথেই আমন ধান রোপণ করতে হয়। এতে করে একটি জমিতে তিন মৌসুমের ধান উৎপাদন করা হয়। যার ফলে ফসলের শস্য নিবিড়তা বৃদ্ধি পায় অর্থাৎ একই জমিতে ফসলের উৎপাদন অনেক গুণ বেড়ে যায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস বলেন, আউশ শব্দের অর্থ আগাম। বাংলা আশু শব্দ থেকে আউশ শব্দের উৎপত্তি। ৮০ থেকে ১২০ দিনের ভেতর এ ধান ঘরে তোলা যায়। দ্রুত ফসল উৎপন্ন হওয়ার বিচারে এই ধানের এমন নামকরণ হয়েছে। আউশে আমন–বোরোর মতো যত্ন নিলে বাম্পার ফলন হয়।