আগের দিন প্রিমিয়ার লিগের ফুটবলারদের দলবদলে উত্তাপ ছড়িয়েছিল মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র। আর গতকাল দল বদলকে রীতিমত উৎসবে পরিণত করল এবারের প্রিমিয়ার লিগে নবাগত দল কিষোয়ান স্পোর্টিং ক্লাব। ৭০, ৮০ কিংবা ৯০ এর দশকে যেভাবে দল করতে আসতো চট্টগ্রামের বড় বড় ক্লাব গুলো গতকাল কিষোয়ান যেন সে স্মৃতিকেই মনে করিয়ে দিল। নিজেদের অনুশীলনের মাঠ বায়েজিদস্থ সাইডার ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের মাঠ থেকে ঘোড়ার গাড়ি সাজিয়ে বাদ্য যন্ত্র বাজিয়ে দলের খেলোয়াড়দের দল বদলের স্থান এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে নিয়ে আসে কিষোয়ান। এই দৃশ্য অনেক দিন পর যেন দেখল চট্টগ্রামের ক্রীড়া মোদীরা। নিজেদের মাঠ থেকে শুরু করে দুই নাম্বার গেইট, জিইসি, ওয়াসা হয়ে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে আসে কিষোয়ানের খেলোয়াড়দের বহনকারী গাড়ির বহর। শুধু যে ঘটা করে এসেছে কিষোয়ান তা কিন্তু নয়। সে গাড়িগুলোতে করে নিজেদের সেরা সব ফুটবলারকে নিয়ে এসেছে দলটি।
চট্টগ্রাম জেলা ফুটবল এসোসিয়েশন আয়োজিত তৃতীয় বিভাগ, দ্বিতীয় বিভাগ এবং সবশেষ প্রথম বিভাগ লিগের বাধা পেরিয়ে প্রিমিয়ার লিগে এসেছে কিষোয়ান স্পোর্টিং ক্লাব। আর প্রিমিয়ার লিগেও আগের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চান বলে জানিয়েছেন দলটির কোচ তৌহিদুল ইসলাম সিদ্দিকী। তিনি বলেন আমরা প্রথম বিভাগের চ্যাম্পিয়ন দলের ছয়জনকে রেখে দিয়েছি। তারা হলেন হাবিব, শামীম, সাঈদি, আশিক, জিয়া এবং ঘুঘু।
এছাড়াও বিভিন্ন দলকে নিয়েছে পছন্দের বেশ কিছু ফুটবলার। যাদের মধ্যে ব্রাদার্স ইউনিয়ন থেকে এসেছেন সাহেদ, গত আসরের চ্যাম্পিয়ন মাদারবাড়ি উদয়ন সংঘ থেকে এসেছে সুইট, মোহামেডান ব্লুজ থেকে এসেছে মুন্নু, পুলিশ দল থেকে এসেছে রবি, কোয়ালিটি স্পোর্টস থেকে এসেছে আফজাল, বাংলাদেশ রেলওয়ে থেকে এসেছে আবির, অনূর্ধ্ব–২৩ দলের সাবেক ফুটবলার সাব্বিরকেও নিয়েছে কিষোয়ান স্পোর্টস। এছাড়া ব্রাদার্স ইউনিয়ন থেকে শফিক, সিটি কর্পোরেশন একাদশ থেকে সাদ্দামকে নিয়েছে কিষোয়ান। দলে নেওয়া হয়েছে দুই উপজাতীয় ফুটবলার। তারা হলেন ফ্রেনশো এবং উশাই চিং মারমা।
এছাড়াও দলের প্রয়োজনে যে সব জায়গা ঘাটতি থেকে যাবে সে সব জায়গা ভাল মানের ফুটবলার দিয়ে পূরণ করার কথাও বললেন তৌহিদ। তিনি বলেন যে ধারাবাহিকতা নিয়ে আমরা একেবারে তৃতীয় বিভাগ থেকে প্রিমিয়ারে উঠে এসেছি সেটা ধরে রাখাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। আমরা বলবনা প্রথমবারেই চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাব। আমরা দেখতে চাই আমাদের খেলোয়াড়রা কতটা কার্যকরী। আমরা যাদেরকে নিয়ে দল গড়েছি তাদেরকে ভাল করে পরখ করে দেখতে চাই। আমাদের একাদশের বাইরেও যেসব ফুটবলার থাকবে সাইড বেঞ্চে তাদেরকেও আমাদের পরখ করে দেখতে হবে। আমরা একটি সমন্বিত দল হিসেবে খেলতে চাই। মাঠে নিজেদের শতভাগ দিয়ে দলের জন্য ভাল ফল বয়ে আনতে চাই। যে দল গঠন করা হয়েছে তা দিয়ে লিগে ভাল করা সম্ভব বলেও জানান তৌহিদ। তিনি বলেন আমরা নেমে যেতে আসিনি। আমরা প্রিমিয়ারে থাকতে এসেছি। আমরা যেভাবে উঠে এসেছি তাতে এটা বেশ ভালই অনুধাবন করতে পারি যে আমাদের থাকতে হলে কি করতে হবে। আর আমরা সে লক্ষ্য নিয়েই এগিয়ে যেতে চাই। বাকিটা আমাদের খেলোয়াড়রা মাঠে কতটা দিতে পারে সেটার উপর নির্ভর করবে।
গতকাল ৩১ আগস্ট চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও চট্টগ্রাম জেলা ফুটবল এসোসিয়েশন আয়োজিত সিজেকেএস–সিডিএফএ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগের ৩য় দিনের দলবদল কার্যক্রমে বিভিন্ন দলের মোট ২২ জন খেলোয়াড় অংশগ্রহণ করেন। এ দলবদল কার্যক্রমে প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে অংশগ্রহণকারী দল বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রের পক্ষে ১জন, কিষোয়ান স্পোর্টিং ক্লাবের পক্ষে ১৫ জন, ব্রাদার্স ইউনিয়নের পক্ষে ৪ জন অংশগ্রহণ করেন এবং ১ম বিভাগ ফুটবল লিগে অংশগ্রহণকারী আগ্রাবাদ নওজোয়ান ক্লাবের পক্ষে ১ জন ও কে এম স্পোর্টিংয়ের পক্ষে ১ জন খেলোয়াড় অংশগ্রহণ করেন।