পলোগ্রাউন্ড মাঠকে নিয়ে মিনি সিঙ্গাপুর গড়ে তোলার সুযোগ রয়েছে মন্তব্য করে রেলপথ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি বলেছেন, পলোগ্রাউন্ড মাঠের পাশের স্কুল এবং পুরাতন ভবনগুলো ভেঙে ত্রিশ–চল্লিশ তলা উচ্চতার ভবন গড়ে তুলে হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নের স্বপ্ন ছিল আমার। পাবলিক–প্রাইভেট পার্টনারশিপের মাধ্যমে এই বিনিয়োগ সম্ভব। কিন্তু নানা কারণে স্বপ্নটি বাস্তবায়িত হয়নি। সামনের দিনগুলোতে সুযোগ পেলে এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করব।
গতকাল সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। রেলওয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমি না থাকলেও আপনারা এই জায়গাটিকে ঘিরে বড় ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন। এলাকাটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য চমৎকার। এক পাশে বিস্তৃত মাঠ, অপর পাশে সবুজ সিআরবি। এমন নান্দনিক একটি জায়গায় চল্লিশ তলা ভবন গড়ে তোলা হলে তা শুধু অপরূপ নয়, আইকনিক স্থাপনা হয়ে উঠবে। এসব ভবনে নিচের দিকে বর্তমানে যেসব প্রতিষ্ঠান রয়েছে সেগুলো রেখে উপরের দিকে অন্যান্য কাজে ব্যবহার করা যাবে।
ফজলে করিম চৌধুরী বলেন, মাঠে খেলা ছাড়া আর কিছু হবে না। রেলওয়ে পলোগ্রাউন্ড মাঠ অন্য কোনো কাজে ভাড়া দেওয়া যাবে না। এখানে মেলা বা এক্সিবিশনের মতো কর্মকাণ্ড চলতে দেওয়া উচিত নয়। এই মাঠে খেলা হবে। এলাকার শিশু কিশোর যুবকেরা খেলাধুলা করবে, বয়স্করা সময় কাটাবে। বিশাল মাঠটিতে একইসাথে ফুটবল, ক্রিকেট ও হকির জন্য আলাদা জায়গা করে দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। সিআরবির কাঠের বাংলো সংরক্ষণে গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, এই বাংলো থেকে মহান মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ নানা কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়েছে। যুদ্ধ পরিচালিত হয়েছে। মেজর রফিক বীর উত্তম সাহেব, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন সাহেবেরা এখান থেকে যুদ্ধ পরিচালনা করেছিলেন। তাই এই বাংলোটি সংরক্ষণ করতে হবে। এই বাংলো অবহেলার শিকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটার দায়িত্বে যিনি আছেন তাকে সরিয়ে দিন। নতুন কাউকে দায়িত্ব দিন। এই বাংলো ধ্বংস করা যাবে না। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা পাহাড়তলী ইউরোপিয়ান ক্লাবকেও রক্ষা করা হবে। এই ক্লাব থেকে রেলওয়ের অফিস দ্রুত সরিয়ে নেওয়ারও নির্দেশ দেন তিনি।
ফজলে করিম বলেন, সিআরবির রাস্তাটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এটিকে চার লেনে প্রশস্ত করা হবে। রাস্তার মুখে থাকা সিএনজি স্টেশন সরিয়ে নেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই জায়গার ইজারার মেয়াদ অচিরেই শেষ হবে। এটির মেয়াদ নতুন করে আর বাড়ানো হবে না। এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি রাস্তার মোড়ে এভাবে একটি সিএনজি স্টেশন থাকতে পারে না। সিআরবি এলাকায় ওয়াকওয়ে নির্মাণের একটি পরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান।
রেলওয়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, কোনো অনিয়ম করবেন না। অনিয়ম মেনে নেওয়া হবে না। আমি রেলপথ মন্ত্রণালয়ে না থাকলেও চট্টগ্রামে থাকব। সিআরবি নষ্ট হয় এমন কিছু করা যাবে না।
মতবিনিময়কালে একুশে পদকপ্রাপ্ত দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এম এ মালেক, দৈনিক পূর্বকোণের পরিচালনা সম্পাদক জসিম উদ্দীন চৌধুরী, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের জিএম জাহাঙ্গীর হোসেন, প্রধান প্রকৌশলী আবু জাফর মিঞা, রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান এহসানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।