ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে থাকার মধ্যে দেশে গত একদিনে এডিস মশাবাহিত এ রোগে আক্রান্ত হয়ে আরও ২২৯১ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ১৩ জনের। গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত গত একদিনে মৃতদের মধ্যে সাতজন ঢাকায় এবং ছয়জন ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলার হাসপাতালে মারা গেছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বছর এডিস মশা শনাক্তে চালানো জরিপে ঢাকায় মশার যে উপস্থিতি দেখা গেছে, তাকে ঝুঁকিপূর্ণ বলছেন বিশেষজ্ঞরা। ঢাকার বাইরে আশঙ্কাজনক পরিমাণে ডেঙ্গু রোগী বাড়ছে। হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যা ঢাকাকে ছাড়িয়ে গেছে ঢাকার বাইরের সংখ্যা। এ অবস্থায় সামনে ডেঙ্গুর প্রকোপ আরও বাড়ার আশঙ্কা করেছেন তারা।
চিকিৎসকরা বলছেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এ বছর যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের প্রায় সবাই ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারে ভুগছিলেন এবং শক সিনড্রোমে মারা গেছেন। খবর বিডিনিউজের।
অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান বলছে, এ বছর হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৯ হাজার ১৩৩ জন এবং মারা গেছেন ৫৬৯ জন। হাসপাতালে ভর্তি রোগী ও মৃত্যুর এ সংখ্যা অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। ডেঙ্গুবাহী এডিস মশার বিস্তার বাড়তে থাকলে আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে শঙ্কা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের।
বর্তমানে দেশজুড়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ৮ হাজার ২১৮ জন রোগী ভর্তি আছেন। তাদের মধ্যে ঢাকায় ৩৮৩৮ জন এবং ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলায় ৪৩৮০ জন। এ বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ দ্রুত বাড়ছে। জুন মাসে যেখানে ৫ হাজার ৯৫৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, জুলাইয়ে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৩ হাজার ৮৫৪ জনে। আগস্টের ২৮ দিনে ৬৭ হাজার ৩০১ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। মাসের হিসাবে জানুয়ারিতে ৫৬৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৬৬ জন, মার্চে ১১১ জন, এপ্রিলে ১৪৩ জন, মে মাসে ১ হাজার ৩৬ জন এবং জুন ৫ হাজার ৯৫৬ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
অপরদিকে বছরের মাঝামাঝিতে এসে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকে। জুনে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল। পরের মাসে যা বেড়ে ২০৪ জন হয়। আগস্টের ২৮ দিনে মৃত্যুর সংখ্যা আগের যে কোনো সময়ের পরিসংখ্যানকে ছাড়িয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত এ মাসে মৃত্যু হয়েছে ৩১৮ জনের।