পুলিশ কনস্টেবল মোহাম্মদ হোসাইনের (৩৫) সীতাকুণ্ড থানায় শেষ কর্মদিবস ছিল গত রোববার। ১ সেপ্টেম্বর আনোয়ারা থানায় তার যোগ দেওয়ার কথা ছিল। মাঝের কয়েকটা দিনের ছুটিতে তিনি গ্রামে যেতে চেয়েছিলেন। সেখানে তার বিয়ের জন্য পাত্রী দেখছিলেন স্বজনরা।
তবে সব আয়োজন থেমে গেল নিমেষেই। গত রোববার দুপুরে সীতাকুণ্ড উপজেলায় সলিমপুর ফকিরহাটে পুলিশের গাড়িতে ট্রেনের ধাক্কায় যে তিন পুলিশ সদস্যের মৃত্যু হয়েছে, তাদের একজন মোহাম্মদ হোসাইন। এতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে তার পরিবারে।
রোববার রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গ থেকে পৃথক অ্যাম্বুলেন্সে নিহত তিন পুলিশ কনস্টেবলের মৃতদেহ নিয়ে সীতাকুণ্ড থানায় নিয়ে আসা হলে সেখানে নিহতের স্বজনদের আহাজারিতে পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে।
সীতাকুণ্ড থানার ওসি তোফায়েল আহমেদ বলেন, কী বলবো ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। রবিবার সকালে পুলিশ সদস্যদের টহল ডিউটিতে পাঠিয়েছি, দুপুরে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তিন পুলিশের মৃত্যুর খবর পেলাম। এ মৃত্যু কোনোভাবে মেনে নিতে পারছি না।
কক্সবাজার টেকনাফ থেকে লাশ নিতে আসা নিহত হোসাইনের ভাই তোফাজ্জল হোসেন জানান, রবিবার রাতেই হোসাইন সীতাকুণ্ড থানায় শেষ কর্মদিবস শেষ করে বাড়ি ফেরার কথা। অথচ বাড়ি যাচ্ছে ঠিকই, কিন্তু তার মৃতদেহ বাড়ি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, বাবা মো. ফরিদ আহমদ ২২ বছর সৌদি আরবে চাকরি করেছেন। হোসাইন পুলিশের চাকরি পাওয়ার পর বাবাকে আর বিদেশে যেতে দেইনি। সপ্তাহ দুয়েক আগে চাচার মৃত্যু সংবাদ পেয়ে হোসাইন বাড়ি এসেছিলেন। তখন নিজের বিয়ের জন্য পাত্রী দেখতে বলেন পরিবারকে।
মোহাম্মদ হোসাইনের বাড়ি কঙবাজারের টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের মৌলভীবাজার গ্রামে। মোহাম্মদ ফরিদ আহমদ ও রাজিয়া বেগমের ছেলে হোসাইন ছয় ভাইবোনের মধ্যে তৃতীয়। ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ পুলিশে তার কর্মজীবন শুরু হয়। ২০২০ সালের ১৯ জুলাই সীতাকুণ্ড থানায় কাজে যোগদান করেন।