বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায় যুক্তরাজ্য

সিইসির সঙ্গে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ

| সোমবার , ২৮ আগস্ট, ২০২৩ at ৬:১০ পূর্বাহ্ণ

যুক্তরাজ্য বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ দেখতে চায় বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক। নির্বাচনের চার মাসে আগে গতকাল আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে প্রায় দেড় ঘণ্টা বৈঠকের পর সাংবাদিকদের একথা জানান তিনি।

হাইকমিশনার বলেন, যুক্তরাজ্য অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে উৎসাহিত করে, যাতে বাংলাদেশের জনগণ তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চা করতে পারে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় ব্রিটিশ হাইকমিশনার হয়ে আসেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণপূর্ব এশিয়া বিভাগের প্রধান সারাহ কুক। বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে এটাই তার প্রথম সাক্ষাৎ। খবর বিডিনিউজের।

সিইসির সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা স্বাধীন, শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যম, সুশীল সমাজ এবং নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেছি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং তার দলের সঙ্গে আমার এটি প্রথম সৌজন্য সাক্ষাৎ। আলোচনা গঠনমূলক হয়েছে।

ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বৈঠকে সিইসির সঙ্গে নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান, ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলমও উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক প্রসঙ্গে সিইসি হাবিবুল আউয়াল বলেন, সারাহ কুক আমাদের সাথে মতবিনিময় করেছেন। বিভিন্ন বিষয় আলাপচারিতার মধ্যে নির্বাচন প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। উনি জানতে চেয়েছিলেন, আমাদের প্রস্তুতি কেমন। উনি নির্বাচন সম্পর্কে আশাবাদী যে সুন্দর ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। উনি অতিরিক্ত যেটা বলেছেন, নির্বাচনটা যেন অংশগ্রহণ ও বিশ্বাসযোগ্য হয়। এ বিষয়ে আমরা আমাদের তরফ থেকে জানিয়েছি যে, আমরা কী কী ভূমিকা পালন করব।

চলতি বছরের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে বা আগামী বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন হবে; নভেম্বরে তফসিল ঘোষণার আভাসও রয়েছে।

আলোচনায় নির্বাচনে গণমাধ্যমের প্রসঙ্গও উঠে আসে জানিয়ে সিইসি বলেন, অবজার্ভারের বিষয়টাও আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা তাকে জানিয়েছি, আমরা ট্রান্সপারেন্সির ওপর খুব জোর দিয়ে থাকি। এজন্য অবজার্ভার এবং গণমাধ্যমের কাছ থেকে খুব বস্তুনিষ্ঠ সহায়তা কামনা করে থাকব। কারণ নির্বাচনের যে একটা দর্পণ, তা কিন্তু প্রতিফলিত হবে গণমাধ্যমকর্মীদের মাধ্যমে।

সারাহ কুক গণমাধ্যমের জন্য ইসির নীতিমালা প্রসঙ্গ তুলেছেন জানিয়ে হাবিবুল আউয়াল বলেন, গণমাধ্যমের জন্য যে গাইডলাইনটি আমাদের তরফ থেকে হয়েছে, সেখানে উনি প্রথম বলেছিলেন, এটায় তো পারমিশন নিয়ে যেতে হবে। আমরা এক্সপ্লেইন করেছি, সেখানে ‘পারমিশন’ বলে কোনো শব্দ ছিল না। শেষ পর্যন্ত গণমাধ্যম থেকে যে দাবিটা আমাদের কাছে আসছে, সেটা হলো মোটরসাইকেল ব্যবহারের বিষয়ে। আমরা বলেছি, একটা কারণে এটা বাদ দিয়েছিলাম; মোটরসাইকেলের অপব্যবহার হবে কিনাযারা মাসলম্যান (পেশিশক্তি প্রদর্শনকারী), তারা এই মোটরসাইকেল ব্যবহারের সুযোগ নিয়ে কোনো ধরনের সংকট সৃষ্টি করবে কিনা। একইসাথে বলেছি, গণমাধ্যমের যে দাবি, সেটাও যৌক্তিক। মোটরসাইকেল ছাড়া নির্বাচনী কর্মকাণ্ড কভার করা তাদের জন্য কষ্টসাধ্য হতে পারে। সেজন্য আমরা বলেছি, এটা আমরা আন্ডার রিভিউ রেখেছি। সেটা আমরা পরিবর্তন করব।

সিইসি বলেন, সারাহ কুক প্রত্যাশা করেছেন নির্বাচন যেন অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য হয়। আমি জোর দিয়েছি, ইলেকশন ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার হতে হলে যারা পোলিং এজেন্ট, তাদের ভূমিকাটা গুরুত্বপূর্ণ। পোলিং এজেন্টদের আমরা ওভাবে সেনসেটাইজ করব। ভোটকেন্দ্রের ভেতরে শৃঙ্খলা রাখতে এবং ম্যালপ্র্যাকটিস রোধ করতে হলে পোলিং এজেন্টদের সক্রিয় হতে হবে। তাদেরকে সাহসের সাথে সেই ভূমিকাটা পালন করতে হবে। এতে ভোটকেন্দ্রের ভেতরে যে অনিয়ম হতে পারে, সেই আশঙ্কা অনেকটা হ্রাস পাবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধমেহেদী অনুষ্ঠানের ভিডিও করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মৃত্যু