আওয়ামী লীগের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই

নগর বিএনপির সমাবেশে খসরু

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ২৭ আগস্ট, ২০২৩ at ৪:৪৫ পূর্বাহ্ণ

আওয়ামী লীগের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই বলে দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কয়েকটি জায়গায় যেতে পারবে। একটি হচ্ছে প্রতিদিন টাকা দিয়ে বিরিয়ানি খাইয়ে শান্তি কমিটির মিটিং করা। আবার টাকা নিয়ে, বিরিয়ানি খেয়েও বিএনপির মিছিলে চলে আসে অনেকে। এটা আমি সত্যি কথা বলছি। এই হলো জনগণের সাথে আওয়ামী লীগের অবস্থা।

গতকাল বিকালে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির কালো পতাকা মিছিলপূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সরকারের পদত্যাগে এক দফা দাবিতে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে নূর আহমেদ সড়কে কেন্দ্র ঘোষিত এ গণমিছিল অনিুষ্ঠত হয়। লাভলেইন, বৌদ্ধ মন্দির মোড়, চেরাগী পাহাড় হয়ে আন্দরকিল্লা মোড়ে গিয়ে শেষ হয় মিছিলটি।

নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে গণমিছিলপূর্ব সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম। বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, নগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান। সঞ্চালনা করেন যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াছিন চৌধুরী লিটন। দেশের মানুষের করের টাকায় প্রধানমন্ত্রী দক্ষিণ আফ্রিকায় নৌকায় ভোট চাইতে গেছেন দাবি করে আমীর খসরু বলেন, বাংলাদেশি কিছু আওয়ামী লীগের লোকজন ওখানে আছে। এদেরকে নিয়ে উনি একটি সভা করেছেন ওখানে। ওখানে কি বলছে? নৌকায় ভোট দিতে বলছে। ওরা কেউ কিন্তু ভোটার না। গেছেন কোন কাজে, করছেন কি। ওরা তো দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকে। বাংলাদেশের করের টাকা খরচ করে আপনি দক্ষিণ আফ্রিকায় গেছেন কি নৌকায় ভোট চাইতে? এ সময় দক্ষিণ আফ্রিকাতে যত বাঙালি থাকে তার ৯০ শতাংশ বিএনপি বলেও দাবি করেন তিনি। খসরু দাবি করেন, কিছু আওয়ামী পুলিশকে ব্যবহার করে সরকার মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। বিএনপির প্রতিটি অনুষ্ঠানের আগেপরে গ্রেপ্তার করে। শত বছরের পুরনো অস্ত্র দিয়ে বলে তারা নাকি অস্ত্র নিয়ে ধরা পড়েছে। এটা হচ্ছে আওয়ামী লীগের নির্ভরশীলতা। তিনি বলেন, যে আইনে মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে সে আইনে এটাও বলা আছে, যদি মামলা মিথ্যা হয় তাহলে সেটা শাস্তিযোগ্য ও দণ্ডনীয় অপরাধ। এটার শাস্তি আজীবন কারাদণ্ড হতে পারে। আপনার যারা এসব কাজ করছেন ভেবে দেখেন, সারা জীবনের জন্য জেলখানা চান নাকি সংবিধান আপনাকে যে দায়িত্ব দিয়েছে জনগণের সুরক্ষার জন্য তা পালন করবেন? একটি দলকে ক্ষমতায় রাখার জন্য, একটি ব্যক্তিকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য যদি জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন তাহলে আজীবন জেলে কাটাতে হবে। জরিমানা দিতে হবে।

দলীয় কর্মীদের খসরু বলেন, যারা রাতের অন্ধকারে গ্রেপ্তার করতে আসে তাদের ছবি তুলবেন। বিএনপি ভদ্রলোকের দল। এখনও কিন্তু সুশৃক্সখলভাবে, অহিংসভাবে জনগণকে সাথে নিয়ে আমরা আন্দোলন করছি। আমরা প্রতিবাদ করছি। কিন্তু বাসায় বাসায় গিয়ে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তারের ধারা চলতে থাকলে প্রতিরোধ করব। প্রতিরোধ কি জিনিস তখন বুঝতে পারবেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণের অধিকার আছে। কেউ যদি কোনো নাগরিকের নাগরিক, সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক অধিকার কেড়ে নেয় তাহলে সেই নাগরিকের অধিকার আছে সেটা প্রতিরোধ করা।

খসরু বলেন, নির্বাচন আসছে। সেটা বাধাগ্রস্ত করার জন্য যারা ভূমিকা পালন করবে, তাদের আমেরিকার ভিসা তো বাতিল হবেই, ছেলেমেয়ে নিয়ে থাকতে পারবে না। চলে আসতে হবে। চুরি করে যে বাড়িঘর করেছে তা আমেরিকান সরকার নিয়ে নেবে। তাদেরকে বিতাড়িত করবে। তাদের ছেলেমেয়েরা কেউ পড়তে যেতে পারবে না। যেগুলো আছে পাঠিয়ে দেবে। আর তারা তো যেতেই পারবে না। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ যে স্যাংশন দেবে এখান থেকে কেউ মুক্তি পাবে না।

মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ আজকে রাস্তায় নেমে গেছে। আমরা আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটাব।

ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, আজকের গণ মিছিল হচ্ছে ভোট ডাকাত সরকারের বিরুদ্ধে কালো পতাকা প্রদর্শন। বিদেশে হাজার কোটি টাকা পাচার ও বেগম খালেদা জিয়াকে গৃহবন্দি করে রাখার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ।

এ এম নাজিম উদ্দীন বলেন, দফা এক দাবি এক, শেখ হাসিনার পদত্যাগ। সরকারকে পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনরায় বহাল করতে হবে। সেই সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে।

আবুল হাশেম বক্কর বলেন, বাংলাদেশের অস্তিত্বের সংকট চলছে। ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ জোর করে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে। স্বাধীনতার মূল চেতনা ধ্বংস করেছে।

আবু সুফিয়ান বলেন, বাংলাদেশের মানুষ জেগে উঠেছে। সরকারকে বিদায় নিতে হবে।

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন এম এ আজিজ, মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, এড. আবদুস সাত্তার, এস এম সাইফুল আলম, এস কে খোদা তোতন, নাজিমুর রহমান, শফিকুর রহমান স্বপন, কাজী বেলাল উদ্দিন, মো. শাহ আলম, ইসকান্দর মির্জা, আবদুল মান্নান, এরশাদ উল্লাহ, জয়নাল আবেদীন জিয়া, হাজী মো. আলী, নিয়াজ মো. খান, ইকবাল চৌধুরী, এস এম আবুল ফয়েজ, গাজী মো. সিরাজ উল্লাহ, মন্‌জুর আলম চৌধুরী মন্‌জু, মো. কামরুল ইসলাম, মোশাররফ হোসেন দিপ্তী, মোহাম্মদ শাহেদ, এইচ এম রাশেদ খান ও জেলী চৌধুরী।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসড়ক ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬