ক্ষমতাসীন দলের নেতারা যেভাবে বিরোধীদলের নেতাদের নাম ধরে ‘গালিগালাজ’ করেন, তা কোনোভাবেই রাজনৈতিক শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে না বলে মনে করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
গতকাল বুধবার দুপুরে আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল তথ্যমন্ত্রীর সেই বক্তব্যের জবাবে বলেন, আজকে পত্রিকায় উঠেছে যে, আমার মতো মিথ্যাবাদী আর নাই। আমরাতো একটা রুচিশীলতার মধ্য দিয়ে বড় হয়েছি। তারা যে ভাষায় কথা বলে আমরা তো সেই ভাষায় কথা বলতে অভ্যস্ত নই। বিষয়টা হচ্ছে যে, উনারা নাম ধরে গালিগালাজ করেন। আমরা মনে করি এটা কোনো রাজনৈতিক শিষ্টাচার না। খবর বিডিনিউজের।
তিনি বলেন, অবশ্য আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক শিষ্টাচার থাকার কথাও না। কারণ তাদের বডি ল্যাংগুয়েজ হচ্ছে সন্ত্রাসী ল্যাংগুয়েজ। আমি এই কারণে বলি, আওয়ামী লীগ মানেই হচ্ছে একটা সন্ত্রাসী কালচার। আপনি গ্রামে চায়ের দোকানে যাবেন কেমন করে বুঝবেন কে আওয়ামী লীগ করে কে করে না? দেখবেন যে সবচেয়ে বেশি টেবিল থাপড়াচ্ছে, জোরে কথা বলছে, গালি দিচ্ছে আপনি নিশ্চিত থাকবেন সে আওয়ামী লীগ।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদের (নূর) উদ্যোগে ‘নাগরিকদের সাংবিধনিক মৌলিক ও মানবাধিকার সুরক্ষা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়। মির্জা ফখরুল বলেন, আমি খুব কষ্ট পাই যখন দেখি যে, জঘন্যতম একটা ঘটনা ঘটেছে, একজন নারী বা একজন ছাত্রী নির্যাতিত হয়েছে সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তরুণরা–ছাত্ররা এর প্রতিবাদে রাস্তায় নামে না। অথবা সমাজে, রাষ্ট্রে মানুষের আজকে সাংবিধানিক অধিকার হরণ করে নেয়া হচ্ছে, মানবাধিকার হরণ করে নেয়া হচ্ছে, আমরা তো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সেইভাবে কোনো প্রতিবাদ দেখতে পারছি না, রাস্তায় নামছে না।
বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদের (নূর) সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, কত ভীত–সন্ত্রস্ত হলে আজকে টেলিভিশনেও একটা বৃহৎ বিরোধী দল বিএনপির চেয়ারম্যানের বক্তব্য টেলিভিশনে পত্রিকায় প্রচার করা যাচ্ছে না। এর চেয়ে কুৎসিত রাষ্ট্রব্যবস্থা কি হতে পারে? জঘন্য সরকারের পদক্ষেপ আর কি হতে পারে যে, বিরোধী দলের লিডারের বক্তব্য টেলিভিশনে প্রচার করা যাবে না। এখন তিনি (তারেক রহমান) ইউটিউবে, ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন সেটাও বন্ধ করার জন্য নাকি হাই কোর্টের দৃষ্টিতে আনা হয়েছে। সরকারের পতনে সকলকে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বানও জানান নূর।
নূরের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন– কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বিএনপির সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) আহসান হাবিব লিংকন, এবি পার্টির এএফএম সোলায়মান চৌধুরী, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, জাগপার রাশেদ প্রধান, এনডিপির আবু তাহের, বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টির কেএম আবু হানিফ, জাঙ্গীরনগর বিশ্বদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম, ঢাবি অধ্যাপক রুহুল আমীন, গণঅধিকার পরিষদের এসএম নূরে এরশাদ সিদ্দিকী, রাখাল রাহা প্রমুখ।