লোহাগাড়ার মাহামুদুল হক হত্যা মামলায় আপন দুই ভাইকে আমৃত্যু কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি ৮ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, আট হাজার টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে আরো চার মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এছাড়া মামলার অপর একজন আসামিকে খালাস দেয়া হয়েছে। গতকাল চট্টগ্রামের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবুল হাসনাতের আদালত এই রায় ঘোষণা করেন।
আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দুজন হলেন, লোহাগাড়া আমিরাবাদের রাজঘাটা এলাকার মৃত ইয়াকুব মিয়ার ছেলে শামসুল ইসলাম ও তার ভাই সৈয়দ আহম্মেদ। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আটজন হলেন– একই এলাকার মৃত ইয়াকুব মিয়ার ছেলে আইয়ুব আলী, আইয়ুব আলীর ছেলে জহিরুল ইসলাম, মো. ইউসুফের ছেলে আজম বাদশা ও আলমগীর, বেলায়েত আলীর তিন ছেলে জসিম উদ্দীন, আবুল কাশেম ও নাজিম উদ্দীন এবং পদুয়া এলাকার আব্দুল হাকীমের ছেলে নুরুল আলম। খালাসপ্রাপ্ত অপরজন হলেন, কলিম উল্লাহর ছেলে আব্দুল মালেক। রায়ের সময় আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সৈয়দ আহম্মেদ ও যাবজ্জীন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আইয়ুব আলী, জহিরুল ইসলাম, জসিম উদ্দীন ও আবুল কাশেম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। বাকীরা অনুপস্থিত থাকায় তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী দীন মণি দে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে বিচারক এই রায় ঘোষণা করেছেন। আদালতসূত্র জানায়, ২০০১ সালের ৩ নভেম্বর লোহাগাড়া থানাধীন আমিরাবাদ এলাকায় মাহামুদুল হককে মারধর ও দেশি অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়। দুই দিন পর ৫ নভেম্বর চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় মাহামুদুল হকের ভাই আলী আহমেদ বাদী হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে লোহাগাড়া থানায় মামলাটি দায়ের করেন। পরবর্তীতে ২০০২ সালের ২৮ জানুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৬ সালের ৮ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন বিচারক। আদালতসূত্র আরো জানায়, বিচার চলাকালে দুই আসামির মৃত্যু হয় বলে তাদেরকে অব্যাহিত দেয়া হয়। রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে নিহত মাহমুদুল হকের ভাতিজা শহীদুল ইসলাম বলেন, দ্রুত রায় কার্যকর হোক সেটির আমাদের প্রত্যাশা এখন।