রাঙ্গুনিয়ার ওমান প্রবাসী মোহাম্মদ মামুন (২৮)। বিয়ের জন্য কনে ঠিক করা হয়ে গিয়েছিল আগেই। বর ও কনে পক্ষের মধ্যে বিয়ের দিন–তারিখও অনেকটা ফাইনাল। অন্যদিকে নতুন বউয়ের জন্য স্বর্ণসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ দেশে পাঠিয়ে দিয়েছেন মামুন। ১৫ দিন পর দেশে আসার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন এই প্রবাসী। কিন্তু বিয়ে করতে তার আর দেশে আসা হল না। তার আগেই এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন তিনি। হতভাগ্য মামুন রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাহেব নগর এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে। গতকাল বৃহস্পতিবার তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, মা আনোয়ারা বেগম ছেলের জন্য বারবার মুর্ছা যাচ্ছেন। কান্না যেন থামছেই না তার। কান্নারত অবস্থায় ছেলের মরা মুখটি অন্তত শেষ বারের মতো দেখার আকুতি জানাচ্ছিলেন তিনি।
স্বজন সাবেক ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী রুস্তম জানান, ওমানে নিহত মামুন দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। সম্প্রতি তার ভিসার মেয়াদ শেষ হলে অর্থ সংকটে তা আর বাড়াতে পারেননি। গত ১০ আগস্ট ওমানের মুবালা সানাইয়া ৮ নম্বর এলাকায় তার আবাসস্থলের একটি ভবনের তিনতলা থেকে দুর্ঘটনাবশত পড়ে যায় সে। তাকে উদ্ধার করে নিকটস্থ একটি হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মামুনের বাবা নুরুল ইসলাম জানান, চার ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় সন্তান ছিল মামুন। পরিবারে সচ্ছলতা আনতে দশ বছর আগে অল্প বয়সে ওমানে যায়। তার জন্য বউ ঠিক করে কেনাকাটাও প্রায় সম্পন্ন করা হয়েছে। সে দেশে আসলে তারিখ নির্ধারণ করার কথা ছিল। কিন্তু তা আর হল না জানিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
এদিকে মামুনের মৃত্যুর সংবাদে পরিবার ও এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে চলছে শোকের মাতম। মামুনের লাশ দ্রুত দেশে আনতে সরকারের সাহায্য চেয়েছেন বাবা–মা ও স্বজনরা।