চকরিয়ায় ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় কৃষক

বন্যায় ৯,৫৪৫ হেক্টর আমন ক্ষেতের ক্ষতি

চকরিয়া প্রতিনিধি | রবিবার , ১৩ আগস্ট, ২০২৩ at ১:০২ অপরাহ্ণ

কক্সবাজারের চকরিয়ায় আমন ধানের বীজতলা তৈরি ও চারা রোপণের সময়ে বৃষ্টি ছিল না। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন কৃষকেরা। অবশেষে বৃষ্টিপাতের দেখা পেয়ে মাঠে মাঠে চাষাবাদের ধুম পড়ে গিয়েছিল। চারা রোপণও অনেকটা এগিয়ে নিয়েছিলেন। কিন্তু বন্যায় সবকিছু ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হয়েছে। আমনের মাঠে এখন বন্যার তাণ্ডব।

তবে সবকিছু ছাপিয়ে নতুন করে কৃষকদের ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা চলছে। হাতে যে কয়দিন সময় রয়েছে তার মধ্যে ফের বীজতলা তৈরি করে আমন ধানের চারা রোপণের তোড়জোড় চলছে।

উপজেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, বন্যার আগে উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ১৯ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে ধানের চারা রোপণকাজ শেষ করার জন্য মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছিলেন কৃষকেরা।

সেই হিসাবে বন্যার আগ পর্যন্ত আমন ধানের চারা রোপণ সম্পন্ন হয়েছিল ৯,৫৪৫ হেক্টর জমিতে। কিন্তু বন্যার তাণ্ডবে রোপণকৃত ধানের চারা একেবারে নষ্ট হয়ে যায়।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রাজীব দে আজাদীকে জানান, নিম্নাঞ্চল থেকে বানের পানি পুরোপুরি নেমে যায়নি। তবে যেসব এলাকা থেকে পানি নেমে গেছে সেখানে কৃষকেরা ঘুরে দাঁড়াবার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কৃষি বিভাগের ব্লককেন্দ্রিক কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক কৃষকের পাশে থেকে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন, যাতে হাতে থাকা সময়ের মধ্যে নতুন করে আমনের আবাদ সম্পন্ন করা যায়।

সুরাজপুরের ভিলেজার পাড়ার কৃষক আহমদ হোসেন আজাদীকে বলেন, চার কানি জমিতে আমনের চারা রোপণ সম্পন্ন করি। সার, কীটনাশক, জমিকে উপযোগী করে তোলা, শ্রমিক নিয়োগ ছাড়াও চারা ক্রয়ে ব্যয় হয়েছিল লাখ টাকা। কিন্তু বন্যা সবকিছু তছনছ করে দিয়েছে। এখন দাদন নিয়ে নতুন করে আমন আবাদের চেষ্টা করছি।

উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, প্রতি বছরের মতো এবারও ১৯ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে উফসি প্রজাতির ব্রিধান ৭৫, ৭১, ৫১, ৯৫ এবং হাইব্রিড প্রজাতির টিয়া, মুক্তি, হীরা ধানের আবাদ শুরু করা হয়েছিল। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যাতে ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হয় সেজন্য অতি দ্রুত বর্ধনশীল প্রজাতির ধানের আবাদ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে কৃষককে। এতে সঠিক সময়েই ফলন পাওয়া যাবে। চকরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এস এম নাসিম হোসেন আজাদীকে বলেন, বন্যায় উপজেলার ৬৪ হাজার প্রান্তিক কৃষক পরিবারে হাহাকার চলছে। ইতোমধ্যে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে প্রণোদনা হিসেবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের পাশে দাঁড়ানোর কার্যক্রম শুরু হয়েছে। নতুন করে বীজতলা তৈরি, চারা, সার ও কীটনাশক সরবরাহ করা হচ্ছে; যাতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কৃষক তার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবন্যাদুর্গতদের মাঝে ত্রাণ ও খাদ্য সহায়তা
পরবর্তী নিবন্ধচসিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভা