সর্বোচ্চ উৎপাদনে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র

সচল পাঁচ ইউনিটের সবকটিই, ২৫ থেকে উৎপাদন বেড়ে ২০১ মেগাওয়াট

কাপ্তাই প্রতিনিধি | রবিবার , ১৩ আগস্ট, ২০২৩ at ৫:৪৮ পূর্বাহ্ণ

কাপ্তাই ও রাঙামাটি জেলায় প্রায় এক সপ্তাহ টানা ভারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে পাহাড়ি ঢল। এসব পানির প্রায় পুরোটাই খাল বিল নালা নর্দমাসহ বিভিন্নভাবে গড়িয়ে কাপ্তাই লেকে এসে জমা হয়েছে। এতে লেকে প্রয়োজনের চেয়ে ১১ ফুট বেশি পানি বৃদ্ধি পায়। এভাবে লেকটি পানিতে টৈটম্বুর হওয়ায় আশানুরূপ মাত্রায় বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রে।

কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী এটিএম আব্দুজ্জাহের জানান, টানা বৃষ্টির ফলে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র উপকৃত হয়েছে। আষাঢ়শ্রাবণ দুই মাস ভরা বর্ষা মৌসুম থাকলেও এতদিন বৃষ্টি হচ্ছিল না। বৃষ্টির অভাবে কাপ্তাই লেকে পানির স্তর সর্বনিম্ন পর্যায়ে এসে পৌঁছার উপক্রম হয়েছিল। ২৪২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষমতা থাকলেও ২৫ থেকে ৩০ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছিল না। পাঁচটি ইউনিট সচল থাকলেও চালানো হত মাত্র একটি ইউনিট। পানির অভাব বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হওয়ার উপক্রম হচ্ছিল। লেকে রুলকার্ভ অনুযায়ী (পানির পরিমাপ) পানির স্তর ১০ ফুট নিচে নেমে আসে। কিন্তু গত ৩ আগস্ট থেকে ভারি বৃষ্টিপাত শুরু হয়। এই কয়দিনের বৃষ্টিতে লেকে পানির উচ্চতা বহুলাংশে বৃদ্ধি পায়। এতে বৃদ্ধি পেয়েছে কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন। পাঁচটি ইউনিটের সবগুলোই এখন বিদ্যুৎ উৎপাদনে সচল রয়েছে। বর্তমানে ২০১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হচ্ছে। উৎপাদিত বিদ্যুতের পুরোটাই সঞ্চালন করা হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে।

কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা গেছে, রুলকার্ভ অনুযায়ী কাপ্তাই লেকে এখন (১২ আগস্ট) পানি থাকার কথা ৯২.৫২ ফুট মিন সি লেভেল। কিন্তু এখন পানি রয়েছে ১০১.৪৬ ফুট এমএসএল। পাহাড়ি ঢল, ঝর্ণাধারা এবং উজান থেকে এখনো পানির ধারা অনবরত কাপ্তাই লেকে এসে পড়ছে। এর ফলে প্রতিদিন লেকে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কাপ্তাই লেকে সর্বমোট পানি ধারণ ক্ষমতা রয়েছে ১০৯ ফুট এমএসএল। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে খুব সহসা লেকের পানি ধারণ ক্ষমতার কাছাকাছি পৌঁছে যাবে। পানি ১০৯ ফুট এমএসএল পর্যন্ত আসার পূর্বেই স্পিলের ১৬টি গেট খুলে দিয়ে বাড়তি পানি কর্ণফুলী নদীতে ছেড়ে দেওয়া হবে।

কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, বিদ্যুৎ উৎপাদন করে কাপ্তাই কেন্দ্র প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ অর্থ আয় করে থাকে। উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় এই কেন্দ্র বারবার লাভে থাকতে পারছে। তবে লেকে পর্যাপ্ত পানি থাকলে বিদ্যুৎ উৎপাদন আরো বৃদ্ধি করাও সম্ভব হবে। এখন ২০১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হলেও এই কেন্দ্রের আরো ৪০ মেগাওয়াট বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। জাতীয় গ্রিডের চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন আরো বাড়ানো হতে পারে বলেও সূত্র আশা প্রকাশ করছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ১৫ ওয়ার্ডের সেকেন্ডারি নালা পরিষ্কারে বিশেষ কর্মসূচি
পরবর্তী নিবন্ধঅভিযানের খবরে বাইরে তালা লাগিয়ে ভিতরে লুকিয়ে থাকেন ম্যানেজার!