চোরের ওপর বাটপারি করতে গিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি। হাজারী গলির স্বর্ণ ছিনতাইয়ের ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত চার আসামির মধ্যে আবদুর রউফ রিমান্ডে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে ছিনতাইয়ের সময় ৬টি স্বর্ণের বার সে অন্যদের অগোচরে লুকিয়ে তার এক আত্মীয়ের দোকানে দিয়ে এসেছিল। সেখানে তিনটি স্বর্ণের বার গলিয়ে কিছু স্বর্ণালংকার বানানো হয়। কিছু বিক্রি করা হয়। আর বাকি তিনটি বার সেখানেই আছে। তার তথ্যমতে পুলিশ বাকলিয়া ডিসি রোডে শরিফা জুয়েলার্সে অভিযান চালিয়ে গত ১০ আগস্ট রাতে তিনটি অবিকৃত স্বর্ণের বার, চল্লিশ ভরি স্বর্ণ এবং স্বর্ণ বিক্রির পনের লাখ ত্রিশ হাজার টাকা উদ্ধার করে ও দুই জনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত দুইজন হলেন, মো. আলমগীর (৫২) ও সরোয়ার (৩২)। এদের মধ্যে আলমগীর ইতোপূর্বে গ্রেপ্তারকৃত রউফের আত্মীয়।
প্রসঙ্গত, গত ৬ আগস্ট ভোরে হাজারী গলির পিয়াসী মার্কেটের বনলতা কাটিং সেন্টার নামে একটি অলঙ্কার তৈরির কারখানার ব্যবস্থাপক কনক ধর ঢাকায় যাওয়ার সময় গলির মুখ থেকে পুলিশ পরিচয়ে চার ছিনতাইকারী ১৪টি সোনার বার যার ওজন ১৪০ ভরি জোরপূর্বক নিয়ে লালদীঘির পাড়ের দিকে দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় কোতোয়ালী থানায় অভিযোগের পর পুলিশ তদন্ত শুরু করে ছিনতাইয়ের পরিকল্পনাকারী হিসেবে জয়ন্ত ও প্রবীরের নাম জানতে পারে। এ দুজনের তথ্য মতে গ্রেপ্তার করা হয় তাদের সহযোগী রউফ ও তুষারকে। পরে হাজারী গলির এনডিসি আতিক অর্কিড ভবনে জয়ন্ত বণিকের বাসায় অভিযান চালিয়ে বুধবার তার স্ত্রীর কাছ থেকে ছয়টি সোনার বার ও ছয় লাখ ৩০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
ওসি কোতোয়ালী জাহিদুল কবির জানান, এক সময় হাজারী গলিতে সোনার দোকানে কাজ করতেন জয়ন্ত। এখন নিজেই ব্যবসায় জড়িত। যার কারণে কোন ব্যবসায়ী কোথায় সোনা আনা নেয়া করেন, সেগুলো তার জানা ছিল। বিভিন্ন সময়ে ছোট ভাই প্রবীর কিংবা অন্যদের মাধ্যমে আনা নেয়ার সময় সোনা ছিনতাই করাতেন তিনি। আবার যে ব্যবসায়ীর স্বর্ণ ছিনতাই হত, পরবর্তীতে জয়ন্ত তার সাথে বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করে মধ্যস্থতা করতেন এবং টাকার বিনিময়ে ছিনতাই হওয়া স্বর্ণ ফিরিয়ে দেওয়া হতো। ছিনতাই বা চুরির বিষয়টি ব্যবসায়ীরা পুলিশকে না জানিয়ে নিজেরাই মধ্যস্থতা করে ফিরিয়ে নেন। আবার অনেক সময় ছিনতাই বা চুরির বিষয়টি গোপন রাখেন, যার কারণে বিভিন্ন সময় জয়ন্ত এ ধরনের ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটালেও কেউ বুঝতে পারত না।