ভয়াবহ বন্যায় দোহাজারী–কক্সবাজার ১শ’ কিলোমিটার রেলপথের মধ্যে তিন কিলোমিটার রেলপথ ডুবে গেছে। এরমধ্যে পাহাড়ি ঢলের স্রোতে প্রায় এক থেকে দেড় কিলোমিটারের মতো রেলপথ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। কিছু কিছু স্থানে মাটি সরে গর্ত হয়ে গেছে। সরে গেছে রেলপথের পাথরও। বিশেষ করে সাতকানিয়ার অংশে বান্দরবান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে রেল লাইনের ক্ষতি হয়েছে বেশি। অনেক এলাকায় রেল লাইন থেকে সরে গেছে পাথর ও মাটি। রেল লাইনের অনেক স্থানে দুই মাথার সংযোগ স্থলে ক্লিপ ওয়েল্ডিং না করায় বন্যার পানিতে রেল লাইন বাঁকা হয়ে গেছে। মেরামত কাজ শেষ করতে সময় লাগবে ১ মাসের মতো।
বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত রেলপথ মেরামত করে যথাসময়ে উদ্বোধনে কোনো ধরনের সমস্যা হবে না বলে জানিয়েছেন দোহাজারী–কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মুহম্মদ আবুল কালাম চৌধুরী। তিনি বলেন, আমরা সরেজমিনে ৭ থেকে ৮ কিলোমিটার রেলপথে হেঁটে দেখেছি। সাতকানিয়ার তেমুহনী এবং মৌলভীর দোকান এলাকার প্রায় তিন কিলোমিটার রেলপথের ওপর দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হয়েছে। বান্দরবান থেকে পাহাড়ি ঢলের স্রোত এদিকে এসে রেললাইনের উপর দিয়ে বয়ে গেছে। এই অংশে কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। কিছু কিছু এলাকায় ১ থেকে ২ ফুট মাটি সরে গর্ত হয়েছে। কিছু কিছু এলাকায় পাথরও এলোমেলো হয়ে সরে গেছে। পাথর যেগুলো সরে গেছে সেগুলো তুলে আবার দেয়া যাবে। এতে বড় ধরনের কোনও ক্ষতি হয়নি। আমাদের হাতে যে সময় আছে, তাতে ক্ষতিগ্রস্ত অংশ আমরা শিগগিরই ঠিক করে ফেলতে পারব। এখানে শুধু অতিরিক্ত শ্রমিক লাগবে। প্রকল্পের অবশিষ্ট অংশের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত অংশেরও কাজ চলবে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার কাজ এক মাসের মধ্যে শেষ করা যাবে। ক্ষতিগ্রস্ত অংশের কাজ শেষ করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কক্সবাজারে ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করতে পারব।
তিনি বলেন, দোহাজারী–কক্সবাজার ১০০ কিলোমিটার রেললাইনের মধ্যে এই পর্যন্ত ৯০ কিলোমিটার রেল লাইন বসে গেছে। বন্যার পানি কমে গেলে অবশিষ্ট অংশের কাজ শুরু হবে। এই পর্যন্ত প্রকল্পটির বাস্তবায়ন ৮৭ শতাংশ।
দোহাজারী–কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মুহম্মদ আবুল কালাম চৌধুরী আরো বলেন, প্রকল্পের আওতায় এর মধ্যে কক্সবাজারে আইকনিক ভবন নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। অবশিষ্ট ৮টি স্টেশন ভবন নির্মাণ (দোহাজারী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, হারবাং, চকরিয়া, ডুলাহাজারা, ইসলামাবাদ, রামু) কাজও শেষ পর্যায়ে। এছাড়াও ৩৯টি মেজর ব্রিজ, ২৮৭টি মাইনর ব্রিজ–কালভার্ট, বিভিন্ন শ্রেণির ৯৬টি লেবেল ক্রসিং ও একটি আন্ডারপাস, হাতি চলাচলের জন্য ওভারপাস ও থারমাল ইমেজিং ক্যামেরা প্রযুক্তি চালু করা হয়েছে।