কয়েকদিনের টানা বর্ষণে বৃহত্তর চট্টগ্রামের বেশ কয়টি জেলার বিস্তীর্ণ জনপদ ডুবে যায়। বিশেষ করে বান্দরবান, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও রাঙ্গামাটি জেলার অধিকাংশ এলাকা বেশ কয়দিন ধরে ছিল পানিবন্দি। এসব এলাকার অনেক ঘর–বাড়ি বিধ্বস্ত। মাথা গোঁজার ঠাই হারিয়ে নিঃস্ব অনেক পরিবার। সড়ক ডুবে যাওয়ায় ভেঙ্গে পড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা। টানা ৪/৫দিন বিদ্যুৎহীন। এ পর্যন্ত ১৫ জনেরও বেশি মানুষের প্রাণহানির তথ্যও পাওয়া গেছে। বুধবার থেকে পানি নামলেও দুর্ভোগ–ভোগান্তি কমেনি। সবমিলিয়ে বৃহত্তর চট্টগ্রামের বিস্তীর্ণ জনপদ এখনো বিপর্যস্ত অবস্থায়। এর মাঝে আর ৫ দিন পরই (১৭ আগস্ট থেকে) দেশব্যাপী শুরু হচ্ছে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। বন্যা কবলিত বৃহত্তর চট্টগ্রামের বিস্তীর্ণ জনপদেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। বলতে গেলে বৃহত্তর চট্টগ্রামের বন্যা কবলিত সবকয়টি অঞ্চলই চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীনে। এ নিয়ে পরীক্ষার্থীরা এখন দুশ্চিন্তায়। অনেকের ঘর–বাড়ি বিধ্বস্ত। অনেকের বই–পত্রের হদিস নেই। এমন পরিস্থিতিতে দুমুঠো খেয়ে বেঁচে থাকার লড়াই করতে হচ্ছে অনেককে। অনেক জায়গায় রাস্তা–ঘাট এখনো চলাচলের উপযোগী হয়নি। সবমিলিয়ে কয়েকদিন পর শুরু হতে যাওয়া এই পরীক্ষা নিয়ে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের চোখ–মুখ জুড়ে উৎকন্ঠা। তবে শিক্ষাবোর্ড সংশ্লিষ্টরা বলছেন– পরিস্থিতি সম্পর্কে তারা অবগত। গণমাধ্যমে এসব চিত্র উঠে আসছে। কিন্তু পরীক্ষা শুরু হতে এখনো কয়েকদিন হাতে রয়েছে। এর মাঝে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যেতে পারে বলে তাদের আশাবাদ। জানতে চাইলে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মুস্তফা কামরুল আখতার আজাদীকে বলেন, বৃহত্তর চট্টগ্রামের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীনে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি ও কক্সবাজার জেলায় বন্যার প্রভাব পড়েছে বেশি। এই চার জেলাই চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীন।
পরীক্ষা শাখার মাধ্যমে বন্যা কবলিত এসব এলাকার প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সাথে আমরা যোগাযোগ করেছি। কিন্তু কোন কেন্দ্র পরীক্ষা গ্রহণের অনুপযোগী, এমন তথ্য এখনো আমরা পাইনি। তাছাড়া বৃহস্পতিবার (গতকাল) বোর্ডের অধীন সকল কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নিয়ে আমরা মতবিনিময় সভা করেছি। সভায় বন্যা কবলিত এলাকার কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারাও এসেছেন। বন্যার প্রভাবে আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠেয় (১৭ আগস্ট থেকে) পরীক্ষা গ্রহণ করা সম্ভব নয়, কারও বক্তব্যে এমন তথ্য আসেনি। প্রতিবন্ধকতা বা সীমাবদ্ধতার কথাও তেমন কেউ বলেননি।
এরপরও আমাদের হাতে আরো কয়েকদিন সময় রয়েছে। এর মাঝে কোন এলাকা থেকে যদি এরকম খবর আসে, আমরা তা মন্ত্রণালয়ে অবহিত করবো। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এর আগ পর্যন্ত যথা সময়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে, এ সিদ্ধান্তই থাকছে বলে জানান শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মুস্তফা কামরুল আখতার।