দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ভোট কেন্দ্রের তালিকা প্রণয়নের জন্য জেলা প্রশাসক ও সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সেই লক্ষ্যে মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করে দিয়েছেন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে নির্বাচন কর্মকর্তারা। চট্টগ্রামের সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার দপ্তর থেকে জানা গেছে, ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের ১৬ সংসদীয় আসনের খসড়া ভোট কেন্দ্রের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এবার ভোটার যেমন বেড়েছে ভোট কেন্দ্রের সংখ্যাও বাড়বে বলে জানিয়েছেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা।
এই ব্যাপারে চট্টগ্রামের সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন আজাদীকে বলেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে নির্দেশনা পাওয়ার পর আমাদের উপজেলা ও থানা নির্বাচন কর্মকর্তারা সরেজমিনে মাঠ পর্যায়ে গিয়ে ভোট কেন্দ্রের খসড়া তালিকা তৈরি করেছেন। এই তালিকা যাচাই–বাছাই হবে। দাবি–আপত্তি নিষ্পত্তির পর চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করা হবে।
তিনি বলেন, আমরা ১৬ আগস্ট খসড়া ভোটা কেন্দ্রের তালিকা প্রকাশ করবো। সেই তালিকার উপর দাবি–আপত্তি নেওয়ার শেষ সময় ৩১ আগস্ট। দাবি–আপত্তি নিষ্পত্তি শেষ হবে ১১ সেপ্টেম্বর এবং ১৭ সেপ্টেম্বর খসড়া ভোট কেন্দ্রের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। চূড়ান্ত তালিকা ইসি সচিবালয়ে ২৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পাঠানো হবে। আমরা ১৪ আগস্ট মিটিং ডেকেছি। উপজেলা ও থানা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিয়ে ওইদিনের মিটিং হবে। সেখানে মাঠ পর্যায়ে গিয়ে তৈরি করা ভোট কেন্দ্রের বিষয়ে আলোচনা হবে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তুলনায় এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্র্বাচনে চট্টগ্রামে ১৬ সংসদীয় আসনে ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়বে। প্রত্যেক নির্বাচনী এলাকায় ভোটার বেড়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিস থেকে জানা গেছে, চট্টগ্রামের ১৫টি উপজেলা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে মোট ১৬টি সংসদীয় আসনে গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৮৯৮টি। আর বুথের সংখ্যা ছিল ১০ হাজার ৬৮৩টি। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামে ১৫ উপজেলায় ৫৮টি ভোট কেন্দ্র ও ৮১৬টি ভোট কক্ষ বেড়েছিল। ভোটার সংখ্যা বৃদ্ধি, বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্নজনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ভোট কেন্দ্র বৃদ্ধি করা হয়েছিল বলে জানান জেলা নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তারা। এবারও ভোটার সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে কেন্দ্র সংখ্যাও বাড়বে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তারা।
ভোট কেন্দ্রের নীতিমালা : নীতিমালা অনুযায়ী– যাতায়াতের সুবিধা, ভবনের আয়ুষ্কাল, ভোটার বৃদ্ধি, সরকারি ভবনকে প্রাধান্য দেওয়া, প্রভাবাধীন বা উন্মুক্ত নয় এমন স্থানে ভোটকেন্দ্র না করা, রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিবর্গের নামে স্থাপিত প্রতিষ্ঠানে ভোটকেন্দ্র না করা, শারীরিকভাবে পিছিয়ে পড়াদের কথা বিবেচনায় নিয়ে ভোটগ্রহণ স্থাপন এসব বিষয় আমলে নিতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো ব্যত্যয় হলে যেকোনো ভোটার দাবি–আপত্তি জানাতে পারবেন। নির্বাচনী এলাকা ভিত্তিক খসড়া ভোট কেন্দ্রের তালিকা প্রকাশের পর–প্রকাশিত তালিকার উপর দাবি–আপত্তি করা যাবে। এসব আপত্তি শুনানির পর সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকা ভিত্তিক চূড়ান্ত ভোট কেন্দ্রের তালিকা প্রকাশ করা হবে। চূড়ান্ত ভোট কেন্দ্রের তালিকা প্রকাশের পর আর কারো দাবি–আপত্তি গ্রহণ করা হবে না। এই তালিকার উপর ভিত্তি করেই আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচন কমিশন(ইসি) থেকে জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল আগামী নভেম্বরে ঘোষণা করা হবে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ডিসেম্বরের শেষে অথবা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে। গত ৯ আগস্ট রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আনিছুর রহমান।