চট্টগ্রাম–কাপ্তাই সড়কে গাছ উপড়ে পড়ার ঘটনা বেড়ে চলেছে। গত চারদিনে সড়কটির বিভিন্ন অংশে অন্তত ৭টি গাছ উপড়ে পড়েছে। রোববার রাত ১২টা থেকে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত কাপ্তাই সড়কের রাঙ্গুনিয়া অংশে তিনটা বিশালাকৃতির শতবর্ষী গাছ উপড়ে পড়ে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিলো। সড়কটি দিয়ে এখন অনেকটা ঝুঁকি ও আতঙ্ক নিয়েই চলাচল করছে যানবাহন। অথচ তেমন কোনো তৎপরতা নেই সংশ্লিষ্টদের।
জানা যায়, গত রোববার রাত ১২টার দিকে কাপ্তাই সড়কের রাঙ্গুনিয়ার সেলিমা কাদের কলেজ গেট এলাকায় বিশালাকৃতির একটি শতবর্ষী গাছ উপড়ে পড়ে। এতে হতাহতের কোনো ঘটনা না ঘটলেও গভীর রাতে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে দীর্ঘ যানজটে আটকে পড়েছে মানুষ। রাঙ্গুনিয়া থানায় খবর দেয়া হলে তারা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীসহ ঘটনাস্থলে এসে প্রায় চার ঘণ্টার চেষ্টায় গাছটি অপসারণ করে নেন। এরপর ভোরের দিকে সড়কের শেখ রাসেল এভিয়ারি পার্ক এলাকায় এবং একইদিন বিকালে গুমাইবিলের বুদ্ধ মন্দির এলাকায় সড়কে গাছ উপড়ে পড়ার ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গাছগুলো অপসারণ করে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করে।
স্থানীয়রা জানান, প্রবলবৃষ্টিপাত শুরু হলে গত চারদিনে কাপ্তাই সড়কের ঈমাম গাজ্জালী কলেজ গেট, তাপবিদ্যুৎ, কাটাখালী, সেলিমা কাদের কলেজ গেট এলাকাসহ বিভিন্ন পয়েন্টে বিশালাকৃতির গাছগুলো গোড়া থেকে মাটি সরে গিয়ে উপড়ে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। এভাবে গেল কয়েকবছর ধরে সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কের পাশের ঝুঁকিপূর্ণ গাছগুলো সড়কে উপড়ে পড়ছে। এমনকি সড়কে হেলে পড়া গাছে ধাক্কা খেয়ে ঘটছে দুর্ঘটনা। মরা গাছের ঢালও ভেঙে পড়ে সড়কে। এভাবে নিয়মিত গাছ উপড়ে পড়ার ঘটনা অব্যাহত থাকলেও প্রতিরোধে এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেয়নি সওজ কতৃপক্ষ। বিষয়টি উদ্বেগজনক বলছেন সচেতন মহল।
সরেজমিনে দেখা যায়, কাপ্তাই সড়কের দুই পাশজুড়ে পুরোনো আকাশমণি, শিশু, মেহগণিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছগুলো সড়কের দিকে ঝুকে রয়েছে। অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই রাস্তায় চলছে মানুষ। সড়কের পাশের গাছগুলোর মধ্যে বেশ কিছু গাছ অজ্ঞাত রোগে মরেও গেছে। প্রবল বৃষ্টিপাত শুরু হলে এসব গাছই উপড়ে পড়ছে কাপ্তাই সড়কে। যেকোনো সময় প্রাণহানীসহ বড় দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের।
ফায়ার সার্ভিসের রাঙ্গুনিয়া স্টেশনের কর্মকর্তা জাহেদুল ইসলাম বলেন, শুধুমাত্র রোববার রাত থেকে সোমবার (গতকাল) সন্ধ্যা পর্যন্ত কাপ্তাই সড়কে পড়া তিনটা গাছ অপসারণ করেছি। এছাড়া উপজেলার স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া ও সরফভাটা এলাকায় একইদিন আরও দুইটা গাছ সড়কে ভেঙে পড়লে আমরা গিয়ে অপসারণ করেছি। গোড়া থেকে মাটি সরে যাওয়ার ফলেই এভাবে বার বার গাছগুলো পড়ছে বলে তিনি জানান।
এই ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগের ওয়ার্ক সুপারভাইজার রাসেল দেওয়ান বলেন, ইতোপূর্বে বেশকিছু মরা গাছ এবং ঝুঁকিপূর্ণ গাছ আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে কেটে অপসারণ করেছি। এরপরও বিশালাকৃতির গাছগুলোও প্রবল বর্ষণে ধসে পড়ছে। এটা প্রাকৃতিক কারণে হচ্ছে, সওজের দায়িত্বের কোনো অবহেলা ছিলো না। তারপরও বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন মহলে আমরা আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।