সিন্ডিকেট, দুর্নীতি এবং আমাদের মানবতা

রূপম চক্রবর্ত্তী | শনিবার , ৫ আগস্ট, ২০২৩ at ১০:৩৪ পূর্বাহ্ণ

ঘুষ, দুর্নীতি, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ নিয়ে নিয়ে যত চিৎকার করিনা কেন আমাদের চরিত্র ঠিক করতে না পারলে কোনো কিছুই পাওয়ার আশা করা যায় না। অতিরিক্ত লোভের বশবর্তী হয়ে দ্রুত টাকা উপার্জন করে বড় লোক হওয়ার স্বপ্নে বিভোর মানুষেরা প্রতিদিন অসংখ্য অপরাধ করে চলেছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে এই ব্যক্তিগুলো এতই পিচ্ছিল এদেরকে ধরা খুব কষ্টকর। যারা সিন্ডিকেট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেন তাদের কয়জনের বিচার হয়েছে সেটাও ভাবতে হবে। আসলে আমরা মানবতা বিসর্জন দিচ্ছি। সেই করোনা থেকে দেখে আসছি আমরা কিভাবে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীর হাতে জিম্মি হয়ে আছি। তারা অক্সিজেন নিয়ে নাটক করল। মানুষ মরে যাচ্ছে কিন্তু বেশ কিছু অক্সিজেন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সেদিন ঠিকমত অক্সিজেন দেয়নি বেশি মুনাফা পাওয়ার জন্য। ডেটল আর স্যাভলন হাওয়ায় উড়ে গেল। দ্বিগুণ দাম দিয়ে জীবাণুনাশক ওষুধ কিনতে হয়েছে। করোনা শেষ হতে না হতে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল। অনেক ব্যবসায়ী দ্রুত আঙুল ফুলে কলা গাছ হয়ে গেলেন। রাশিয়া ইউক্রেন থেকে আমদানি করা জিনিসপত্রের দাম যেমন বেড়েছে ঠিক তেমনভাবে অন্য রাষ্ট্র থেকে আমদানি করা জিনিসপত্রের দামও বেড়েছে। আটা ময়দার বাজার আমরা দেখেছি। তেলের বাজারের বিশ্রী অবস্থাও দেখেছি।

কিছুদিন আগে কাঁচা মরিচের বাজারের কথা নিয়ে বেশ লেখালিখি হয়েছে। যারা মরিচের দাম বাড়িয়ে এত টাকা হাতিয়ে নিয়েছে তাদের বিবেকবোধ কোথায় গেল সেটা যদি তাদের চেতনায় থাকত তাহলে এই রকম বাজে অবস্থায় সাধারণ মানুষকে পড়তে হতো না। খাদ্য সামগ্রীর পাশাপাশি দেশের আরও অনেক পণ্য আছে যেগুলো এই দুষ্ট চক্রের হাতে বন্দী।

বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা এখন ঘুষ, দুর্নীতি এবং সিন্ডিকেট কারসাজি সম্পর্কে খুব বেশি বেশি জানে। ফেসবুক খুললে, সংবাদপত্র পাঠের মাধ্যমে, টিভিতে বিভিন্ন প্রতিবেদন দেখে দেশের গতিবিধি সম্পর্কে জানতে পারেন। যারা ঘুষ খান, যারা দুর্নীতি করেন, যারা সিন্ডিকেট ব্যবসা পরিচালনা করে রাতারাতি কোটিপতি হয়ে বিদেশে টাকা পাচার করছেন তাদের বেশিরভাগ কিন্তু লেখাপড়া জানা ব্যক্তি। একজন মানুষ লেখাপড়া জানেন অথচ তার মধ্যে দেশপ্রেম নেই, বিবেক নেই তাহলে কীভাবে তাকে একজন সুস্থ মস্তিষ্কের লোক বলা যায় ভেবে দেখুন। সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অসাধু সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করলেও এই চক্রের লোকদের চেতনা এখনো জাগ্রত হয়নি। সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে আমাদের চেতনার পরিবর্তন হোক। হালাল এবং বিশুদ্ধতার সাথে দেশের সকল ব্যবসা পরিচালিত হোক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমনকে পরিশুদ্ধ করতে হবে
পরবর্তী নিবন্ধবাংলার খোকা