কখনও শ্রমিক, কখনও রাজমিস্ত্রীর সহযোগী, আবার কখনও সিএনজি টেক্সিচালক। অভাবের সংসারে বেড়ে ওঠা রাকিব নিজের পড়াশোনার খরচ চালাতে করেছে নানা পেশার কাজ। সম্প্রতি কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে বাঁশখালী বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ–৫ পেয়েছে আবদুর রহিম রাকিব।
জানা যায়, উপজেলার গন্ডামারা ইউনিয়নের মইজ্জানি বাপের বাড়ির এলাকায় মোহাম্মদ হাসানের (৬৫) ৪র্থ সন্তান রাকিব। কিন্তু সন্তানের পড়ালেখায় আগ্রহ নেই বললেই চলে হাসানের। ৫ ভাইয়ের মধ্যে ৪র্থ রাকিব। কখনো সাগরে মাছ ধরে, কখনো ক্ষেত খামারের শ্রমিকের কাজ করেন। টেক্সি চালিয়ে পড়াশোনার খরচ চালিয়েছে সে। পরীক্ষায় পাশ করার পর রাকিব এখন একজন প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্ন দেখে। কিন্ত পরিবার থেকে কোনো সহযোগিতা পাবে না বলে ধারণা তার। রাকিব বলে, কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের সহযোগিতা ছাড়া এসএসসির বাধা পেরিয়ে আসলেও আমার সামনের উচ্চ শিক্ষার পথ কীভাবে পাড়ি দিব বুঝতে পারছি না। আর্থিক সহযোগিতার পাশাপাশি এলাকার যে সকল ভাই ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছেন তাদের পরামর্শ–উপদেশ আমাকে পথ দেখাবে। আমার স্বপ্নপূরণ হবে। রাকিবের বাবা হাসান বলেন, রাকিবকে আমি পড়ালেখার খরচ দিতে পারিনি। ৬৫ বছর বয়স আমার, ঘর সংসার চালাব নাকি পড়ালেখার খরচ দিব। তবে সে নিজের ইচ্ছায় যা করেছে তার জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া।
বাঁশখালী বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক বলেন, ছেলেটা অনেক কষ্ট করে পড়ালেখা করেছে। মাঝে মধ্যে স্কুলে আসতে না পারলে এককভাবে সেই ক্লাসের পড়া আলাদা করে তাকে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য নির্দেশনা ছিল শিক্ষকদের প্রতি। সে যেন আরো এগিয়ে যেতে পারে তার জন্য আমাদের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা থাকবে।